জেলা প্রতিনিধি, রংপুর (গঙ্গাচড়া) :
রংপুরের গঙ্গাচড়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গা (সম্পত্তি) ছেড়ে দিতে ৭২ ঘন্টার সময় বেধে দিলো বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার টিপিনের সময় জায়গা গড়ে তোলা দোকান ঘুরে ঘুরে ব্যবসায়ীদের এ সময়ের মধ্যে তাদের মালামাল সরিয়ে নিতে বলে শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গঙ্গাচড়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের পুর্বদিকে ও শহিদ মিনার সামনে দক্ষিণ দিকে উপজেলা পরিষদ রাস্তার পাশে বিদ্যালয়ে সম্পতি রয়েছে। বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের আগে থেকে ওই সম্পত্তিতে ৯ টি দোকান গড়ে তুলে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছে কিছু ব্যাক্তি। দোকান দখলে রাখা ব্যাক্তিরা আবার অন্য একজনের কাছে মোটাটাকা সিকিউরিটি নিয়ে ৬/৭ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া দেয়।
এদিকে বিদ্যালয়ের একটি ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের শ্রেনির কক্ষের বিল্ডিং দোকান নির্মাণ করায় ঢাকা পড়ে যায়। ফলে ওই বিল্ডিংয়ে শিক্ষার্থীরা কোন আলো বাতাস পায়না। আলো বাতাস না পাওয়ায় শিক্ষার্থী গরমে ঠিকমত ক্লাশ করতে পারেনা। শিক্ষার্থীরা দাবি তুলে বিল্ডিংয়ের সাথে থাকা দোকান তুলে দিয়ে জানালা দিয়ে আলো বাতাসের ব্যবস্থা করা এবং সাইকেল গ্যারেজ নির্মাণ করার। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সভাপতির সাথে পরামর্শ করে ব্যবসায়ীর জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেন।
কিন্তু বেশকিছু অতিবাহিত হলেও ব্যবসায়ীরা জায়গা ছেড়ে না দিয়ে টালবাহানা করছে। ব্যবসায়ীদের টালবাহানার বিয়য়টি শিক্ষার্থীরা জানতে পেরে শিক্ষকদের সাথে নিয়ে প্রতিটি দোকান ঘুরে ব্যবসায়ীদের ৭২ ঘন্টার মধ্যে বিদ্যালয়ের জায়গা খালি করতে বলে। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয়ের সভাপতির প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের দক্ষিণদিকে স্কুল সুপার মার্কেট গড়ে তুলেছে দখলকারী ব্যবসায়ীরা। সেটিও উদ্ধারে আন্দোলনে যাবার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনির শিক্ষার্থী সাব্বির আহম্মেদ, আক্কাস আলী, আব্দুল্লাহ আল মুঈদ, সুমন বাবু, আমীর হামজা, নবম শ্রেনির শিক্ষার্থী মোরসালিন বলেন, আমরা শ্রেনি কক্ষের পাশে জায়গা দখল দোকান ঘর নির্মাণ করায় কক্ষে কোন আলো বাতাস আসেনা। গরমে ক্লাশ করতে পারিনা।
এছাড়া কোন সাইকেল গ্যারেজ না থাকায় এলোমেলোভাবে রোদে সাইকেল রাখতে হয়। দখলকৃত জায়গা খালি করলে কক্ষে আলো বাতাস আসবে এবং সাইকেল গ্যারেজ করা যাবে। সে কারণে আমরা জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য সময় দিয়েছি। শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, বিদ্যালয়ের বড় একটা জায়গা দীর্ঘ ৩৫/৪০ বছর ধরে দখল করে মার্কেট গড়ে তুলে ব্যবসা করছে একটি চক্র। চক্রটি নিজের জায়গারমত মোটা টাকা ভাড়া নিয়ে খাচ্ছে। যেহেতু এখন বিদ্যালয় সরকারি হয়েছে তাই সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারে আমরা কর্মসূচি দিবো।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল আখের মিঞা বলেন, বিদ্যালয় সরকারিকরণের অনেক আগে ওই জায়গাগুলো সে সময়ের কমিটিকে ম্যানেজ করে দখল নিয়েছে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে জায়গা উদ্ধারে কয়েকবার চেষ্টা করি। সরকারিকরণের পর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান উপজেলা নির্বাহী অফিসার। তিনিও এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্যোগ নেন। তবে শিক্ষার্থীরা যুক্তিক দাবি তুলে জায়গা খালি করার সময় দেয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয়ের সভাপতি নাহিদ তামান্না বলেন, আগে কিভাবে বিদ্যালয়ের জায়গা ব্যবসায়ীরা নিয়ে দোকান নির্মান করেছে সেটা বড় বিষয় নয়। এখন সরকারি প্রতিষ্ঠানের জায়গা সরকারি নিয়ম মোতাবেক উদ্ধার করা হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
নাসিরনগরে ৫০ জন সমাজভিত্তিক সংগঠনের সদস্যের মাঝে সাইলো বিতরণ
জয়পুরহাটে বিসিআইসি সার ডিলারদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান
খুলনায় নিমকো’র আয়োজনে গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ক কর্মশালা