এস এম শফিকুল ইসলাম, জয়পুরহাটঃ শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে জয়পুরহাটে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ১৩ তরুণ-তরুণী চাকরি পেয়েছেন। কোনো প্রকার ঘুষ, তদবির বা প্রভাব ছাড়াই, মাত্র ১২০ টাকার অনলাইন আবেদন ফি দিয়ে সম্পন্ন হয় এই নিয়োগ প্রক্রিয়া। কোনো প্রকার হয়রানি, সুপারিশ এবং ঘুষ ছাড়া পুলিশের গর্বিত সদস্য হতে পেরে খুশিতে আত্মহারা হত দারিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারে এসব তরুণ-তরুণী।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাতে জয়পুরহাট পুলিশ লাইন্সের ড্রিল সেডে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব। তিনি নিয়োগপ্রাপ্তদের নিজ হাতে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এই নিখুঁত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার জন্য জেলার সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক প্রশংসা পাচ্ছেন পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব। স্থানীয়রা মনে করছেন, তাঁর দৃঢ় ও নৈতিক নেতৃত্ব ভবিষ্যতের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। নিয়োগপ্রাপ্তরা জানান, তাদের কারোরই ঘুষ কিংবা তদবিরের প্রয়োজন হয়নি। শুধুমাত্র নিজস্ব মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই তারা পুলিশে নিয়োগ পেয়েছেন, যা তাদের আত্মবিশ্বাস ও গর্বের জায়গা তৈরি করেছে।
নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হওয়া পাঁচবিবি উপজেলার উচাই গ্রামের কৃষক ওরাও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মেয়ে স্মৃতিস্পটটা বলেন, ছোট বেলা থেকেই ইচ্ছে পোষণ করতাম আমি পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করব, দেশের জন্য কিছু করব। মা বাবার পাশে দাঁড়াবো নিজে কিছু করব। ঈশ্বর আমার সহায় হয়েছে, ঈশ্বরকে অশেষ ধন্যবাদ। আমার ইচ্ছে পুরুন হয়েছে। ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে দেশের জন্য কাজ করে যাবো।
ক্ষেতলাল উপজেলার রুয়াইর গ্রামের সিএনজি চালক শহিদুল ইসলামের মেয়ে শাহানাজ পারভীন সানু বলেন, আমি জানতাম ঘুষ না দিয়েও চাকরি পাওয়া যায়। সেই বিশ্বাস থেকেই আবেদন করেছিলাম। আজ আমি সত্যিই খুশি। তার বাবা বলেন, বিনা পয়সায় চাকরি হয়—এটা আজ চোখে দেখলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আমার মেয়ে পুলিশে চাকরি পেয়েছে। পাঁচবিবি উপজেলার রুনিহালী গ্রামের মুচি পরিবারের সন্তান বিধান রবিদাসের নাম ঘোষণা হওয়ার পর তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
চাকরি পাওয়া জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের বড় তাজপুর গ্রামের নাজিম উদ্দীন বলেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন আজ। বিনা পয়সায় আমার চাকরি হয়েছে। টাকা ছাড়া চাকরি হয় যে সেটি আজ আমি নিজেই দেখলাম।
পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব বলেন, আমরা ১৩ জন তরুণ-তরুণীকে নিছক যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছি। এখানে কেউ কোনো ধরণের সুপারিশ বা ঘুষের আশ্রয় নেয়নি। আমরা চাই, তারা যেন সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে।
আরও পড়ুন
মোংলা বন্দরে জাহাজ থেকে চুরি করা মালামালসহ তিনজন আটক
এই অ্যাওয়ার্ড শুধু স্বীকৃতি নয়, সকলের জন্য অনুপ্রেরণা : উপাচার্য
কালীগঞ্জে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে ড্রাগন ফল