শ্রীমঙ্গল থানায় চা বাগানের সংখ্যা ৪৭ টি। এত বেশি চা বাগান দেশের আর কোথাও নেই। ব্রিটিশ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে চা শ্রমিকদের গৌরবজ্জ্বল ভূমিকা ছিল। দেশের নিঃস্বার্থ কর্মী হিসেবে ১৯৭১ সালে দেড় শতাধিক চা বাগানে আমাদের মুক্তির সংগ্রামে তাদের ছিল দেশপ্রেমিক সহযোগিতা। চা বাগান এলাকা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। চা বাগান থেকে তারা খেয়ে আত্মগোপন করে পাকহানাদার বাহিনীকে গেরিলা যুদ্ধে পরাভূত করা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এক অপূর্ব সুযোগ। কারণ এমনিতেই চা বাগান গুলো ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকার পাহাড় অঞ্চলে অবস্থিত। আর এদেশের ছেলেরা- যুবকরা- দামাল মুক্তিযুদ্ধারা পাক বাহিনীর হাত থেকে মান বাঁচাতে অস্ত্র, খাদ্য ও সহযোগিতা পেতে সীমান্তে পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়।
১৯৭১ সালের পয়লা মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান বেতার ভাষনে জাতীয় সংসদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও দেশের জরুরি অবস্থা জারি করেন। এর প্রতিবাদে শ্রীমঙ্গলের চা শ্রমিকরা ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলে স্লোগান ছিল ‘জয় বাংলা- জয় সমাজতন্ত্র, বীর বাঙালি অস্ত্র ধর-পূর্ব বাংলা স্বাধীন কর’ সামরিক জান্তা নিপাত যাক ইত্যাদি। তখন শ্রীমঙ্গল শহরে ন্যাপ ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সারা থানায় জঙ্গি আন্দোলন হচ্ছিল। এসব আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন ন্যাপ নেতা রাসেন্দ্র দত্ত, মোঃ শাহজাহান মিয়া, ক্ষীরদ দেব চৌধুরী, অধ্যাপক সাইয়িদ মজিবুর রহমান, সৈয়দ মূয়ীজুর রহমান প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ নেতা ডাঃ মোঃ আব্দুল আলী, মোঃ ইলিয়াস এমসিএ, মোহাম্মদ আলতাফুর রহমান এমসিএ, কমলেশ ভট্টাচার্য, বিমল জ্যোতি চৌধুরী ননীসহ নাম জানা-অজানা অনেক নেতার নেতৃত্বে আন্দোলন পরিচালিত হতো।
ন্যাপ ও আওয়ামী লীগের আন্দোলনের সঙ্গে চা শ্রমিক নেতা হীরালাল হাজরা, রাধাকান্ত তাঁতি, গোপাল গোয়ালা, মনু ব্যানার্জী, বাসন্তী দেবী, নারায়ন মাস্টার, দামিনী গোয়ালা, পবন তাঁতি, বিমল ব্যানার্জি প্রমুখ নেতা শরিক হন। তখন মিছিল চলতে থাকে। ঠিক সেই মুহূর্তে ৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ চা শ্রমিকদের আরও উজ্জীবিত করে।
২৫ শে মার্চ কালো রাতে পাক হানাদার বাহিনী অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র নিয়ে নিরস্ত্র বাঙালি জাতির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গণহত্যা শুরু করে। ২৭ শে মার্চ বালিশিরা ভেলী চা বাগান এলাকায় গণপরিষদ সদস্য মোঃ ইলিয়াস, মোঃ আলতাফুর রহমান চৌধুরী আত্মপ্রচার করে স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনার জন্য গোপন সভা করেন। ঢাকা সিলেট হাইওয়ের ওপর চা বাগান এলাকায় চা শ্রমিকরা বড় বড় গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। মুক্তিবাহিনী খাদ্য ও জ্বালানি হিসেবে পেট্রোল বর্মাছড়া চা বাগান এলাকার ট্রেনিং ক্যাম্পে নিয়ে জমা করে।
৩০শে এপ্রিল রাতে পাক বাহিনী জেট বিমান দ্বারা বৃষ্টির মত গোলাবর্শন ও মেশিন গানের গুলি বর্ষন করে শ্রীমঙ্গলে প্রবেশ করে। এরপর থেকে চা বাগান ও গ্রামাঞ্চলে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নারী ধর্ষণ ও নাটকীয় হত্যাকাণ্ড চালাতে থাকে। প্রাণভয়ে হাজারে হাজারে আবাল- বৃদ্ধ- বণিতা সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে আশ্রয় নেয়।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন থেকে সুজা পূর্ব দিকে লাইন ধরে পায়ে হেঁটে ২০/২৫ জন পাক সেনা অগ্রসর হয়। কালু নামে এক স্থানীয় দালাল পথপ্রদর্শক হিসেবে এসেছিল। বাগানের পশ্চিম প্রান্তে ভাড়াউড়া- শ্রীমঙ্গল সড়কের পাশে কালী মন্দিরের সামনে যাদের পেল জড়ো করল পাকসেনা। প্রায় ১ ফালং দূরবর্তী শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের পার্শ্ববর্তী বীজের কাছে নিয়ে যায়। পকেটে যা পেয়েছে পাক সেনারা ছিনিয়ে নেয়। গভীর খাদের পাশে দাঁড় করিয়ে গুলি ছুঁড়ে। অনেক শ্রমিক মরার ভান করে খাদে পড়ে যায় এবং তার উপর গুলিবিদ্ধ লাশ পড়তে থাকে। লাশের তলে তারা পড়ে যারা প্রাণে বাঁচেন তাদের মধ্যে ছিলেন রামদড়ি হাজরা। গুলি খেয়েও পড়ে বেঁচে যান জমায়ের হাজরা, গোপাল চান্দ হাজরা, চিনিয়া হাজরা, কেদার হাজরা। গুলিবিদ্ধ হয়ে ৪৫ জন শ্রমিক মারা যান। এরা হচ্ছেন- হোসনী হাজরা, চিনি লাল হাজরা, গুঁড়া হাজরা,টিমা হাজরা, শনিচারা হাজরা, হুলা গোয়ালা, হিংরাজ হাজরা , কৃষ্ণচরণ হাজরা, মহারাজ হাজরা, নুনুলাল হাজরা, মাংগুরা হাজরা , ডুমার চাঁন তুরিয়া, স ম মাঝি, নকুলা হাজরা, কালাচাঁদ ঘাটুয়ার, সুখনন্দন বিকিয়াছরন, ইন্দ্র ভূঁইয়া, ফাগু হাজরা, রামলাল হাজরা, জগগু হাজরা, বিশ্বম্বর হাজরা,হিরুয়া হাজরা, শিবমুড়া হাজরা, চৈইত ভূঁইয়া , আগুন ভূঁইয়া, বুকই বেলিং, রাম কুমার মাল, রামলাল মাল, যোরুয়া গৌড়, রামকৃষ্ণ গৌড়, রামচরণ গৌড়, গোবিনা গৌড়, ভজুয়া হাজরা, গঙ্গা বারই, জগদেউ কাহার, গঙ্গা কর্মী, চুনি হাজরা, অমৃতা হাজরা, ক্ষুদিরাম হাজরা, বীরবলী হাজরা, ব্রিজ নারায়ণ গোয়ালা, রামদ্বৈত হাজরা, মংরা তুরিয়া, হরকু হাজরা, রাম হরুক হাজরা । তাদের যে স্থানে হত্যা করা হয় ঠিক সেই জায়গায় ‘৮০ দশকে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হলেও সংস্কার না করার কারণে শহীদ বেদীটি ভেঙ্গে গেছে। কিন্তু সরকার বা স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর কারো কোন প্রতি নজর নেই। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে স্মৃতিসৌধটি সংস্কার করা হয়।
শ্রীমঙ্গল শহরের পূর্বাশা আবাসিক এলাকার একটি খালে চা শ্রমিক বংশোদ্ভূত ৮ জন যুবকের স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনী গুলি করে হত্যা করে। এরা হচ্ছেন ছয়বল রিকিয়াসন, ছটুয়া রিকিয়াসন, দরবারিয়া রিকিয়াসন, রঘুনন্দন রুহিদাস, ছিকনন্দন রুহিদাস, মরুলিয়া বারই, কানাইয়া ভার ও মহাবীর রিকিয়াসন। ‘৯০ দশকের পর এ স্থানটিতে শহীদদের স্মরণে ছোট্ট করে একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়।
শ্রীমঙ্গলে যুদ্ধকালীন সময়ে পাক বাহিনীর ক্যাপ্টেন তারেক সিড ও ক্যাপ্টেন সেলিম ( ডাক বাংলোয়), মেজর এরশাদ (ওয়াপদা রেস্ট হাউস), লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইয়ামিন বাট সিন্দুরখান ইপিআর ক্যাম্পে অবস্থান করে চা বাগান ও গ্রামাঞ্চলে নারকীয় তান্ডব লীলা চালায়। প্রতিদিন বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিক লাইনে প্রবেশ করে সুন্দরী চা শ্রমিক মেয়েদের ধরে নিয়ে যেত তাদের ক্যাম্পগুলোতে। এভাবে অসংখ্য চা শ্রমিক মেয়েদের ধরে এনে ধর্ষণশেষে হত্যা করাই তাদের নিত্যদিনের কাজ ছিল। জেমস ফিনলে কোম্পানির আওতাধীন শ্রীমঙ্গল শহরস্হ বিডিআর ক্যাম্প সংলগ্ন সাধু বাবার বটগাছ তলে চা বাগানের কত লোককে যে হত্যা করেছে তার সঠিক হিসাব পাওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। চা বাগানের চা শ্রমিক ছাড়াও শ্রীমঙ্গল ও বৃহত্তর সিলেটের অসংখ্য নারী-পুরুষকে ধরে এনে নির্যাতন করে লাশ ভূরভূরিয়া ছড়ার পাড়ের বধ্যভূমিতে ফেলে দিত। কংকালে- কঙ্কালে ভরপুর ছিল এ বধ্যভূমিটি। স্বাধীনতার প্রায় ৪ দশক পর ২০১০ শহীদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়।
পাকসেনারা তৎকালীন শ্রীহট্ট জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজেন্দ্র প্রসাদ ব্যানার্জিকে প্রতি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার শ্রীমঙ্গল শহরস্হ মৌলভীবাজার রোডের লেবার হাউসে অফিসের কার্যক্রম খোলা রেখে চালাতে নির্দেশ দেয়। তিনি ও তাদের কথামতো চা শ্রমিকদের স্বার্থের ‘নামকাওয়াস্তে’ চালিয়ে যান। জুলাই-এর প্রথম সপ্তাহের রোববার গভীর রাতে মুক্তিবাহিনী ফুল ছড়া চা বাগানের নাচঘরের সামনে ব্রিজটি ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। পরদিন সকালে ঐ ব্রিজটি ভাঙ্গার কারণে চা বাগানের নিরীহ নারী-পুরুষ সবাইকে বাগানের ফুটবল খেলার মাঠে জড়ো করে। পাকবাহিনীর শ্রমিকদের দিকে ষ্টেনগান তাক করিয়ে কারা মুক্তিবাহিনীকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছে তাদের নাম ঠিকানা জানতে চায়- পরে তাদের কাছ থেকে কোন তথ্য না পেয়ে ভয় দেখিয়ে ছেড়ে দেয়।
ফুলছড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি
বীরবল রায়কে পাক সেনারা জিপের পিছনে বেঁধে টেনে হেঁচড়ে গাড়িতে করে তাকেসহ ৬ জন চা শ্রমিককে
পাক বাহিনীর সদর দপ্তর শ্রীমঙ্গল ওয়াপদা রেস্ট হাউসে নিয়ে আসে। চা শ্রমিক নেতা রাজেন্দ্র ব্যানার্জীর পিসাত ভাই সিন্দুরখান চা বাগানের কবিরাজ গোবিন্দ চন্দ্র সোমকে পাকসেনারা ‘ভারতীয় ‘স্পাই’ বলে ভানুগাছ রোডস্থ ডি ডি এল -এর অফিসে নিয়ে মুক্তিবাহিনীর তথ্য সংগ্রহ করতে নির্যাতন করে। পড়ে তাঁকে সাধু বাবার গাছ তলার নিচে গুলি করে হত্যা করে। সিন্দুরখান চা বাগানের রোহিনা বালা সোমের বাসা থেকে শ্রমিক নেতা রাজেন্দ্র ব্যানার্জি ৬ জন চা শ্রমিককে পাক বাহিনীর ধরে নেবার খবর পান। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি পাকবাহিনীর সদর দপ্তরে এসে আটককৃত শ্রমিকদের মুক্তি দাবি করেন। পাক বাহিনীর মেজর ও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেবে বলে জানায়। এদিকে সিন্দুর খান চা বাগানস্থ পাকবাহিনীর দালাল শান্তি কমিটির কমান্ডার আব্দুল গাফফার চৌধুরী ( ফাটা বাবু) শায়েস্তা করার জন্য শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে পাক বাহিনীর কাছে মিথ্যা রিপোর্ট করে।
এরপরই ফুলছড়ার ব্রিজ ভাঙ্গার অজুহাতে সিন্দুরখান ক্যাম্প থেকে পাক বাহিনীর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট ইয়ামিন বাট ফোর্স নিয়ে বাড়ি থেকে রাজেন্দ্র ব্যানার্জিকে নির্যাতন ক্যাম্পে ধরে নেয়। সেখানে অমানুষিক নির্যাতন করে তাঁর পা ভেঙ্গে দেয়। সারা শরীর জখম করে। নির্যাতনকালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আসারাম বাড়ি থেকে মুক্তিবাহিনী সিন্দুরখানস্হ পাক বাহিনীর অবস্থানে বৃষ্টির মতো গুণী বর্ষণ করতে থাকে। যার কারনে পাকবাহিনী তাঁকে মারাত্মক আহতাবস্থায় ফেলে রেখে মুক্তিবাহিনীকে মোকাবেলা করার জন্য সীমান্তের দিকে ছুটে যায়। সারারাত মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যেগুলিবর্ষণ হয়। পরদিন সকালে পাকবাহিনীর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট ইয়ামিন বাট ৩টি শর্তে রাজেন্দ্র ব্যানার্জিকে ছেড়ে দেয়। শর্তাগুলো হলো যথাক্রমে ১) তাকে যে নির্যাতন করা হয়েছে তা কাউকে না বলা ২) তাঁর চিকিৎসা বাবদ যা ব্যয় হবে তা পাকবাহিনী বহন করবে ৩) তাঁর চিকিৎসা নিজ বাসভবনে করতে হবে, জাব বাইর থেকে কেউ জানতে পারবে না। ঐ রাতেই পাকসেনারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও রাজঘাট চা শ্রমিক নেতা পবন তাঁতিকে শ্রীমঙ্গলে ধরে এনে হত্যা করে।
চা শ্রমিক নেতা ও কালীঘাট ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সুরেন্দ্র ব্যানার্জিকেও পাক বাহিনীর মিথ্যে অজুহাতে ভানুগাছ রোডস্থ ডিডিএল-এর কার্যালয়ে ধরে আনে। নির্যাতন কালে তিনি তাদের মেজরকে বলেন, আমি রাজনীতি করিনা, শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ইউনিয়নের কাজে ব্যস্ত ইত্যাদি। পরে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা রিপোর্ট পরিবেশনের জন্য ছালিক আহমদ চৌধুরীকে পাকবাহিনী নানাভাবে শায়েস্তা করে বলে শ্রমিক নেতা সুরেন্দ্র ব্যানার্জি জানান। পরে তাঁকে পাকবাহিনী ছেড়ে দেয়। রাজঘাট চা বাগানের সন্তোষ কর্মকারকে মুক্তিযোদ্ধা বলে ধরে এনে সিন্দুরখান ক্যাম্পের পাশে হত্যা করে। খেজুরিছড়া চা বাগানের লক্ষ্মী গোয়ালাকে পাক সেনারা সিন্দুরখান ক্যাম্পে নিয়ে সারারাত ধর্ষণ করে হত্যা করে।
শিশির বাড়ি চা বাগানের মহালি নামক এক মহিলাকে সিন্দুরখান ক্যাম্পে ধরে এনে পাকবাহিনী পালাক্রমে ধর্ষণ করে। স্বাধীনতার পর বেদনায় যন্ত্রণায় তিনি মারা যান। সিন্দুরখান চাপ বাগান শ্রমিক প্রতিনিধি সোনাতন ব্যানার্জি, রাজঘাট চা বাগানের বাসু তাঁতী ও ফুলছড়া চা বাগানের ফাইমুলাকে সাধুবাবার গাছতলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
এভাবে শ্রীমঙ্গল থানার ৪৭টি চা বাগানে পাক বাহিনীর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নারীধর্ষণ, হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। তাদের এই অবদানের কথা গুটিকয়েক স্বার্থপর একপেশে লেখকদের লেখা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসে এদের ত্যাগ, তিতিক্ষা, নির্যাতন, নিপীড়ন ও মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের কথা স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে। দীর্ঘ ৮ মাস ৩ দিন পর পাক হানাদার বাহিনীর অধীনতার জিঞ্জির ছিঁড়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মুক্তিবাহিনী ৪ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর সি আর দত্তের নেতৃত্বে ৪ঠা ডিসেম্বর ‘৭১ শ্রীমঙ্গল শত্রুমুক্ত হয়।
আরও পড়ুন
জেলেদের চাল আত্মসাত: অভিযোগের তীর ইউপি প্রশাসক ও দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জের সাংবাদিকদের সম্মানে হাজী সেলিম ফাউন্ডেশন এর ইফতার মাহফিল ও মতবিনিময়
ঈদকে সামনে রেখে সুন্দরবনে বাড়তি নিরাপত্তা, বনজ সম্পদ রক্ষায় কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল