নিজস্ব প্রতিবেদক
ভাত খেলে ওজন বাড়ে, এ ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়। কারণ পরিমিত ভাত খেওে ওজন কমানো যায়। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদদের মত হলো, পরিমিত ভাত ও এর সঙ্গে কী খাচ্ছেন, সে বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি। ভাত খেলেই যে মানুষ মোটা হয়ে যায় কিংবা ওজন বাড়ে এ বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।
১০০ গ্রাম প্রতি ভাতে ৩৪০ কিলো ক্যালোরি শক্তি উৎপন্ন হয়। এতে প্রায় ৮ গ্রাম ফ্যাট, ৭৮ গ্রাম ফাইবার, ৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও অন্যান্য দ্রাব্য ও অদ্রাব্য ফাইবার উপস্থিত থাকে। অন্যদিকে ১০০ গ্রাম ময়দাতেও ভাতের সমপরিমাণই ক্যালোরি থাকে।
তাই দু’বেলা যদি ১৫০ গ্রামও ভাত খান, তাহলেও তা ৫০০ কিলো ক্যালোরি ছাড়ায় না। পুষ্টিবিদদের মতে, ভাত কম রেখে এর সঙ্গে সালাদ, স্যুপ, মাছ ইত্যাদি খাদ্যের সুষমতা বজায় রাখলে পেটে অতিরিক্ত মেদ জমতে পারবে না।
ভাতের উপকারিতা জানেন কি?
১. ভাতের গ্লাইকোজেন দ্রুত শরীরে গলে যায় তাই ভাত অন্যান্য সাপ্লিমেন্ট খাদ্যের থেকে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে।
২. ভাতে ট্রান্সফ্যাট না স্যাচুরেটেড ফ্যাট নেই তাই কোলেস্টেরল বাড়ার কোনো চাপ নেই।
৩. ভাত হলো লো ফ্যাট ও হাই কার্ব সমৃদ্ধ ফ্রি ফুড যাতে সোডিয়াম, গ্লুটেন জাতীয় ক্ষতিকারক পদার্থ থাকে না। বরং ভাতের বিকল্প হিসেবে যেসব খাবার খাওয়া হয়; সেগুলোতে ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৪. দৈনিক সুস্থ সবল মানুষের ক্যালোরির ৬০-৭০ শতাংশ শর্করাজাতীয় খাবার থেকে আসা উচিত। যা পূরণ করে ভাত।
৫. ভাত হিসেবে ঢেঁকি ছাঁটা চাল বাছুন। এতে সাধারণ পলিসড চালের তুলনায় বেশি থায়ামিন, রাইবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, পাইরিডক্সিন ও ফলিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি থাকে। যা শরীরে হোল গ্রেনের ২/৩ অংশ চাহিদা পূরণে সক্ষম।
৬. ব্ল্যাক রাইস বা ওয়াইল্ড রাইসে চালের আবরণীতে অরাইজনল, টোকোটেরিনল ইত্যাদি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। লাল চালে থাকে অ্যান্থোসায়ানিন।
ভাত খেয়ে যাতে ওজন না বাড়ে তার জন্য বিশেষভাবে ভাত রান্না করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে রান্নার আগে চাল বারবার ধোবেন না। তাতে এর ভিটামিন ও মিনারেল নিষ্কাশিত হয়ে যায়।
কম পানি দিয়ে হাঁড়িতে ভাত বসান। ভাতের মাড় ঝরাবেন না। চাইলে ফোটানো পানিতে ভেজা চাল ও দিতে পারেন। অথবা প্রেশার কুকারেও ভাত রান্না করতে পারেন। ঢাকনা দিয়ে স্টিমে রান্না করুন ও ধীরে ধীরে ঠান্ডা করুন। এতে স্টার্চ জমাট বাঁধবে ও এই ভাত কম খেলেই পেট ভর্তি হয়ে যাবে।
ভাত খাওয়ার সময় যা খেয়াল রাখবেন
১. ভাতের সঙ্গে ড্রেসিং ছাড়া সালাদ, সবজি যোগ করুন। এতে ডায়েট ব্যালেন্স হবে, সঙ্গে বেশি ভাত খাওয়ার প্রবণতাও কমবে।
২. ভাত খাওয়ার পরপরই শোবেন না। ১৫-২০ মিনিট পায়চারি করুন। এতে তন্দ্রাভাব কাটবে এবং ছর্মি জমার সুযোগ থাকবে না।
৩. ভাত ঘুম কাটাতে খাওয়ার পরপরই ব্ল্যাক কফি খেতে পারেন। গ্রিন টি’ও পান করতে পারেন।
৪. বেশ কিছু তরকারি পাতে রাখুন। ভাত দিয়ে তরকারি নয়, তরকারি দিয়ে ভাত খান। প্লেটে বারবার ভাত তুলে নেবেন না। এতে বেশি খাওয়া হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন
শীতে শিশুদের সুস্থ রাখবে যেসব খাবার
শীতে ভিটামিন সি’র ঘাটতি মেটাতে যেসব ফল খাবেন
জীবনে সুখ চাইলে এদের এড়িয়ে চলুন