বাংলাদেশ তার নিজ ভূখণ্ডে ভারতীয় কোন টেলিভিশন চ্যানেল নিষিদ্ধ না করলেও, দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় সব স্যাটেলাইট চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে বলে প্রতিবেদন করা হয়েছে। নয়া দিল্লির সমর্থন পাওয়া বাংলাদেশের স্বৈরাচারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা উস্কে দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত ভারতীয় একটি সম্প্রচার মাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্যটি ছড়িয়েছে। তবে ভারতীয় টিভি চ্যানেল বন্ধের বিষয়ে দায়ের করা পিটিশনের ওপর ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের উচ্চ আদালাত কোন আদেশ দেয়নি।
গত ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ভারতীয় নিউজ চ্যানেল রিপাবলিক বাংলা নিজের ৩২ লাখ ফলোয়ারের উদ্দেশ্যে একটি ফেসবুক পোস্টে লিখেন, “বাংলাদেশে বন্ধ হল ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেল! ভারতীয় মিডিয়ায় কেন আপত্তি ইউনূসের”।
২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানে উৎখাত হওয়া শেখ হাসিনার কঠোর শাসনের প্রতি ভারতের সমর্থনের বিরুদ্ধে সোচ্চার সমালোচনা করছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস ।
উৎখাতের পর নয়া দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েছেন ৭৭ বছর বয়সী হাসিনা, যার সরকার ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত।
ফেসবুক পোস্টে রিপাবলিক বাংলার একটি নিউজ বুলেটিন শেয়ার করা হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে, ‘বাংলাদেশে বন্ধ সব ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেল’।
স্ক্রিনের একটি নিউজ টিকারে বলা হয়, “আজ থেকে বন্ধ করা হল সম্প্রচার। ভারত বিদ্বেষের আরও এক নজির বাংলাদেশে”।
অসত্য তথ্য এবং বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণার অভিযোগে রিপাবলিক বাংলা নিষিদ্ধ করার দাবিতে গত নভেম্বরে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন বাংলাদেশের আইনজীবী ।
পরে অন্য একটি রিট আবেদনে বাংলাদেশে ভারতের সব টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।
তবে ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত আলাদত কোন রিট আবেদনের ওপর আদেশ দেয়নি।
যারা নিষেধাজ্ঞাটি কার্যকর হয়েছে বলে বিশ্বাস করেছেন, রিপাবলিক বাংলার প্রতিবেদনটি সেসব জনগণের মধ্যে ভারত-বিরোধী মন্তব্যের ঝড় তুলেছে।
একজন ফেসবুক পোস্টে লিখেন, “বাংলাদেশ সভ্য মানুষের শান্তিপূর্ণ দেশ, ভারতীয় চ্যানেল এখানে চলতে পারে না। আমি ড ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাই। আল্লাহ তার উপর সদয় হউন।”
অন্য একজন লিখনে, “ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করা হউক”।
২৭ জানুয়ারি এএফপির ঢাকা ব্যুরো অফিসের সাংবাদিকরা রিপাবলিক বাংলাসহ ভারতীয় টিভি চ্যানেল দেখতে পেয়েছেন।
বাংলাদেশে বিদেশী স্যাটেলাইট চ্যানেল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংগঠন ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)-এর সভাপতি ২৩ জানুয়ারি জানিয়েছেন যে, ভারতীয় চ্যানেলের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা ছিল না।
এবিএম সাইফুল হোসেন সোহেল গণমাধ্যমকে বলেন, “এখানে ভারতের সব চ্যানেল চালু রয়েছে। যে সংবাদটি ছড়ানো হয়েছে তা পুরোপুরি অসত্য”।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের একজন মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব আহম্মদ ফয়েজ গণমাধ্যমকে ২৬ জানুয়ারি জানিয়েছেন যে সরকার এমন কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।
আরও পড়ুন
দুই ঘণ্টার চেষ্টায় খিলগাঁওয়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে
প্রথম প্রহরে শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা
বইমেলায় আজ এসেছে ৭০ নতুন বই