বিশ্বে তৈরি পোশাকের বাজারে চীন শীর্ষ অবস্থানে থাকলেও রফতানি নির্ভরতার দিক থেকে বাংলাদেশ সবচেয়ে এগিয়ে আছে।
২০২৪ সালে বাংলাদেশ ৩৮.৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক রফতানি করেছে, যা বিশ্বের মোট বাজারের ৬.৯০ শতাংশ। বিশ্ববাজারে এ খাতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়, চীনের পরে এবং ভিয়েতনামের আগে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) ও বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের (বিএই) সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্ব পোশাক বাজারের মোট মূল্য ২০২৪ সালে দাঁড়িয়েছে ৫৫৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এর মধ্যে এককভাবে চীন ১৬৫.২৪ বিলিয়ন ডলার রফতানি করে ২৯.৬৪ শতাংশ বাজার দখলে রেখেছে।
চীনের পরে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও একটি বড় পার্থক্য হলো— বাংলাদেশের মোট রফতানির ৮৬.২০ শতাংশই তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে। অপরদিকে চীনের মোট রফতানিতে পোশাকের অবদান মাত্র ৪.৩০ শতাংশ।
বাংলাদেশের মতো কম্বোডিয়াও এ খাতের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, যেখানে মোট রফতানির ৩৬.৭০ শতাংশ আসে পোশাক থেকে। পাকিস্তানে এ হার ২৬.৮০ শতাংশ, ভিয়েতনামে ৭.৬০ শতাংশ, ভারতে ২.২০ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ২.৩০ শতাংশ।
অপরদিকে ভিয়েতনাম ৩৩.৯৪ বিলিয়ন ডলারের রফতানির মাধ্যমে বাজারের ৬.০৯ শতাংশ এবং ভারতের ১৬.৩৬ বিলিয়ন ডলার রফতানি বিশ্ববাজারে তাদের ২.৯৪ শতাংশ অংশীদারত্ব নিশ্চিত করেছে।
পোশাক খাতে রফতানি নির্ভরতায় বাংলাদেশের পরে রয়েছে কম্বোডিয়া (৩৬.৭০ শতাংশ), পাকিস্তান (২৬.৮০ শতাংশ), ভিয়েতনাম (৭.৬০ শতাংশ), ইন্দোনেশিয়া (২.৩০ শতাংশ) এবং ভারত (২.২০ শতাংশ)।
যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের ‘পাল্টা শুল্কনীতি’ চালু করায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ দেশ তাদের রফতানি বাণিজ্যে শুল্ক চাপে পড়েছে। তবে এ পরিস্থিতিতেও যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক বাজারে কিছু দেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ তুলনামূলক চীনের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ‘পাল্টা শুল্ক নীতিতে ইন্দোনেশিয়া, ভারত ও ভিয়েতনাম শুল্কহার ও বাজার প্রবেশের দিক থেকে তুলনামূলক ভালো অবস্থানে থাকলেও বাংলাদেশ রয়েছে মধ্যম স্তরে।
বাংলাদেশের ওপর মোট শুল্কহার এখন দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক ৫ থেকে ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ। গড়পড়তা শুল্ক বাড়লেও চীনের তুলনায় এটি এখনও প্রতিযোগিতামূলক। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহার করা পোশাকের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কছাড় পাওয়ার সুযোগ থাকায় বাংলাদেশের জন্য তা কিছুটা স্বস্তির বার্তা বহন করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্ক পরিবর্তনের ফলে বিশ্ব পোশাক বাজারে নতুন করে হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য এখন সময় হয়েছে বাজার বৈচিত্র্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বিকল্প গন্তব্যে রফতানি বাড়ানোর।
এনএনবাংলা/আরএম
আরও পড়ুন
আগামীকাল ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা
আটাবের কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ
ভারতীয় ভিসা বন্ধে কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশে’ বছরে ক্ষতি ১ হাজার কোটি রুপি