মাসুম বিল্লাহ ইমরান, খুলনা ব্যুরো: খুলনা ওয়াসার ঠিকাদারি কাজ, উৎপাদন, নলকুপ-স্থাপন, অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে নিকট আত্মীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ভাগিয়ে দিতেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম। তিনি তিনটি প্রজেক্ট এর পরিচালক ছিলেন। এ বিষয়ে তিনদফা অভিযোগ করেও কোন সমাধান পাননি মেসার্স মইনুল হক মিঠু নামের প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধীকারি।
মইনুল হক মিঠুর অভিযোগগে যানাযায়, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে তিনি প্রথম অভিযোগ করেন খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর। ২০২০ সালের মার্চ মাসের তিন তারিখে বিল পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদেশ প্রদান করে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি । যেখানে নগরীর ওয়াসার কয়েক কোটি টাকা অপচয় হয়েছে। সাব মারসিবল পানির পাম্প ও মটর মেরামতের নামে মো. রেজাউল ইসলাম দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীদের সহযোগিতায় অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
মইনুল হক মিঠু বলেন, প্রজেক্ট ডাইরেক্টর থাকা অবস্থা খুলনা ওয়াসার ঠিকাদারি কাজ, উৎপাদন, নলকুপ ¯স্থাপন, অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে নিকট আত্মীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ভাগিয়ে দেওয়াসহ প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করার মূল উদ্দেশ্য ছিলো তার। ইতিপূর্বে ওই তিনটি প্রজেক্টের চরম অযোগ্যতা, অদক্ষতা অতি নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করার কারণে প্রজেক্টগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় পানির পাম্পগুলো ইতিপূর্বে বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমার কাছ থেকে কাজ বাবদ সাড়ে ৫ লাখ টাকা কমিশন বাবদ অগ্রীম গ্রহণ করেছিলেন মো. রেজাউল ইসলাম। বিগত দিনের ফ্যাসিবাদের দোসর খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ জুয়েলের সাথে সমন্বয় করে খুলনা ওয়াসার কয়েক কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন। যেটা তদন্ত করলে সঠিক বিষয়টি সামনে আসবে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি তার নিয়ন্ত্রণাধীন জোনগুলোতে প্রায় ৩০০০ মিটার চুরি হয়ে গেছে যার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। অথচ তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। তার নিয়ন্ত্রণে পুরাতন প্রায় শতাধিক পুরাতন পানির পাম্পের মালামালের কোন সঠিক তথ্য নাই। নির্বাহী প্রকৌশলী নিয়োগ বিধি অনুযায়ী তার পানির উপরে প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা না থাকলেও চাকুররি বিধি লঙ্ঘন করে তাকে সরাসরি নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
আরও উল্লেখ থাকে যে, তার বিরুদ্ধে গত ২০২৪সালের ১৭ অক্টোবর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক দুর্নীতির তদন্ত কমিটি গঠন করলেও সেটি এখনও আলোর মুখ দেখেনি। এছাড়া মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির তদন্ত প্রতিবেদন ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা সে করে যাচ্ছে।
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব এড. মোঃ বাবুল হাওলাদার বলেন, অস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, খুলনা ওয়াসার সচিব নিজেই ওয়াসায় বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের নেতাদের প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছেন। তা’ না হলে তিনি নিজে যেখানে তদন্ত কমিটির আহবায়ক সেটিকে গোপন রেখে কিভাবে আবারো তাকে প্রমশনের ব্যাবস্থা করার জন্য তোড়জোড় করছে সেটি অবশ্যই তদন্তের দাবি রাখে। এভাবে একের পর এক দুর্নীতিপরায়নদের ছাড় দেওয়া হলে দুর্নীতি না কমে বরং বেড়েই যাবে। যেটি জুলাই বিপ্লবের বিরুদ্ধের কাজ হবে বলেও তিনি মনে করেন।
এ বিষয়ে খুলনা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম জানান, তিনিতো অনেক অভিযোগ করেন। কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা সেটা দেখার বিষয়। আমি ২০১০ সাল থেকে খুলনা ওয়াসায় কাজ করে যাচ্ছি। তার সাথে কোন লেনদেনের ঘটনা ঘটেনি। অভিযোগ দিয়েছে, তদন্ত হবে, অভিযুক্ত হলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন
মোংলা বন্দরে জাহাজ থেকে চুরি করা মালামালসহ তিনজন আটক
এই অ্যাওয়ার্ড শুধু স্বীকৃতি নয়, সকলের জন্য অনুপ্রেরণা : উপাচার্য
কালীগঞ্জে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে ড্রাগন ফল