২১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এই উপজেলায় যোগাযোগের তেমন পরির্বতন হয়নি। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে গেলেও নবীনগর উপজেলার উরখুলিয়া গ্রামটি হাওরবেস্টিত এলাকা হওয়ায় এখনো উন্নয়নবঞ্চিত রয়ে গেছে। আর এই গ্রামটির উন্নয়নে বদলে যেতে পারে অবহেলিত পূর্বাঞ্চলের ৬ ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের ভাগ্য।
তবে ইতোমধ্যে স্থানীয় সাংসদ মো. এবাদুল করিম বুলবুলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে এশিয়ান হাইওয়ে নবীনগর-শিবপুর-রাধিকা সড়কের কাজ। চলমান রয়েছে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা ব্যায়ে নবীনগর টু আশুগঞ্জ রাস্তার কাজ। রাস্তা দুটির নির্মাণ সম্পন্ন হলে নবীনগরে যোগাযোগ ক্ষেত্রে বিল্পব ঘটবে।
এদিকে মাত্র চার কিলোমিটার রাস্তা আর ১৫০ মিটার করে দুটি সেতু নির্মাণ করা হলে নবীনগর টু আশুগঞ্জ রাস্তার সাথে যুক্ত হলে অবহেলিত পূর্বাঞ্চলের ৬টি ইউয়নিয়নের তিন লাখ মানুষের জীবন-যাপন পাল্টে যাবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ২০২০ -২১ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে টিআর-কাবিটার প্রকল্পের মাধ্যমে নতুনভাবে হাওরের মাঝ দিয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা বিদ্যাকুট থেকে উরখুলিয়া পর্যন্ত নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও উরখুলিয়া গ্রামের দুপাশে একই অর্থে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করা হয়ে়ছে।
৬টি ইউনিয়নসহ স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি, বিদ্যাকুট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উড়খুলিয়া লঞ্চঘাট পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং একটি ১৫০ মিটার সেতু এবং উড়খুলিয়ার পশ্চিমে ঈদগাঁহের কাছে দ্বিতীয় আরেকটি ১৫০ মিটার সেতু নির্মাণ করে মাত্র দুই কিলোমিটার নতুন রাস্তা নির্মাণ হলে বদলে যাবে এই এলাকার দৃশ্যপট। তাছাড়া উড়খুলিয়া চান্দের চর থেকে ১৫০ মিটার সেতু থেকে উত্তর-দক্ষিণে মাত্র ৫০০ মিটার রাস্তা সংযোগ করে দিলে বিকল্প রাস্তা হিসেবে মেরকুটা টু বগডহড়ের জিসি সড়ক নির্মাণের ফলে যোগাযোগের এক নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
উরখুলিয়া গ্রামের সমাজসেবক এম এ আউয়াল জানান, পানিবেস্টিত হাওর অঞ্চল বিদ্যাকুট ইউনিয়নের উরখুলিয়া গ্রামটিতে মাত্র চার কিলোমিটার রাস্তা ও কয়েকটি কালভার্ট, দুটি সেতু নির্মাণ হলে শুধু যোগাযোগই নয় বদলে যাবে এলাকার অর্থনীতির চিত্র। দুপাশের হাওরের বুক চিরে রাস্তা হলে এলাকাটি রূপ নেবে পর্যটনকেন্দ্রে। রাস্তার দুপাশে গড়ে তোলা সম্ভব স্কুল, কলেজ, শপিংমল, শিশু পার্ক, খেলার মাঠ।
তিনি বলেন, রাস্তাটি বাস্তবায়ন হলে পূর্বাঞ্চলের অবহেলিত ৬টি ইউনিয়নের লোকজন রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগে রাস্তা কমবে এবং সময় বাচঁবে প্রায় ২ ঘণ্টা।
নবীনগরের স্থানীয় সাংসদ মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল বলেন, ‘এই এলাকাটি ছিল দাঙ্গা-হাঙ্গামা আর সংঘর্ষে একটি গ্রাম। যে কারণে স্বাধীনতার পর এ গ্রামটিতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকাবাসীর সাথে আলোচনার মাধ্যমে দাঙ্গা-হাঙ্গামা থেকে ফিরিয়ে় এনেছি। তাদেরকে কথা দিয়ে়ছিলাম আপনারা দাঙ্গা-হাঙ্গামা থেকে ফিরে আসুন, আপনাদের এলাকার উন্নয়নের দায়িত্ব আমি নেব। তারই ধারাবাহিকতায় এই অবহেলিত গ্রামের যোগাযোগ ও শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি অবহেলিত ৬টি ইউনিয়নের প্রাণের দাবি এই চার কিলোমিটার রাস্তা করার জন্য চেষ্টা করব।’
এদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) নবীনগর উপজেলার উড়খুলিয়া এসে হাওরবেস্টিত এলাকা পরিদর্শন করে ৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণসহ এলাকার উন্নয়নের আশ্বাস দেন।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
কাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাজ শুরু: উপদেষ্টা
টেস্ট ক্রিকেট: মরণদশা থেকে বাঁচানোর উপায় কী
সাংবাদিকদের সাথে রংপুর পুলিশ সুপারের মতবিনিময়