নিজস্ব প্রতিবেদক
শেখ হাসিনার দোসর আরও অনেকেই আছে, শুধু রাষ্ট্রপতিকে নিয়েই অন্তর্বর্তী সরকার কেন এত ব্যস্ত—সে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘আপনারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল করেছেন, সেখানে অনেকের বিচার হবে। কিন্তু আমরা যদি কাজের বদলে অকাজে বেশি লিপ্ত হয়ে পড়ি, রাজনৈতিক শূন্যতা, সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি করি, তাহলে তো জনগণ কথা বলা শুরু করবে।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর আজিমপুরে গোর-এ শহীদ মাজার এতিমখানার সামনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে দলীয় এক কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে নানা জটিলতা সৃষ্টির অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘আপনারা শুধু জটিলতার পর জটিলতা তৈরি করছেন কেন? শেখ হাসিনার দোসর তো আপনাদের মধ্যে আরও অনেকেই আছে, কই তাদের বিষয়ে তো আপনারা কিছু বলছেন না।’
এ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টার প্রতি ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, ‘যিনি এক-এগারোতেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন, শেখ হাসিনার আমলেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। তাঁকে আপনারা উপদেষ্টা বানিয়েছেন। এ রকম তো অনেকেই রয়েছেন, এসব বিষয়ে আপনারা তো কিছু বলেন না। শেখ হাসিনার রক্তাক্ত দুঃশাসনকে যাঁরা প্রলম্বিত করেছেন, টু-শব্দ যাঁরা করেননি, যাঁরা নিঃস্বার্থভাবে শেখ হাসিনার তাঁবেদারি করেছেন, তাঁরা তো এখনো বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজকে রাষ্ট্রপতি থাকল কি থাকল না, এটা নিয়ে আমরা দেশে কেন জটিলতা তৈরি করছি। কেন আমরা দেশে সংকট ডেকে নিয়ে আসব। এটা মুখ্য বিষয় নয়। আমরা শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে তাড়িয়েছি, তাঁর দোসরদেরও আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার করা হচ্ছে আমাদের দায়িত্ব। যেসব গণমাধ্যম নির্লজ্জের মতো শেখ হাসিনার পদতলে বসে চামচামি করেছে, শেখ হাসিনার প্রতিটি অপকর্মকে যারা বৈধতা দিয়েছে, কই তাদের বিষয়ে তো আপনারা কিছু বলেন না।’
রিজভী বলেন, ‘৭১ টেলিভিশনসহ আরও বিভিন্ন টেলিভিশনে আমরা যেভাবে শেখ হাসিনার সুনাম করতে দেখেছি, সেখানে বড় বড় সাংবাদিকেরা ছিলেন, মিডিয়ার অনেক নামকরা লোকেরা ছিলেন, কই তাঁদের বিষয়ে তো কিছু বলছেন না? শুধু রাষ্ট্রপতিকে নিয়েই আপনারা ব্যস্ত আছেন।’ তিনি সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, গণতন্ত্রের যাত্রাপথে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের অবদান এ দেশের মানুষ ইতিহাসে লিখবে। কিন্তু আবেগের বশবর্তী হয়ে এমন কিছু করা যাবে না, যাতে সংবিধানবহির্ভূত কিছু হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এর আগে রুহুল কবির রিজভী আজিমপুরে এতিমখানা সড়কে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও চিকিৎসাবিষয়ক প্রচারপত্র বিতরণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী, মীর নেওয়াজ আলী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম, সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ, বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন
দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা দুর্যোগের ক্ষতি থেকে বাঁচার সহায়ক
শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের নথি চাওয়ার পর সচিবালয়ে আগুন
অগ্নিকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল