আল আমিন, বাবুগঞ্জ (বরিশাল) : আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনের তীব্রতায় বেড়িবাঁধ বিলিন হয়ে যাওয়া বিপাকে পরেছে কয়েক হাজার মানুষ। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের মীরগঞ্জ ফেরিঘাট থেকে ছোট মীরগঞ্জ হয়ে ময়দানের হাট পর্যন্ত প্রায় ৫ কি.মি. বেড়িবাঁধ টি গত বছরের নদী ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে যায়। ফলে বিপাকে পরেছে ৩ টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের রহমতপুর ইউনিয়নের সিংহেরকাঠী, লোহালিয়া গ্রাম ও চাঁদপাশা ইউনিয়নের রফিয়াদী গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইতিমধ্যে শতাধীক পরিবার অনত্র বাড়ি ঘর সরিয়ে নিয়েছেন।
গতকাল ওই এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, বেড়িবাধ(রাস্তা) না থাকায় শুকনোর সিজনে মানুষ বাড়িঘরের উঠান ও মাঠের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করছে। বর্ষাকালে চলাচলের জন্য সিংহেরকাঠী গ্রামের নদী পারে ৩শত মিটার একটি সাঁকো তৈরি করেছে গ্রামবাসী। ধারনা করা হচ্ছে আসছে বর্ষায় যাতায়াতে রিতীমত যুদ্ধ করতে হবে ওই এলাকার মানুষের। বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধ টি ছাড়া ওই এলাকার মানুষের যাতায়াতের জন্য বিকল্প কোন পথা নাই। ফলে বর্ষার কথা চিন্তা করেই কপালে ভাজ পরেছে তিন গ্রামের বাসিন্দাদের। স্থানীয় গৃহিনী ছনিয়া বেগম বলেন, আমার বাচ্চা নিয়ে এখন কোন মতে মানুষের বাড়ীর উপর,ঝোপঝাড় দিয়ে স্কুলে যাতায়ত করি। বর্ষার সিজনে আমাদের কোমর সমান পানি ডিঙিয়ে যাতায়ত করতে হবে। ভেরিবাদ বিলীন হয়ে যাওয়ায় বর্ষায় নদীর পানি বাড়ি-ঘরে প্রবেশ করে।
গত বছর রহমতপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ছোট মীরগঞ্জ বাজার নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় পার্শ্ববর্তী এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ বছর আবার বাজারটি ভাঙনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। জোয়ারের পানি নামা ও নদীর ¯্রােত বৃদ্ধি পেলেই ছোট মীরগঞ্জ বাজারটি আবারও ঝুঁকিতে পড়বে। স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল হোসেন পুতুল মেম্বার বলেন, বেড়িবাঁধ টি বিলীন হয়ে যাওয়াও বর্ষার সিজনে স্কুল,কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না। কেউ অসুস্থ হলে আমরা হাসপাতালে নিতে পারি না। বিষয়টি নিয়ে আমি ব্যাক্তিগতভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডে অনেকবার গিয়েছি। প্রতিবছর সংবাদ কর্মীরা এই এলাকার মানুষের দূর্দশা নিয়ে সংবাদ করলে এমার্জেন্সি বেসিস কিছু বস্তা ফেলে।
কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। এমার্জেন্সি বেসিস কাজ সব নদীগর্ভে, সরকারের টাকা ঠিকাদারের পকেটে। আমাদের কোন উপকারে আসে না। আমি জনগণের পক্ষ থেকে কোন ত্রান চাই না, চাই শুধু নদী ভাঙ্গনের স্থায়ী সমাধান। স্থানীয় মসজিদের ইমাম শামসুল হক ফকির বলেন, এই এলাকার সবার বাড়ী কয়েকবার ভাঙ্গলের কবলে পরেছে। এখন মাথাগোঁজার ঠাই নেই অনেকেরই। আমার নিজের ঘর সাতবার সরিয়েছি। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। আমি কতৃপক্ষের কাছে অতিন্দ্রত বেড়িবাঁধের। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, মীরগঞ্জ ফেরিঘাট থেকে ময়দানের হাট পর্যন্ত বেড়িবাঁধের জন্য প্রস্তাবনা মন্ত্রনালয়ে পাঠানো আছে। প্রস্তাবনা পাশ হলে কাজ করা হবে।
আরও পড়ুন
শিশু সোয়াইবের শরীরজুড়ে ছ্যাঁকা, হাতের নখ উপড়িয়ে করানো হতো ভিক্ষা
কমলগঞ্জে ভুট্টার বাম্পার ফলন সম্ভাবনা
আড়াই বছর ধরে বিএসএফের বাঁধায় কাজ বন্ধ, মনু পাড়ে বন্যা আতঙ্ক