November 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, July 11th, 2024, 3:19 pm

এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও বাংলাদেশকে জিরো ট্যারিফ সুবিধা দেবে চীন

২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণের পরেও একটি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য চীনের কাছ থেকে করযোগ্য ৯৮ শতাংশ পণ্যের শূন্য-শুল্ক (জিরো ট্যারিফ) সুবিধা পাবে।

২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে পেয়ে আসা এ সুবিধার জন্য চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে বাংলাদেশ।

চীনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দিনের সরকারি সফর শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থায়ন খাতে সহযোগিতা আরও বাড়ানো, বাংলাদেশ-চীন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষ করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার ভোরে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ থেকে চীনে আম রপ্তানির প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও পাট, চামড়া, জলজ পণ্য এবং অন্যান্য উচ্চমানের বিশেষ পণ্য রপ্তানি সম্প্রসারণে বাংলাদেশকে স্বাগত জানিয়েছে চীন।

এছাড়াও উচ্চমানের বাংলাদেশি কৃষিপণ্য চীনে রপ্তানির বিষয়ে যোগাযোগ আরও জোরদার করতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।

পাশাপাশি বাণিজ্য সহজীকরণ, সহায়তা ও প্রকল্প বা কর্মসূচির জন্য অর্থায়ন বিষয়ে ভবিষ্যত সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছে চীন ও বাংলাদেশ।

দুই দেশই যত দ্রুত সম্ভব চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ চুক্তির আধুনিকায়নের বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মতি দিয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও শিল্প পার্ক, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান, নতুন জ্বালানি, পানিসম্পদ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, পোশাক ও অন্যান্য উৎপাদন খাতের মতো খাতে চীনা উদ্যোক্তাদের আরও বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হয়। পাশাপাশি চীনা প্রকল্প ও কর্মীসহ সব বিদেশি বিনিয়োগের নিরাপত্তা, বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

উভয় পক্ষ পিপিপি মডেলের মাধ্যমে অবকাঠামো ও নির্মাণ প্রকল্পগুলোতে সহযোগিতা গভীর করার বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছে।

এছাড়াও ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সমর্থন ও অংশগ্রহণ, দুই দেশের ডিজিটাল ও আইসিটি থিংক ট্যাংকগুলোর মধ্যে সহযোগিতা ও ডিজিটাল সক্ষমতা বাড়াতে যৌথভাবে একটি ডিজিটাল ইনোভেশন ল্যাব প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে চীন।

ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সহযোগিতা জোরদার করতে দুই দেশই সম্মতি জানিয়েছে।

ডিজিটাল অর্থনীতি শিল্পে দ্বিপক্ষীয় বিনিময়ে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে চীন। বাংলাদেশের ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নে চীনা সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করা হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল ও আইসিটি শিল্পের উন্নয়নে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে চীন-বাংলাদেশ উদ্ভাবন সহযোগিতা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা দেখবে।

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ডিজিটাইজেশনের প্রচারের জন্য “তথ্য শিল্প এবং ডিজিটাল বাণিজ্যের আন্তর্জাতিক বন্দর” এ সহযোগিতা চালাতে প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছে চীন।

এসব উদ্যোগের প্রশংসা ও ধন্যবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের সামুদ্রিক টেকসই উন্নয়ন ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সামুদ্রিক পর্যবেক্ষণ, দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রশমন, ওশান টু ক্লাইমেট সিমলেস ফোরকাস্টিং সিস্টেম (ওএসএফ) এবং মেরিন হ্যাজার্ডস আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড মিটিগেশন সিস্টেমের ক্ষেত্রে মেরিটাইম এবং ব্লু ইকোনমি সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে দুই দেশই।

এছাড়াও সামুদ্রিক বিষয়ে আরও এগিয়ে যেতে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে চীন।

শিগগিরই দ্বিতীয় দফায় সামুদ্রিক সহযোগিতা সংলাপ আয়োজনে সম্মত হয়েছে দুই দেশ।

প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রে, সব পর্যায়ে এবং বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনী ও বিভাগের মধ্যে বিনিময় আরও জোরদার করতে এবং ব্যবহারিক সহযোগিতাও বাড়াতে রাজি হয়েছে চীন-বাংলাদেশ।

পাশাপাশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণের বিষয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্পৃক্ততা ধরে রাখতে একমত হয়েছে দুই দেশ।

মানবতার তাগিদে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষা করতে হবে এবং জীবিকা নির্বাহ ও উন্নয়নের অধিকারগুলো সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক মানবাধিকার এ বিষয়ে দুই দেশই একমত হয়েছে।

সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সব দেশের মধ্যে মানবাধিকার বিষয়ে বিনিময় ও সহযোগিতা সমর্থন করে চীন ও বাংলাদেশ। এছাড়াও দুই দেশই মানবতার সাধারণ মূল্যবোধকে সমর্থন করে, মানবাধিকারের রাজনীতিকরণের বিরোধিতা করে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এজেন্ডার সব ক্ষেত্রে যৌথভাবে সুষ্ঠু অগ্রগতি প্রচারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

——ইউএনবি