January 15, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, January 14th, 2025, 7:44 pm

নতুন উদ্যমে জীবন গড়ার প্রতিজ্ঞা নিয়ে নতুন বছরটা শুরু করেন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নতুন উদ্যমে জীবন গড়ার প্রতিজ্ঞা নিয়ে নতুন বছরটা শুরু করেন অনেক মানুষ। পেশাগত সাফল্য কিংবা ব্যক্তিজীবনের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে আপনিও হয়তো অনেক কিছুই ভেবেছেন। তবে সম্পর্কগুলোর বিষয়ে বিশেষ কোনো ভাবনা কি আপনার মধ্যে কাজ করছে এই নতুন সময়ে? জীবনসঙ্গী, সন্তান, মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়, বন্ধু সবার সঙ্গে সম্পর্কই জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

নিজের জন্য প্রতিদিন সময় বের ...কাছের মানুষদের জন্য সময় বরাদ্দ রাখুন ছবি: পেক্সেলস
আপনি জীবনে আদতে কতটা সুখী, তা কিন্তু আপনার সম্পর্কগুলোর ওপরে অনেকাংশে নির্ভর করে। অথচ আমরা অনেকেই পেশাগত সাফল্য আর রোজকার আর্থিক ভাবনার মাঝে সম্পর্কগুলোকে আলগা করে ফেলি। সাধারণ কিছু ভুল করে ফেলি হামেশাই। এমন কিছু ভুলের বিষয় মনে করিয়ে দেওয়া যাক। এই ভুলগুলো এড়িয়ে চলতে আজ থেকেই সচেতন হোন।

সময় না দেওয়া
জীবন বাস্তবিক অর্থেই খুব ছোট। কাজের চাপে প্রিয়জনের মুখের দিকে একটা মিনিটও হয়তো তাকিয়ে থাকার সুযোগ পান না! সেখানে নিজেদের মতো করে রোজ একটু আলাদা সময় কাটানো তো অনেক দূরের কথা। পরিবারের অন্য সদস্যদের বেলাও একই কথা প্রযোজ্য। এখন থেকে কাছের মানুষদের জন্য সময় বরাদ্দ রাখুন। জীবনসঙ্গী, মা-বাবা কিংবা সন্তানদের জন্য রোজই সময় রাখা জরুরি; এই মানুষগুলোকে সবকিছুর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিন; বিশ্বাস করুন, জীবনে কোনো দিন হারবেন না। অন্যদেরও খোঁজ নিন। মনে করে ফোন করুন। কিংবা পাঠিয়ে দিন একটি খুদে বার্তা।

বন্ধুত্বের মাঝেও অভিমানের মেঘ জমতে দেওয়া ঠিক নয়বন্ধুত্বের মাঝেও অভিমানের মেঘ জমতে দেওয়া ঠিক নয় ছবি: পেক্সেলস

মনের কথা চেপে রাখা
কাছের মানুষের কিছু আচরণে আমরা কখনো কখনো কষ্ট পাই। অভিমান হয় আমাদের। রাগও হয়। তবে মনের সেই অনুভূতি অনেকেই চেপে রাখেন। এটাও কিন্তু ভুল। অভিমানের মেঘ জমতে দেওয়া ঠিক নয়। সময়-সুযোগমতো ঠান্ডা মাথায় নিজের কষ্টের কথা বুঝিয়ে বলুন আপনজনকে। যাতে এ নিয়ে পরে আপনার ক্ষোভ না জন্মে।

কটু কথা বলা
অনেকেই বাইরের জীবনের হতাশা বা রাগের বহিঃপ্রকাশ বাড়িতে ঘটান। এই ভুল আর করবেন না। ধরা যাক, পরিবারের আপনজনের পরামর্শে আপনি একটি চাকরিতে ঢুকেছেন। কিন্তু এখন সেখানে আপনার ভালো লাগছে না। অথচ হুট করে ছেড়েও দিতে পারছেন না। এ রকমটা হলেও আপনজনকে দোষ দিতে নেই। মনে রাখবেন, তাঁরা আপনার জন্য কল্যাণকর বিবেচনা করেই পরামর্শ দিয়েছিলেন। বাস্তবতা হয়তো রূঢ়। কিন্তু তাঁদের কল্যাণ ভাবনাটি মিথ্যা নয়। জীবনের কোনো বিষয় নিয়েই কাউকে দোষ দেবেন না।

তুলনা করা
এটি মারাত্মক এক ভুল। অন্যের সন্তান ভালো ফল করেছে, অন্যের পিতা দামি উপহার দিয়েছে, অন্যের সঙ্গী তার জন্য বিশেষ কিছু করেছে—এমন নানা বিষয় নিয়েই হীনম্মন্যতা সৃষ্টি হতে পারে আপনার মাঝে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, জীবন প্রত্যেকের জন্যই অনন্য। সবার ক্ষমতা এক রকম নয়। আপনার জন্যও তা সত্য। কিন্তু আপনার আপনজন আপনার জন্য বিশেষ কেউ। তা তিনি আপনার সন্তান, অভিভাবক, সঙ্গী যে–ই হোন না কেন। প্রতিটি সম্পর্কের ইতিবাচক দিক নিয়ে ভাবুন। সন্তানের ফলাফলে মেজাজ বিগড়ে গেছে? ভেবে দেখুন, কতজনের সন্তানই নেই; কিংবা কতজন সন্তান হারানোর বেদনা বুকে নিয়ে বেঁচে আছেন। অথচ পরীক্ষার ফলাফল তো সাময়িক ব্যাপার!

সন্তানের ফলাফলে মেজাজ বিগড়ে গেলেও শান্ত থাকার চেষ্টা করুনসন্তানের ফলাফলে মেজাজ বিগড়ে গেলেও শান্ত থাকার চেষ্টা করুন ছবি: পেক্সেলস

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করা
কাউকে ‘টেকেন ফর গ্র্যান্টেড’ ধরে নেবেন না। অর্থাৎ, তিনি আপনার জীবনে আছেন, আপনার জন্য যা করা তাঁর কর্তব্য, সেটাই করছেন এবং তা একেবারেই বিশেষ কিছু নয়—এমন ভাবনার চক্র থেকে বেরিয়ে আসুন। প্রতিটা সম্পর্ক আপনার জীবনের জন্য উপহার। যিনি যা করছেন আপনার জন্য, তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকুন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। সম্পর্কের জন্য ব্যয় করা সময় এবং শ্রমকে মূল্যায়ন করুন।

সূত্র: রিডারস ডাইজেস্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া