অনলাইন ডেস্ক :
সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে টিকটক হৃদয়সহ চারজন মিলে যৌন নির্যাতন করে। সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় তারা। এ ঘটনার পর বেরিয়ে আসে টিকটক ভিডিও তৈরির ফাঁদে ফেলে তরুণীদের বিদেশে পাচার করার বিষয়টি। এরপরই পুলিশ ঘটনার অনুসন্ধানে মাঠে নামে। পাঁচ শতাধিক টিকটকারকে চিহ্নিত করে মাঠে নেমেছে পুলিশ।
এর মধ্যেই কেঁচো খুড়তে গিয়ে বেরিয়ে আসছে অজগর! নারী পাচারকারী চক্রের সন্ধানে নেমে বেরিয়ে আসে পুল পার্টি নামে রাজধানীর আশপাশের রিসোর্টগুলোর অবৈধ কার্যক্রম।
অনুসন্ধানে ভয়াবহ তথ্য পাচ্ছে পুলিশ। পুল পার্টির নামে রিসোর্টগুলোতে চলছে অশ্লীলতা। ডিজে কিংবা পুল পার্টি নামে এখানে চলে উঠতি বয়সী তরুণ তরুণীদের অবাধ মেলামেশা। উচ্চ শব্দে মিউজিকের তালে নাচানাচি!
চাকরি বা বড় তারকা হওয়ার প্রলোভনেও অনেকে যায় সেখানে। এখানে কেউ কারও পরিচিত না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্রি হয় পুল পার্টির টিকিট। উঠতি বয়সী তরুণদের আকৃষ্ট করতে ব্যবহার করা হয় তরুণীদের। আনন্দের আড়ালে চলে নগ্নতা! টাকার অঙ্কের সঙ্গে থাকে আয়োজনের ভিন্নতা। চাহিদা মতো রুম সরবরাহসহ সব ধরণের ভোগ বিলাসিতা থাকে পুল পার্টিতে। সুইমিং পুলে উশৃঙ্খল নাচানাচির মধ্যেই নারীর সান্নিধ্যে আসে তরুণরা। অবৈধ সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকে থেকে আসা বখাটেরা।
সম্প্রতি আলোচনায় আসে টিকটক হৃদয়। এভাবেই অপরাধ জগতে পা বাড়ায় সে। পুল পার্টির আড়ালে নারী পাচারের সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতায় পরিণত হন। হৃদয়ের পুল পার্টি কিংবা হ্যাংআউটে অংশ নেওয়া তাদের অনেকের কাছেই ছিল স্বপ্নের মতো। হ্যাংআউট ও পুলপার্টিই ছিল টিকটক হৃদয়ের নারীদের ফাঁদে ফেলার মূল অস্ত্র। পার্টিতে অংশ নেওয়া তরুণীদের মধ্যে থেকেই টার্গেট করা হত। বেশি বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে পাচার করতো ভারতে।
বন্ধত্বের কৌশলে তরুণীদের পাচার করে দিত হৃদয় বাবু। পালিয়ে আসা এক ভুক্তভোগী জানালেন তার অভিজ্ঞতার কথা। তিনি জানান, পুল পার্টিতে মাদক সেবন হয় অতি মাত্রায়। ওখানে টিকটক ছাড়াও আরও অনেক কিছু হয়।
তিনি বলেন, প্রথমে জানানো হয়, বানানো হবে টিকটক সুপারস্টার। এরপর লোভ দেখানো হয় ভালো চাকরির। এভাবে লোভের খপ্পরে পড়ে পাচার হয়ে যায় কিশোরীরা।
নারী পাচারকারী চক্রের হোতা হৃদয় ও তার কয়েক সহযোগীকে ধরার পর নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। টিকটকের আড়ালে নারী পাচারের পুরো নেটওয়ার্কটির সন্ধানে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হৃদয় বাবুর সঙ্গে সংযুক্ত প্রায় ৫০০ টিকটক গ্রুপ, আইডি, হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ, ও ফেসবুক আইডি শনাক্ত করেছে পুলিশ। সবই রয়েছে নজরদারিতে।
ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার শহিদুল্লাহ বলেন, বিদেশে পাচার করার পর যেসব মেয়েরা ওখানে গেছেন, তাদেরকে প্রথমেই নেশা জাতীয় দ্রব্য খায়িয়ে তাদেরকে বিবস্ত্র করে বিভিন্নভাবে চিত্র ধারণ করে তাদেরকে জিম্মি করে তাদেরকে খারাপ কাজে বাধ্য করা হত। তাদেরকে বিভিন্ন হোটেলে নির্দিষ্ট সময় করে পাঠিয়ে খারাপ কাজ করতে বাধ্য করত।
তিনি আরও বলেন, এরকম গ্রুপ খুলে হৃদয় বাবু উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছেলে-মেয়েকে সংযুক্ত করেছে। এই গ্রুপ এবং সংশ্লিষ্ট আরও অনেকজনকে আমারা শনাক্ত করেছি।
আরও পড়ুন
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে তদন্ত কমিটি
আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় কনস্টেবল মুকুল কারাগারে
অগ্নিকান্ডে মিঠাপুকুরের নয়ন একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যুতে দিশেহারা পরিবার