December 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, December 5th, 2024, 8:10 pm

২৩ বছর লাল ফিতায় বন্দি রংপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আব্দুর রহমান মিন্টু:
রংপুর ব্যুরো: ২০০১ সালে ‘রংপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ আইন পাসের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে দীর্ঘ প্রায় ২৩ বছর আগে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম।
রংপুরের মানুষজন মনে করে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে এই অঞ্চলকে। সম্প্রতি ঢাকায় শহীদ আবু সাঈদের বাবাকে ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস রংপুরবাসীকে তাদের এলাকার উপদেষ্টা ভাববেন’ এমন মন্তব্যের পর ফের আলোচনায় এসেছে রংপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে।

এর আগে ২০০৮ সালে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় (আওয়ামী লীগ সরকার নাম বদলে দেয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠান করেছিলেন তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

জানা যায়, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে রংপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জোরালো দাবি ছিল। তখনও বঞ্চিত হয় এখানকার মানুষ। এরপর ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও অনেক আন্দোলন হয়েছিল রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য।

এই আন্দোলনে কেউ কেউ মামলা-হামলার শিকার হয়ে জেলও খেটেছেন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছরে উন্নয়ন বৈষম্যের তলানিতে পড়ে আছে রংপুর। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও একই বৈষম্য।
রংপুর বিভাগীয় সদরে একটি। আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পাস হয়েছে প্রায় ২৩ বছর আগে। আজ পর্যন্ত সেই বিশ্ববিদ্যালয় আলোর মুখ দেখেনি।

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপিত হয়েছিল। তারও আগে ২০০১ সালের ৩৪ নম্বর আইনে ‘রংপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করার কথা বলা হয়েছে। আইনে জারিকৃত বিশ্ববিদ্যালয়টির কারমাইকেল কলেজের প্র্বূপাশে ভিত্তিপ্রস্তরও দেওয়া হয়েছিল।শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, সরকার আন্তরিক হলেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইলের লাল ফিতা খুলেই প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব। এর পরেই জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু করে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে।একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পাস হওয়া পর্যন্ত কাজ থাকে সবচেয়ে বেশি। কার্যত এর পরের কাজগুলো খুবই সহজ। স্থান নির্বাচন করা নিয়েও কালক্ষেপণের প্রয়োজন নেই। অস্থায়ীভাবে কোনো ভবনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হতে পারে। এ জন্য সদিচ্ছা থাকা জরুরি। অর্থ বরাদ্দ দিয়ে একজন উপাচার্য নিয়োগ করলেই এর কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব। উপাচার্যই আইন ও প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারবেন।

বৈষম্যের তলানিতে পড়ে থাকা রংপুরের উন্নয়নের কথা তো নীতিনির্ধারকেরা ভাবার প্রয়োজন মনে করেন না। সারা দেশে যত মেগাপ্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, তার একটিও রংপুর বিভাগে নেই। অথচ উন্নয়নের সব সূচকে পিছিয়ে থাকা রংপুরের জন্য মেগাপ্রকল্প জরুরি ছিল।

রংপুরের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে রংপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা বৃহৎ স্বার্থেই প্রয়োজন।