আব্দুর রহমান মিন্টু, রংপুর : আসন্ন ঈদুল আযহায় কোরবাণীর জন্য রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় চাহিদার চেয়ে প্রায় ৫ লাখ ৬৮ হাজার বেশী মোট ১৯ লাখ ৮০ হাজারের বেশী গবাদি প্রাণী প্রস্তত রাখা হয়েছে।
প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় কার্যলয় সুত্রে জানা গেছে, আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহার কোরবানীর কথা চিন্তা করে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ১৪ লাখ ১২ হাজারের বেশী কোরবানীর প্রাণীর চাহিদা নির্ধারন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভাগের ১ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৪ জন ছোট-বড় খামারীর মাধ্যমে ১৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৯০ টি গরু, মহিষ, ছাগল, উট, দুম্বা, ভেড়াসহ কোরবানীর প্রাণী প্রস্তুত করেছেন খামারী ও গৃহস্থরা। যা এই বিভাগের ৮ জেলায় মোট চাহিদার চেয়ে প্রায় ৫ লাখ ৬৮ হাজারের বেশী গবাদি প্রাণী প্রস্তত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে উট এবং দুম্বা রয়েছে ১০২ টি।
রংপুর বিভাগীয় প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর কার্যলয় সুত্র জানিয়েছে, এই বিভাগের ৮ জেলার মধ্যে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহায় রংপুর জেলায় কোরবানীর প্রাণীর চাহিদা নির্ধারন করা হয়েছে ২ লাখ ২৪ হাজার ৭৫২টি। সেখানে প্রস্তত করা হয়েছে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৩১২ টি। এই জেলায় চাহিদার চেয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে ১লাখ ৩৮ হাজার ৫৬১ টি।
গাইবান্ধা জেলায় কোরবানীর প্রাণীর চাহিদা নির্ধারন করা হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩০৫ টি। সেখানে প্রস্তত করা হয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৭৭ টি। এই জেলায় চাহিদার চেয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে ৬৯ হাজার ৯৭২ টি। কুড়িগ্রাম জেলায় কোরবানীর প্রাণির চাহিদা নির্ধারন করা হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৮৪০টি। সেখানে প্রস্তত করা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার ৪৮৬ টি। এই জেলায় চাহিদার চেয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার ৬৪৬ টি। নীলফামারী জেলায় কোরবানীর প্রাণীর চাহিদা নির্ধারন করা হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ১৬৬টি। সেখানে প্রস্তত করা হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ১৫৭টি। এই জেলায় চাহিদার চেয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে ৬৫ হাজার ৯৫১ টি।
লালমনিরহাট জেলায় কোরবানীর প্রাণীর চাহিদা নির্ধারন করা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৭৭৭টি। সেখানে প্রস্তত করা হয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৬৩১ টি। এই জেলায় চাহিদার চেয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে ৯০ হাজার ৮৫৪ টি। দিনাজপুর জেলায় কোরবানীর প্রাণীর চাহিদা নির্ধারন করা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার ৬৪৬ টি। সেখানে প্রস্তত করা হয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৪৮৫ টি। এই জেলায় চাহিদার চেয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে ৬৯ হাজার ৮৩৯ টি।
ঠাকুরগাঁও জেলায় কোরবানীর প্রাণির চাহিদা নির্ধারন করা হয়েছে ৭৫ হাজার ৩৬১ টি। সেখানে প্রস্তত করা হয়েছে ৯০ হাজার ৮৮৬ টি। এই জেলায় চাহিদার চেয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে ১৫ হাজার ৫২৫ টি। পঞ্চগড় জেলায় কোরবানীর প্রাণির চাহিদা নির্ধারন করা হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৩০০ টি। সেখানে প্রস্তত করা হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫৬ টি। এই জেলায় চাহিদার চেয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৬ টি।
এদিকে কোরবাণীর প্রাণির বাজারে ভালো দামের আশায় ঈদের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ছোট-বড়-মাঝারী খামারীরা ততই তৎপর হয়ে শেষ সময়ে প্রানন্ত যতœ সহকারে কোরবাণীর প্রাণির পরিচর্যা করছেন খামারি ও গৃহস্থরা। অনেক খামারী ইতোমধ্যে খামার থেকে গরু বিক্রিও শুরু করেছেন। কেউবা আবার অনলাইন প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে কোরবাণীর প্রাণী বিক্রির পথ বেছে নিয়েছেন । নিজ অঞ্চলের চাহিদা পূরণ করে উদ্বৃত্ত প্রাণি দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করার পরিকল্পনা করছেন অনেকেই। তবে গবাদি প্রাণির খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় খামারীরা কিছুটা অস্বস্থির মধ্যে রয়েছেন। এই দাম পুষিয়ে নেয়ার জন্য কোরবাণীর প্রানীর দাম কিছুটা বেশী হতে পারে বলে জানান খামারী ও গৃহস্থরা।
রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এম এ সাঈদ আকন্দ জানান, এ বছর কোরবানি পশু বিক্রির উদ্দ্যেশ্যে রংপুর জেলার ৮ উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার খামারির ঘরে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩২৩ টি গরু ও ২ লাখ ৮ হাজার ৭শত টি ছাগল ও ভেড়া বাজারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এবার জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করা যাবে প্রায় ১ লাখ ৩৯ হাজারের ও বেশি গবাদিপশু। পশুকেন্দ্রীক খামারীদের সকল প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
রংপুর বিভাগীয় প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডাক্তার মোহাম্মদ আব্দুল হাই সরকার জানান, আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহায় রংপুর বিভাগের ক্রেতা সাধারনের কোরবানীর প্রাণির চাহিদা পুরনের লক্ষ্যে পুর্বের স্থায়ী এবং কিছু মওসুমী হাট সহ বিভাগে মোট ২৯৫ টি কোরবানীর প্রাণীর হাট স্থাপন করা হয়েছে। এসব হাটে র্নিবিঘেœ কোরবানীর প্রাণীর বেচা-কেনার জন্য ক্রেতা-বিক্রেতা সহ খামারীদের নিরাপত্তাসহ সকল প্রকার সহযোগিতার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
কুলাউড়া পৌরসভার ৭০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
কুলাউড়ার জুনেলকে জেল গেইটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ আদালতের
কুলাউড়ায় জয়চন্ডী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইমরান, সম্পাদক মুহিত, সাংগঠনিক বদরুল নির্বাচিত