October 22, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, October 22nd, 2025, 6:58 pm

হিমাগারে আলু এখন ‘গলার কাঁটা’ কৃষক-ব্যবসায়ীদের

 

এ বছর জয়পুরহাটের ২১টি হিমাগারে দুই লাখ ছয় হাজার মেট্রিক টন আলু মজুত করা হয়েছিল। কিন্তু লাভের আশায় সংরক্ষণ করা সেই আলুই এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের জন্য।

গত বছর এই সময় প্রতি বস্তা আলুর দাম ছিল ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। অথচ এবার সেই আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। ফলে চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীরা।

কালাই উপজেলার আওরা গ্রামের কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর আট বিঘা জমিতে আলু লাগিয়ে ৩০০ বস্তা হিমাগারে রেখেছিলাম। এখন সেই আলু বিক্রি করতে গিয়ে কেউ কিনছে না। অনেক কষ্টে ২০ বস্তা বিক্রি করে হিমাগার ভাড়া বাদে হাতে পেয়েছি মাত্র ১,৫০০ টাকা।’

কৃষকদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও বিপাকে। ব্যাংক বা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে, এমনকি গরু-ছাগল বিক্রি করে আলু মজুত করেছিলেন অনেকে। এখন লোকসানে পড়ে অনেকে পথে বসার মতো অবস্থায়।

মৌসুমি আলু ব্যবসায়ী আতোয়ার হোসেন জানান, ‘৮০০ বস্তা আলু হিমাগারে রেখেছিলাম। বস্তাপ্রতি খরচ হয়েছে ১,৪৫০ থেকে ১,৫০০ টাকা। এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। ফলে প্রতি বস্তায় লোকসান প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার আলুর চাষ ও ফলন দুটোই বেশি হয়েছে, তাই দাম কমেছে। আগামী মৌসুমে চাষের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কমানো হয়েছে।’

অন্যদিকে জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বেঁধে দেওয়া ২২ টাকা কেজি দরে সরকারের আলু কেনার বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা পাইনি।’

এরই মধ্যে এক সপ্তাহ পরই নতুন আলু লাগানো শুরু হবে। অথচ জয়পুরহাটের হিমাগারগুলোতে এখনো এক লাখ মেট্রিক টনের বেশি আলু মজুত পড়ে আছে। এ অবস্থায় দ্রুত সরকারি হস্তক্ষেপ ও আলু বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

এনএনবাংলা/