গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের গঙ্গাচড়ায় স্বামী ও বাবার বিরুদ্ধে নির্যাতনসহ মিথ্যা মামলায় হয়রানি ও হত্যার হুমকি থেকে রক্ষা পেতে নিরুপায় হয়ে স্ত্রী ও মেয়েরা সংবাদ সম্মেলন করেছে। সোমবার সকাল ১১ টায় গঙ্গাচড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, গঙ্গাচড়া মেডিকেল গেট এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেন ৪২ বছর আগে হামিদা আক্তারকে বিবাহ করে। হামিদা আক্তারে গর্ভে ১ সন্তান ও ৩ মেয়ে জন্ম নেওয়ার পর ১ম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই জাহাঙ্গীর হোসেন ২য় বিবাহ করেন। ২য় স্ত্রী আলেয়া বেগমের গর্ভেও ১ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। জাহাঙ্গীর হোসেন প্রথম দিকে দুই সংসারের সুখের কথা চিন্তা করে মেডিকেল গেট এলাকার বাড়িসহ বসতভিটার সাড়ে ১১ শতক জমি ১ম স্ত্রী হামিদাকে হেবা দলিল করে দেয়। এরপর জাহাঙ্গীর হোসেন গঙ্গাচড়া মুন্সিপাড়ায় ২য় আলেয়াকেও জমি দলিল দিয়ে ২য় স্ত্রী সন্তান নিয়ে সেখানে বসবাস করতে থাকেন। ১ম স্ত্রীর সন্তান ইউসুফ আলী বাপ্পী তার মা ও ছোট ৩ বোনকে নিয়ে সংসার চালিয়ে আসে এবং নিজে খরচ বহন করে ৩ বোনকে বিবাহ দেয়। ২০১৯ সালে কিডনি জনিত সমস্যায় ইউসুফ আলী বাপ্পী মারা গেলে জাহাঙ্গীর হোসেন ছেলে ইউসুফ আলী বাপ্পীর ক্রয়কৃত ৩০ শতক জমি ২য় স্ত্রী আলেয়াকে দলিল করে দেয় এবং ২য় স্ত্রী সন্তানদের সহযোগীতায় জাহাঙ্গীর ১ম স্ত্রী হামিদাকে বাড়িসহ দলিল দেওয়া জমি ফেরত চেয়ে চাপ দেয়। হামিদা জমি ফেরত দিতে অপারগতা প্রকাশ করিলে হামিদাসহ তার মেয়েদের ওপর চালাতে থাকে জাহাঙ্গীর ও তার ২য় স্ত্রী সন্তানরা অমানবিক নির্যাতন। উপায় না পেয়ে হামিদা বেগম তার ৩ মেয়েকে ১০ শতক জমি দলিল দেয় এবং দেড় শতক জমি কবরস্থানের জন্য রাখে। এটা জানার পর জাহাঙ্গীর ও তার ২য় স্ত্রী সন্তানরা আরো নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। নির্যাতনের যন্ত্রণা সহ্য করেও জমি ফেরত না দিলে জাহাঙ্গীর জমি ফেরতের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করে। সে মামলায় রায়ে জাহাঙ্গীর সফল হয়না।
তখন সে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা মামলা করে ১ম স্ত্রী ও সন্তানদের হয়রানি করে আসছে। এছাড়া গত ছয় আগে অত্যাচার মারিপট করার কারনে ১ম স্ত্রীর ২য় সন্তান রুজিনা পারভীনের গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়। রুজিনা পারভীন তার গর্ভের সন্তান নষ্টের জন্য পিতা জাহাঙ্গীর ও সৎ মা ভাইবোনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এতে আরো ক্ষীপ্ত হয়ে আরো নির্যাতন ও হত্যার হুমকি দিচ্ছে। নিরুপায় হয়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগী চেয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন ও তার ২য় স্ত্রী সন্তানের নির্যাতন ও হত্যার হুমকি থেকে রক্ষা পেতে সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানায়। হামিদা আক্তার জানান, স্বামী এমন অমানুষ হয়েছে যে, ভুলেগেছে তার আমি ১ম স্ত্রী ও ৩ মেয়েও তার সন্তান। আমাদের দেখাশুনার তার দায়িত্ব। কিন্তু তা না করে ২য় স্ত্রী ও সন্তানের দেখাশুনা করে এবং তাদের কথামত নানাভাবে অন্যায় অত্যাচার ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। কোন উপায় না পেয়ে বাধ্যহয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে হয়। সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর হোসেন ১ম স্ত্রী হামিদা আক্তার, ৩ মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসী, রুজিনা পারভীন ও মমতাজ বেগম উপস্থিত ছিলেন। তাদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রুজিনা পারভীন।
আরও পড়ুন
খুলনায় প্রেস সচিবকে আটকে রেখেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ও এনসিপির নেতা কর্মীরা
খুলনার উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষ দৃষ্টি আছে: প্রেস সচিব
কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ