July 23, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, July 22nd, 2025, 11:56 pm

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

 

জয়ের জন্য শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। তাদের হাতে ছিল এক উইকেট। মুস্তাফিজের করা ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সমীকরণ সহজ করেন দানিয়েল। পরের বলেও উড়িয়ে মেরেছিলেন এই ব্যাটার, তবে এবার বল যায় সরাসরি মিডউইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা শামীমের হাতে। তাতে ৮ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে একাধিক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মিরপুরে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে খেলতে নেমে ১৯ ওভার ২ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৫ রানের বেশি করতে পারেনি পাকিস্তান।

নতুন বলে আরো একবার শেখ মেহেদির ওপর ভরসা রাখেন লিটন। ইনিংসের প্রথম ওভার করতে এসে ভালো লাইন-লেংথে বোলিং করেছেন তিনি। তার ওভারেই উইকেটের দেখাও পেয়েছে দল। ওভারের শেষ বলে রান আউটের শিকার হয়েছেন সায়িম আইয়ুব।

এক প্রান্তে স্পিন দিয়ে শুরু করলেও আরেক প্রান্তে পেস আক্রমণে যান লিটন। নতুন বল তুলে দেন শরিফুলের হাতে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে ব্রেকথ্রু দিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার। লেগ বিফোরের শিকার হয়েছেন গোল্ডেন ডাক খাওয়া মোহাম্মদ হারিস। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অভিজ্ঞ ফখর জামানও। লিটনের ক্যাচ বানিয়ে এই ওপেনারকে ফিরিয়েছেন শরিফুল। সাজঘরে ফেরার আগে ৮ বলে ৮ রান করেছেন ফখর।

ইনিংসের পঞ্চম ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে আসেন তানজিম সাকিব। আক্রমণে এসেই উইকেট পার্টিতে যোগ দেন এই পেসার। তৃতীয় বলটি খানিকটা খাটো লেংথে করেছিলেন সাকিব, অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বের হয়ে যাওয়া বলে আউট সাইড এজে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন হাসান নাওয়াজ। পরের বলেই ফিরেছেন মোহাম্মদ নাওয়াজও। তাতে ১৫ রানে ৫ উইকেট হারায় পাকিস্তান।

দলের এমন বিপদে হাল ধরার চেষ্টা করেন সালমান আলি আগা। তবে অধিনায়ক উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। উল্টো প্রচুর ডট খেলে দলের চাপ বাড়িয়েছেন। ২৩ বলে ৯ রান করা এই ব্যাটারকে দশক ওভারে ফিরিয়েছেন মেহেদি। সালমানের পথেই হেঁটেছেন খুশদিল শাহও।

দলীয় ফিফটির আগে ৭ উইকেট হারানো পাকিস্তানকে লড়াইয়ে ফেরান ফাহিম আশরাফ ও আব্বাস আফ্রিদি। দুজনে মিলে অষ্টম উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৪১ রান। ১৩ বলে ১৯ রান করেন আব্বাস। এরপর আহমেদ দানিয়েলকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছেন ফাহিম। ১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ফাহিমের ব্যাট থেকে এসেছে ৩২ বলে ৫১ রান।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পায়নি বাংলাদেশ। ইনফর্ম তানজিদ তামিমকে বিশ্রাম দিয়ে আজ সুযোগ দেওয়া হয়েছিল নাঈম শেখকে। তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না এই ওপেনার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ফাহিম আশরাফকে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ৭ বল খেলে ৩ রান করেছেন নাঈম।

তিনে নেমে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন লিটন। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক। রানের গতি বাড়াতে গিয়ে বড় শট খেলার চেষ্টা করেন। তাতেই যেন বিপদ ডেকে আনেন। সালমান মির্জাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন তিনি।

ব্যর্থ হয়েছেন তাওহিদ হৃদয়ও। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে রান আউটে কাটা পড়েন তিনি। পারভেজ ইমনের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রানের খাতা খুলার আগেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। হৃদয়ের আউটে কিছুটা হলেও দায় ছিল ইমনের, তাই বাড়তি দায়িত্ব ছিল তার ওপর। কিন্তু উল্টো দলের চাপ বাড়িয়ে পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ইমন। ১৪ বলে ১৩ রান করেছেন তিনি।

২৮ রানে চার উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলেন শেখ মেহেদি ও জাকের আলি। বিশেষ করে শেখ মেহেদি দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ধীরগতির ব্যাটিংয়ের জন্য সমালচিত হওয়া এই ব্যাটার আজ দারুণ ব্যাটিং করেছেন। ২৫ বলে ৩৩ রান করে মেহেদি ফিরলে ভাঙে ৫৩ রানের জুটি।

এরপরস শামীম হোসেন, তানজিম সাকিব ও রিশাদ হোসেনরা দ্রুত ফিরলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে দারুণ ব্যাটিং করেছেন জাকের। ৪৬ বলে স্পর্শ করেছেন ব্যক্তিগত ফিফটি। সবমিলিয়ে ৪৮ বলে করেছেন ৫৫ রান।