ইসলাম ডেস্ক
বজ্রপাত ও বিদ্যুতের ঝলকানি আল্লাহ তাআলার কুদরতের নিদর্শন। তার অসীম শক্তি ও বড়ত্ব ও ক্ষমতার প্রকাশ। কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার এই বিস্ময়কর সৃষ্টির কথা বলেছেন। এগুলোকে তার অস্তিত্ব ও মহাশক্তির নিদর্শন প্রকাশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, তার পক্ষ থেকে ভয় ও আশার বার্তা বলেছেন, অন্য প্রসঙ্গে উদাহরণ দিতে গিয়েও এ দুই সৃষ্টির কথা বলেছেন।
১. আল্লাহর মহাশক্তি ও ক্ষমতার প্রকাশ
আল্লাহ তাআলার হুকুমেই মেঘ গর্জে ওঠে, বিদ্যুৎ চমকায় ও বজ্রপাত হয়। এগুলো তার মহাশক্তি ও ক্ষমতার প্রকাশ। আল্লাহ তাআলা বলেন,
هُوَ الَّذِي يُرِيكُمُ الْبَرْقَ خَوْفًا وَطَمَعًا وَيُنْشِئُ السَّحَابَ الثِّقَالَ وَيُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ وَيُرْسِلُ الصَّوَاعِقَ فَيُصِيبُ بِهَا مَن يَشَاءُ وَهُمْ يُجَادِلُونَ فِي اللَّهِ وَهُوَ شَدِيدُ الْمِحَالِ
তিনিই ভয় ও আশা সঞ্চার করার জন্য তোমাদের বিদ্যুৎ চমক দেখান এবং তিনি ঘন মেঘ সৃষ্টি করেন। আর বজ্র তার সপ্রশংস তাসবিহ পাঠ করে এবং ফেরেশতারাও তার ভয়ে। আর তিনি গর্জনকারী বজ্র পাঠান। তারপর যাকে ইচ্ছা তা দ্বারা আঘাত করেন এবং তারা আল্লাহ সম্বন্ধে ঝগড়া করতে থাকে। আর তিনি শক্তিতে প্রবল, শাস্তিতে কঠোর। (সুরা রা’দ: ১২, ১৩)
২. আল্লাহর পক্ষ থেকে আশার বার্তা
বিদ্যুৎ চমক আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আশার বার্তাও বটে। যেহেতু সাধারণ বৃষ্টির আগে ও বৃষ্টির সময় বিদ্যুৎ চমকায়। বৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা মৃত ভূমিকে জীবন দান করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَمِنْ آيَاتِهِ يُرِيكُمُ الْبَرْقَ خَوْفًا وَطَمَعًا وَيُنَزِّلُ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَيُحْيِي بِهِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে তিনি তোমাদেরকে ভয় ও ভরসাস্বরূপ বিদ্যুৎ দেখান, আর আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর তা দ্বারা জমিনকে তার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য যারা অনুধাবন করে। (সুরা রূম: ২৪)
৩. আল্লাহ তাআলার বিস্ময়কর ও অপরূপ সৃষ্টি
মেঘ, বৃষ্টি ও বিদ্যুৎ চমক আল্লাহ তাআলার বিস্ময়কর ও অপরূপ সৃষ্টি। আল্লাহ তাআলা বলেন,
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يُزْجِي سَحَابًا ثُمَّ يُؤَلِّفُ بَيْنَهُ ثُمَّ يَجْعَلُهُ رُكَامًا فَتَرَى الْوَدْقَ يَخْرُجُ مِنْ خِلَالِهِ وَيُنَزِّلُ مِنَ السَّمَاءِ مِن جِبَالٍ فِيهَا مِن بَرَدٍ فَيُصِيبُ بِهِ مَن يَشَاءُ وَيَصْرِفُهُ عَن مَّن يَشَاءُ يَكَادُ سَنَا بَرْقِهِ يَذْهَبُ بِالْأَبْصَارِ
তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহ মেঘমালাকে পরিচালিত করেন, তারপর তিনি সেগুলোকে একত্রে জুড়ে দেন, তারপর সেগুলো স্তুপীকৃত করেন, তারপর তুমি দেখতে পাও তার মধ্য থেকে বৃষ্টির ধারা বের হয়। আর তিনি আকাশে স্থিত মেঘমালার পাহাড় থেকে শিলা বর্ষণ করেন। তারপর তা দ্বারা যাকে ইচ্ছা আঘাত করেন। আর যার কাছ থেকে ইচ্ছা তা সরিয়ে দেন। এর বিদ্যুতের ঝলক দৃষ্টিশক্তি প্রায় কেড়ে নেয়। (সুরা নুর: ৪৩)
৪. মুনাফিকদের দ্বিধান্বিত অবস্থার উদাহরণ
ইমানের ব্যাপারে মুনাফিকদের দ্বিধান্বিত অবস্থাকে আল্লাহ তাআলা বর্ষণের রাতে বজ্রধ্বনি ও বিদ্যুত চমকের কবলে পড়া পথিকের অবস্থার সাথে তুলনা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
أَوْ كَصَيِّبٍ مِّنَ السَّمَاءِ فِيهِ ظُلُمَاتٌ وَرَعْدٌ وَبَرْقٌ يَجْعَلُونَ أَصَابِعَهُمْ فِي آذَانِهِم مِّنَ الصَّوَاعِقِ حَذَرَ الْمَوْتِ ۚ وَاللَّهُ مُحِيطٌ بِالْكَافِرِينَ. يَكَادُ الْبَرْقُ يَخْطَفُ أَبْصَارَهُمْ ۖ كُلَّمَا أَضَاءَ لَهُم مَّشَوْا فِيهِ وَإِذَا أَظْلَمَ عَلَيْهِمْ قَامُوا ۚ وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَذَهَبَ بِسَمْعِهِمْ وَأَبْصَارِهِمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
কিংবা আকাশের বর্ষণমুখর মেঘের ন্যায়, যাতে রয়েছে ঘন অন্ধকার, বজ্রধ্বনি ও বিদ্যুৎচমক। বজ্রের গর্জনে তারা মৃত্যুর ভয়ে তাদের কানে আঙুল দিয়ে রাখে। আর আল্লাহ কাফেরদের পরিবেষ্টন করে আছেন। বিদ্যুৎচমক তাদের দৃষ্টি কেড়ে নেওয়ার উপক্রম হয়। যখনই তা তাদের জন্য আলো দেয়, তারা তাতে চলতে থাকে। আর যখন তা তাদের ওপর অন্ধকার করে দেয়, তারা দাঁড়িয়ে পড়ে। আর আল্লাহ যদি চাইতেন, অবশ্যই তাদের শ্রবণ ও চোখসমূহ নিয়ে নিতেন। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। (সুরা বাকারা: ১৯, ২০)
আরও পড়ুন
হজের সময় সাদা বোরকা পরিধান করা কি জরুরি?
এমপিও শিক্ষকদের বদলি শুরু অক্টোবরে
সকালে ডাবের পানি পানের চমকপ্রদ সব উপকারিতা