July 23, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, July 22nd, 2025, 8:50 pm

চোখের জলে শেষবিদায়, পাইলট তৌকিরের দাফন সম্পন্ন

ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকালে রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নগরীর সপুরা কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় অংশ নেন হাজারও মানুষ।

দুপুর থেকে রাজশাহীর উপশহরে তৌকিরের বাড়িতে এলাকাবাসীরা ভিড় করেন। স্নেহের তৌকিরকে শেষবারের মতো দেখতে আসেন তারা। বিকাল সাড়ে ৩টায় তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছায়। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী জেলা স্টেডিয়ামে। বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় নামাজে জানাজা। জানাজায় তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম সবার কাছে ছেলের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন। এসময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় তৌকিরের সহকর্মী হাসনাইন তৌকিরের জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন।

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর সাবেক মেয়র ও কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান সহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, স্বজন ও এলাকাবাসী।

পরে বিকাল পৌনে ৫টায় রাষ্ট্রীয় সম্মাননার মধ্য দিয়ে তাকে সপুরা কবরস্থানে দাফন করা হয়।

২০১০ সালে পাবনা ক্যাডেট কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন তৌকির। ২০১৬ সালে তিনি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগ দেন এবং দক্ষ পাইলট হিসেবে ক্যারিয়ার গড়েন। এ বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি আকসা হোসেন নিঝুমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তার স্ত্রী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম একজন ব্যবসায়ী, মা সালেহা খাতুন গৃহিণী এবং একমাত্র বোন তাসনিয়া ইসলাম সৃষ্টি রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী।

পাবনা ক্যাডেট কলেজের উপাধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম বলেন, সে খুবই মেধাবী ছাত্র ছিল। অনেক শান্তশিষ্ট স্বভাবের ছিল তৌকির। শিক্ষকদের খুবই সম্মান করতো। কলেজের সাংস্কৃতিক সব অনুষ্ঠানে সে মনিটরিং করতো। সে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উৎফুল্লভাবে অংশগ্রহণ করতো।

পাবনা ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও তৌকিরের জুনিয়র মেহেদী হাসান নূর বলেন, আমার দেখা ক্যাডেট কলেজের ফাইনেস্ট ক্যাডেট ছিলেন তৌকির ভাই। বেশিরভাগ সময়েই ভাইকে হাসিমুখেই দেখতাম। তিনি ছিলেন ৩৩ ব্যাচে আর আমরা ছিলাম ৩৬ তম ব্যাচের। তৌকির ভাই ছিলেন কলেজ কালচারাল প্রিফেক্ট। তার গুণাবলি বলে শেষ করা যাবে না। পড়ালেখা, কালচারাল সাইড, গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস সব দিক থেকেই স্বয়ংসম্পূর্ণ। এক কথায় তিনি ছিলেন অলরাউন্ডার ক্যাডেট।

তৌকিরের চাচা সাদিকুল ইসলাম বলেন, তৌকিরকে পরিবার ও এলাকার সবাই খুব ভালোবাসতো। সে সবাইকে সম্মান করতো। তার মতো ভালো ছেলেকে হারানোর বেদনা আমাদের সারাজীবন তাড়া করে বেড়াবে।