টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ দুই দশকেও শেষ হয়নি। যেখানে মাত্র ১৮ মাসে কাজ শেষ করার কথা ছিল, সেখানে ২০ বছরেও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটির আধুনিকীকরণ সম্পন্ন হয়নি। এর ফলে স্থানীয় জনগণ বছরের পর বছর ধরে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।
২০০৫ সালে বাসাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন সরকার। সে অনুযায়ী, একই বছরের ১০ জানুয়ারি দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং ২৪ সেপ্টেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সোনার বাংলা প্রকৌশল সংস্থাকে। চুক্তি অনুযায়ী, ২০০৭ সালের ২৩ এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু আজ অবধি কাজের ৭৬ শতাংশও সম্পূর্ণ হয়নি।
প্রকল্প অনুযায়ী, প্রায় ৫ কোটি টাকায় দুটি চারতলা, একটি দোতলা ও একটি একতলা ভবন নির্মাণ এবং পুরনো ভবনের সংস্কার কাজ হওয়ার কথা ছিল। ২০০৬ সালের মধ্যেই প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা উত্তোলন করে কাজ ধীরগতিতে ফেলে রাখে ঠিকাদার।
বর্তমানে পরিত্যক্ত ভবনগুলো মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে স্থানীয় যুবকদের অস্বাভাবিক চলাচল এখন উদ্বেগের কারণ। বরাদ্দ পাওয়া উন্নত যন্ত্রপাতিও অব্যবহৃত অবস্থায় স্টোর রুমে নষ্ট হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পরিত্যক্ত ভবনে মাদকসেবীদের চলাফেরা নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের নিয়মিত টহলের প্রয়োজন।
সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা সুলতানা রুবি বলেন, “উপজেলাবাসীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে কাজটি দ্রুত শেষ করা জরুরি। বারবার উদ্যোগ নিয়েও বাস্তব অগ্রগতি হয়নি।”
উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন আল জাহাঙ্গীর অভিযোগ করেন, “ঠিকাদার ইচ্ছাকৃতভাবে কাজ আটকে রেখেছে। আমরা এ বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নিয়েছি।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শার্লী হামিদ জানান, “স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে এসে নতুন বাজেটও বরাদ্দ দেন, কিন্তু তা ফেরত যায়। চিকিৎসক থাকলেও বসার ব্যবস্থা নেই, যন্ত্রপাতি বসানোর ভালো রুম নেই। ফলে সেবাদান ব্যাহত হচ্ছে।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোনার বাংলা প্রকৌশল সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, “এক কোটি ৫৬ লাখ টাকা বিল এবং ৬০ লাখ টাকা বকেয়া না পাওয়ায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।”
এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান বলেন, “বর্তমানে কোনো বরাদ্দ নেই। আগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মামলা করেছে। বরাদ্দ পেলে নতুন ঠিকাদার দিয়ে দ্রুত কাজ শেষ করা হবে।”
আরও পড়ুন
দুটি হত্যা মামলার আসামী যুবলীগ নেতা শাহিদ মাহমুদ গ্রেপ্তার
কুলাউড়ায় আলোচিত স্কুলছাত্রী আনজুম হত্যা- খুনি জুনেলের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জু
রংপুরে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত