March 20, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, March 19th, 2025, 3:16 pm

সোনার কমোড চুরির দায়ে চক্রের সদস্যরা দোষী সাব্যস্ত

সোনার কমোডটির নাম ‘আমেরিকা’ছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি 

অনলাইন ডেস্ক: 

ইংল্যান্ডের ব্লেনইম প্রাসাদে আয়োজিত শিল্পকর্ম প্রদর্শনী থেকে ৪৮ লাখ পাউন্ড মূল্যের সোনার কমোড চুরির অভিযোগে একটি চক্রের সদস্যদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

চুরির ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে। অক্সফোর্ডশায়ারে অবস্থিত রাজবাড়ীতে জাঁকজমকপূর্ণ ওই প্রদর্শনীর উদ্বোধন হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই চোরের দল সোনা দিয়ে তৈরি ওই কমোডটি ভেঙে চুরি করে নিয়ে যায়।

চুরি পরিকল্পনার জন্য মাইকেল জোন্স এবং সোনা বিক্রির পরিকল্পনার জন্য ফ্রেড ডো নামের দুজন দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। বোরা গুচাক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ছিল। তবে তাঁকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এ চোর চক্রটির হোতা জেমস শিন পলাতক। বিবিসি এখন তাঁর অপরাধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস জানতে পেরেছে। ২০০৫ সাল থেকে তিনি কমপক্ষে ছয়বার জেলে গিয়েছেন। শিন সংগঠিত অপরাধী চক্রকে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। এসব অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং চুরির মধ্য দিয়ে ৫০ লাখ পাউন্ডের বেশি অর্থ সংগ্রহ করার অভিযোগ রয়েছে। এসব অর্থ পুনরুদ্ধার করতে কর্তৃপক্ষ অনেকাংশেই ব্যর্থ হয়েছে।

সিসিটিভিতে পাঁচজনকে চুরি করতে দেখা গেলেও ধরা পড়েছেন মাত্র দুজন। তাঁরা হলেন শিন ও জোন্স।

আদালতের শুনানিতে বলা হয়, চুরির কয়েক দিনের মধ্যেই ‘আমেরিকা’ নামক ওই শিল্পকর্ম (কমোড) ভেঙে বিক্রি করা হয়েছে। সোনার কোনো অংশ উদ্ধার করা যায়নি।

ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা আলামতের সঙ্গে শিনের ডিএনএর মিল খুঁজে পাওয়ার পর গত বছর তিনি দোষ স্বীকার করেন। অক্সফোর্ড শহরের বাসিন্দা শিনের কাপড় থেকেও সোনার ভাঙা টুকরা পাওয়া গিয়েছিল। আদালত তাঁকে এ অপরাধের ‘সাধারণ চরিত্র’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে চুরির পাশাপাশি অপরাধমূলকভাবে সম্পদ স্থানান্তরের পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়েছিল।

৪০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি আগেও জালিয়াতি, চুরি ও আগ্নেয়াস্ত্র–সংক্রান্ত অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। সোনার কমোড চুরির পরিকল্পনাকারী সন্দেহে ঘটনার চার সপ্তাহ পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তবে তিনি জামিনে ছাড়া পান।

শিন কিন্তু তাঁর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে থাকেন। আট মাস পর সাফোকের নিউমার্কেটে অবস্থিত ন্যাশনাল হর্সরেসিং জাদুঘরেও একই রকম চুরি চালিয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি চার লাখ পাউন্ড মূল্যের সোনা ও রুপার ট্রফি চুরি করেছিলেন। এগুলোর কোনোটিই এখনো উদ্ধার হয়নি।

অক্সফোর্ডের উত্তরে অবস্থিত এবং ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত ব্লেনইম প্রাসাদে চুরির পরিকল্পনা এই চক্র কীভাবে করল, তা আদালতের শুনানিতে উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে বলা হয়, অক্সফোর্ডের বাসিন্দা ৩৯ বছর বয়সী জোন্স চুরির আগের দিন দ্বিতীয়বার প্রাসাদে যান এবং সোনালি রঙের কমোডটির ছবি তোলেন। দরজায় লাগানো তালা ও কাছের একটি জানালার ছবি তোলেন তিনি।

পরে প্রাসাদে ইতালীয় শিল্পী মৌরিজিও কাতেলান তাঁর প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। সোনার কমোডের শিল্পকর্মটি তাঁরই তৈরি। অনুষ্ঠান থেকে অতিথিরা চলে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর চোর চক্রটি দুটি চুরি করা গাড়ি ব্যবহার করে প্রাসাদের গেট ভেঙে ঢুকে পড়ে। তারা একটি জানালা ভেঙে ফেলে এবং কমোডটি উপড়ে ফেলে বাইরে নিয়ে যায়। -বিবিসি