জেলা প্রতিনিধি, ফেনী:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই নির্ঘুম প্রচারে সময় কাটাচ্ছেন ফেনী ৩ সংসদীয় আসনের প্রার্থী-সমর্থকরা। এ আসনে এবারে মোট ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। দাগনভূঞা ও সোনাগাজী দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত ফেনী ৩ আসনের সকল প্রার্থীরা দুই উপজেলার পৌর শহরের অলিগলি থেকে গ্রাম-প্রান্তরে নির্বাচনের নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন। ভোটারদের নজর কাড়তে জনসংযোগ-মাইকিংয়ের পাশাপাশি সাঁটানো হয়েছে ব্যানার-পোস্টার, ফেস্টুন। এমন সরব প্রচারে লেমিনেটেড (পলিথিনে মোড়ানো) পোস্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিবেশের জন্য হুমকি বিবেচনায় নির্বাচনী প্রচারে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
২৫ ডিসেম্বর এমন নির্দেশনা দিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের তা বাস্তবায়নের জন্য বলেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যদিও আগে থেকেই নির্বাচনের প্রচারে পলিথিনে মোড়ানো পোস্টার ব্যবহারে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে তা মানছেন না এ আসনের অনেক প্রার্থী।
অথচ নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তা মানছেন না ফেনী ৩ (দাগনভূঞা-সোনাগাজীর) অনেক প্রার্থীরা। নিষেধাজ্ঞা ও নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন করে প্রচারকাজে পরিবেশ দূষণকারী প্লাস্টিকের যথেচ্ছ ব্যবহার করছেন তারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর থেকে অত্র আসনের বিভিন্ন স্থানে প্রার্থীদের লেমিনেটেড (পলিথিন মোড়ানো) পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে। বিশেষ করে দাগনভূঞা ও সোনাগাজী পৌর শহর ও বিভিন্ন বাজারের অলিগলি এবং রাস্তায় প্রার্থীর লেমিনেটেড (পলিথিন মোড়ানো) পোস্টার এবং ব্যানার দেখা গেছে।
রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) সরেজমিন দেখা গেছে, ফেনী ৩ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (লাঙল প্রতিক), স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী রহিম উল্যাহ (ঈগল প্রতিক) ও আব্দুল কাশেম আজাদ (ট্রাক প্রতিক) এরা বিভিন্ন স্থানে লেমিনেটেড (পলিথিন মোড়ানো) পোস্টার সাঁটিয়েছেন।
পরিবেশবিদরা বলছেন, প্রাথমিক ব্যবহারের পরে ফেলে দেওয়া এ বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশ দূষণের অংশীদার হবে। এসব একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে, পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে। এ ছাড়া বায়ু ও পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। যারা জনগণের জনপ্রতিনিধি হবেন তারাই যদি আইন না মানেন, পরিবেশ দূষণের কারণ হন, এটা খুবই দুঃখজনক।
এ বিষয়ে বংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র যুগ্ম সম্পাদক প্রফেসর ড. কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এর আগে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও লেমিনেটিং করা পোস্টারের আধিক্য দেখা যায়। প্রতিটি পোস্টার লেমিনেটিং করতে ১০ থেকে ২৮ গ্রাম প্লাস্টিকের ব্যবহার হয়। এটি অপচনশীল এবং পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ মুহূর্তে বৃষ্টি হলে এসব লেমিনেটিং করা পোস্টার স্যুয়ারেজ লাইনে গিয়ে পানিপ্রবাহে বাধার সৃষ্টি করবে, জলাবদ্ধতা তৈরি হবে। অর্থাৎ প্লাস্টিকের কারণে দূষণ হবে।
তিনি বলেন, পরিবেশের দূষণ রোধে জনপ্রতিনিধিদের সচেতন হতে হবে। যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তারা আমাদের জনপ্রতিনিধি হবেন। এখন তারাই যদি পরিবেশ দূষণ রোধে সচেতন না হয়, এটা দুঃখজনক।
এ বিষয়ে ফেনী জেলা প্রশাসক ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার শাহিনা আক্তার বলেন, প্রচারণায় নিষিদ্ধ পলিথিনে মোডানো বা লেমিনিটিং করা পোস্টার সাঁটানোর কোন সুযোগ নেই। কোন প্রার্থী যদি এরকম কোন পোস্টার সাঁটায় তাহলে নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন
বেরোবিতে দিনব্যাপী বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল, যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন তিন ঘণ্টা দেরিতে যাত্রা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ১ম বর্ষ শূন্য আসনে ভর্তি ও সাক্ষাৎকার ১৫ জানুয়ারি