গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ফেসবুকে নবীজি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিমূলক ও ইসলাম ধর্ম অবমাননাকর পোষ্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে আলোচনা সমালোচনার ঝর উঠে। ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে ইসলাম ধর্ম ও নবীজিকে নিয়ে কটূক্তিকারী রঞ্জন রায় (১৭) কে শনিবার রাতে বেতগাড়ী এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। আটক রঞ্জন রায় উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাদপুর ছয়আনি এলাকার বাসিন্দা সুজন কুমারের ছেলে। রঞ্জন রায়ন রংপুরের একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, “রঞ্জন রায় এলআরএম” নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে কয়েকদিন ধরে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন একাধিক পোস্ট করে প্রচারণা চালায়। বিষয়টি এলাকার লোকজন দেখতে পেয়ে ক্ষোভে উঠে এবং থানা পুলিশকে জানালে, গঙ্গাচড়া মডেল থানার একটি বিশেষ টিম তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাকে শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে বেতগাড়ী এলাকা থেকে আটক করে। এদিকে উত্তেজিত জনতা ক্ষীপ্ত হয়ে ওই রাতেই রঞ্জন রায়ের বাড়ি মনে করে তার পাশের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি শান্ত করে। এর পরের দিন রোববার রঞ্জন রায়ের ফাঁসির দাবিতে কিশোরগঞ্জ উপজেলার সিংগের গাড়ী এলাকার জনতা মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে আবারও কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। যাদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয় তারা হলো আসু রায়, সুবল রায়, প্রশান্ত রায়, অতুল চন্দ্র, ধনন চন্দ্র, ধরনি মহন্ত, পঞ্চানন মহন্ত, লিটন মহন্ত, অবিনাশ চন্দ্র, লাল মোহন চন্দ্র, হরিদাস চন্দ্র, রাবিন্দ্র চন্দ্র, কৃষব চন্দ্র, মনোরঞ্জন শীল। অপরদিকে অপৃতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বর্তমানে সেখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনাস্থল সেনাবাহিনী ও পুলিশের উদ্ধর্তন পরিদর্শন করে সবাইকে শান্ত থাকার আহবান জানান। এছাড়া বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দ সেনাবাহিনী ও পুলিশের পাশে থেকে মানুষজনকে শান্ত করছে। গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আল এমরান জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য ও কটূক্তির অভিযোগে রঞ্জন রায়কে আটক করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা দায়ের পুর্বক আদালতের মাধ্যমে শিশু পূর্ণবাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া রঞ্জন রায়ের এলাকায় আর যেন কোন রকম অপৃতিকর ঘটনার সৃষ্টি না হয় সেজন্য সেখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অন্যদিকে উত্তেজিত জনতা কর্তৃক বাড়ি ঘর ভাঙচুর হওয়া পরিবারগুলো আতঙ্কে তাদের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। সরজমিন সোমবার ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যায়, সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন জানান, পরিস্থিতি এখন ভাল আছে। তবে ভয় অনেকের কাটেনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, ঘটনাস্থলে প্রতিদিন গিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেই এবং উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে সেখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা নেওয়া হয়েছে তাদের সহায়তা দেওয়া হবে। তিনি আইনশৃঙ্খলার অবনতি না ঘটিয়ে প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করেন।
আব্দুল বারী স্বপন
আরও পড়ুন
ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভোটার সমাবেশ ও গণসংযোগ
বড়লেখা সীমান্তে বিএসএফের পুশইনকৃত ২০ রোহিঙ্গাসহ আটক-২১
মুছাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের গেইটে হাঁস মুরগি হাট: শিক্ষক,শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে