যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়ই বাংলাদেশকে স্থিতিশীল দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতে বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গার্সেটি। তিনি বলেন, বিদায়ী বাইডেন এবং আগত ট্রাম্প প্রশাসন উভয়ই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার গুরুত্ব ব্যক্ত করেছে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ভারতের কলকাতায় সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেন এরিক। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
এরিক গারসেটি বলেন, গত সপ্তাহে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ভারত সফরে এসে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে গেছেন। তার বৈঠকে আলোচনার একটি বড় অংশ ছিল বাংলাদেশ। আমরা কীভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারি, বাংলাদেশ কীভাবে দ্রুত নির্বাচন দিতে পারে, দেশটি কীভাবে সকল নাগরিককে নিরাপত্তা দিতে পারে এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা সবাই একটি স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও সহনশীল বাংলাদেশ দেখতে চাই। তাই আমি মনে করি, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত আগের চেয়ে আরো ঘনিষ্ঠভাবে এক সঙ্গে কাজ করতে পারবে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, যেকোনো রাজনৈতিক পালাবদলই কঠিন এবং তা সব সময় ভালো হবেই এমনটা বলা যায় না। বিষয়টি ইতিবাচক হতে পারে যদি বিশ্বের অন্যান্য সম্প্রদায় তা গ্রহণ করে এবং দেখে যে, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি মিল রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্ক বিষয়ে এরিক বলেন, বিশ্বে উষ্ণায়নের মোকাবিলা, বাণিজ্য, তথ্যপ্রযুক্তি যোগাযোগের প্রসার থেকে নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতায় ভারত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাও সম্প্রতি পরমাণু শক্তির দায়িত্বপূর্ণ ব্যবহার নিয়ে দিল্লিতে কথা বলেছেন। ভারতেও চীনের মতো সুলভে অপ্রচলিত শক্তির সংস্থান করা যায়।
তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বা ভারত, কোনো গণতন্ত্রই নিশ্ছিদ্র নয়। বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের মতো গণতন্ত্রেরও পরিচর্যা করতে হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দিল্লিতে আশ্রয় নেয়ার পর থেকেই ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। সেই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কূটনৈতিকভাবে দু’পক্ষের মধ্যে চেষ্টা চলছে। গত ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সফরে আসা ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বললেন, শেখ হাসিনার অবস্থান দুই দেশের সম্পর্কে বাধা হওয়া উচিত নয়।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দুদের নিপীড়নের কথা বলে আসছে ভারত, যদিও অনেক অভিযোগের ভিত্তি মেলেনি।
এর মধ্যে গত ৩১ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এক পোস্টে বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ‘বর্বর সহিংসতার’ নিন্দা জানান এবং মন্তব্য করেন, ‘এটা তার তত্ত্বাবধানে কখনো ঘটত না।’
ট্রাম্পের ওই মন্তব্য বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্বিগ্ন করেছে, বিশেষ করে ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ পরবর্তী সম্ভাব্য পরিস্থিতি নিয়ে।

আরও পড়ুন
আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ৭৬১
এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়ার সুযোগ নেই : ইসিসচিব
বিস্ফোরক মামলায় মির্জা ফখরুলসহ ১৬৩ জনকে অব্যাহতি