ঠাকুরগাঁও জেলায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ১০২ টি। কিন্তু এর মধ্যে একটিরও লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, ১০২টির মধ্যে লাইসেন্স নবায়নের জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছে মাত্র ১৩টি ক্লিনিক ও হাসপাতাল। এমনকি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৬টি ক্লিনিক ও হাসপাতাল লাইসেন্স নবায়নের জন্য কাগজপত্র জমা দিলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অজ্ঞাত কারণে তা আটকে রেখেছে।
আরও জানা যায়, আগের বছরগুলোতেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কারও লাইসেন্স নবায়ন করেনি। তবে বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিছু কিছু করে লাইসেন্স দিচ্ছে।’
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও শহরে ও বিভিন্ন গ্রামেগঞ্জে ব্যাঙের ছাতার মতো অসংখ্য ক্লিনিক ও হাসপাতাল গঁজিয়েছে। মান বজায় রাখার বালাই নেই বেশিরভাগ ক্লিনিকের।
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন অফিসের সংশ্লিষ্ট মেডিকেল অফিসার ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, লাইসেন্স ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায় ৮/১০টির মতো অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এগুলো শিগগিরই বন্ধ করা হবে। এই সপ্তাহে হরিপুরের পশ্চিম বনগাঁ ও যাদুরাণী হাটের ২টি ক্লিনিক সিলগালা করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, শহরের সুরক্ষা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক্স-রে কক্ষে গোডাউন, রাফী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট ব্যবহার ও গ্রিণ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ল্যাবের পাশে ল্যাট্রিন থাকায় জরিমানা করা হয়েছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি পীরগঞ্জের ৫টি ক্লিনিক অনিয়মের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অন্য উপজেলাতেও অভিযান শুরু করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘গোটা জেলায় অভিযান পরিচালনার জন্য লোকবল নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগেরও দায়িত্ব পালন করা দরকার। তাছাড়া অভিযান পরিচালনার জন্য প্রশাসন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগের সমন্বিত সহযোগিতাও প্রয়োজন।’
এদিকে শতাধিক ক্লিনিক ও হাসপাতালের বর্জ্য বিশেষ করে রোগীদের রোগ জীবাণুযুক্ত তুলা, গজ- ব্যান্ডেজ অপারেশনকৃত দূষিত পদার্থ, ব্যবহৃত সিরিঞ্জ ও কেমিকেল ইত্যাদি ধ্বংস করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এগুলো যত্রতত্র ফেলে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করা হচ্ছে।
নিয়ম অনুযায়ী এই ধরনের বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা (ইনসিনেরেটর) থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বাস্তবে শুধু ঠাকুরগাঁও ডায়াবেটিক ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতাল ছাড়া আর কোথাও ইনসিনেরেটর নেই। এমনকি ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ইনসিনেরেটরটি নষ্ট হয়ে রয়েছে বহু বছর থেকে।
তবে জুলফিকার আলী ভুট্টো জানান, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন মেডিক্যাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এখানকার বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু হবে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
শেরপুর ও ময়মনসিংহে আকস্মিক বন্যা, তলিয়ে গেছে ১৬৩ গ্রাম
আরও বেড়েছে ডিমের দাম, সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী
ময়মনসিংহে মোবাইল বিস্ফোরণে চিকিৎসকের মৃত্যু