June 28, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, June 26th, 2025, 5:43 pm

দক্ষিণ সুরমায় প্রভাবশালী উপ সচিব ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ

সিলেট অফিস:
সিলেটের মোগলাবাজারে প্রভাবশালী উপ সচিব ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে নানা হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি জেলার দক্ষিণ সুরমার মোগলা বাজারের সতীঘর গ্রামের বাসিন্দা শাহ রুম্মানুল হকের পরিবারকে ঘায়েল করতে নানা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অত্যাচারে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পুরো পরিবার।
তাদের এই সব মিথ্যা মামলা মোকদ্দমা ও হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে তার বড় ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী শাহ এনামুল হক বাংলাদেশ হাই কমিশনার, যুক্তরাজ্য বরাবরে একটি আবেদন প্রেরন করেছেন। দেশে অবস্থানরত ভাই শাহ রুম্মানুল হক সাংবাদিক সম্মেলন করে পুরো বিষয়টি দেশবাসীকে অবগত করেছেন।
অভিযুক্ত প্রভাবশালী এই কর্মকর্তার নাম মো. আব্দুল ওয়াহাব রাশেদ। বর্তমানে তিনি নরসিংদী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। তিনি
ও তার লোকজন ইতিপূর্বে তাদের ৪৫ শতাংশ ফসলি জমি জোরপূর্বক দখল করেছে। পরবর্তীতে তার বসত ভিটা দখলের পাঁয়তারা করলে শাহ রুম্মানুল হক আদালতে একটি স্বত্ব মোকদ্দমা দায়ের করেন। উপসচিব আব্দুল ওয়াহাব রাশেদসহ ৮ জনকে বিবাদী করা বিচারাধীন রয়েছে মোকদ্দমাটি। গত ৮ মার্চ আব্দুল ওয়াহাব রাশেদ ও তার ভাই আব্দুল ওয়াদুদ শাহেদের উপস্থিতে তাদেরই চাচাতো ভাই ‘সন্ত্রাসী’ আবুল কাশেম নাহিদ, হারুন মিয়া, ভাতিজা মারুফ আহমদ, মুমিন মিয়া, আল-আমিন, মারওয়ান আহমদ, চাচাতো বোন বাবনা বেগম, লিপি বেগম, চাচাতো ভাইর স্ত্রী মাছুমা বেগম দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার বসত ঘরে আক্রমণ করে। এ সময় তারা তাকেসহ তার স্ত্রী ও বৃদ্ধা মাকে মারধর করে এবং ঘর থেকে নগদ ১ লক্ষ টাকা, ৬ ভরি স্বর্ণ, বিএস মূল নকশাসহ প্রয়োজনীয় দলিল পত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় স্বত্ব মোকদ্দমা তুলে জায়গা জমি তাদের দখলে না দিলে বসত ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। ৯৯৯-এ কল করলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মোগলা বাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় পরদিন ৯ মার্চ ওই চক্রটি তার সুপারি বাগানে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে।
এ ব্যাপারে এসএমপির মোগলাবাজার থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা করেন শাহ রুম্মানুল হক। মামলা দায়ের করতে গেলে আব্দুল ওয়াহাব রাশেদ তার প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে থানা পুলিশকে চাপ দিলে থানার অফিসার ইনচার্জ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান।
পরবর্তীতে মামলা দায়ের করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্টেট ৩য় আদালতে তিনি। কিন্তু রাশেদ অবৈধ টাকা ও সন্ত্রাসী দিয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বাক্ষী না দিতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
আব্দুল ওয়াহাব রাশেদ ও আব্দুল ওয়াদুদ শাহেদের নির্দেশে তাদের লোকজন বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলা মোকদ্দমা দিয়ে তাদের হয়রানি করে যাচ্ছে । পরবর্তীতে আদালতে এসব মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
শুধু তাই নয়, এ পরিবারকে ঘায়েল করতে রাশেদের পিতা আব্দুল মান্নান শাহ রুম্মানুল হকের পিতা মাওলানা শফিকুল বারীর বিরুদ্ধে গ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করেছেন, যা তদন্ত শেষে মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাশেদের চাচা আব্দুল হান্নান দিলু মিয়া শাহ রুম্মানুল হককে হয়রানি করতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪/০৯/২০১০ তারিখে একটি মামলা দায়ের করেন, যা উপযুক্ত প্রমানাদি না থাকায় আদালত রুম্মানকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
বিগত ১৮ মে ২০১৬ তারিখে প্রভাবশালী রাশেদের নির্দেশে তার ফুফাতো ভাই কামাল আহমদ ও মোগলাবাজার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগ থেকে ও রুম্মান অব্যাহতি পান।
একই ভাবে রাশেদের ভাতিজা মারুফ আহমদ  ও রুমানুল হকের বিরুদ্ধে মোগলাবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করে সেটা থেকে ও রুম্মানুল খারিজ হোন।
প্রভাবশালী আব্দুল ওয়াহাব রাশেদ ও আব্দুল ওয়াদুদ শাহেদের লোকজন রেলওয়ের জমি দখল করে শ্রেণী পরিবর্তন করে নিজ জমির সাথে একত্রিত করে এবং রেলওয়ে জমির উপর পাকা রাস্তা তৈরি করে।
আলাপকালে শাহ এনামুল হক বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত আমার ছোটভাই সহ আমার পরিবারকে ঘায়েল করতে রাশেদের নানামুখী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এমতাবস্হায় তিনি তার পরিবারের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ রাশেদের সীমাহীন দূর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ সব ধরনের অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান ।