টানা বৈরী আবহাওয়া এবং সমুদ্রে পর্যাপ্ত মাছ না পাওয়ায় হতাশায় ডুবে ছিলো জেলে, ট্রলার মালিক ও আড়ৎদাররা। কিন্তু গতকাল বুধবার থেকে হঠাৎ করে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়তে শুরু করে সমুদ্রের কাঁচা সোনা ইলিশ মাছ। দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তর মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুরের ঘাটগুলোতে অধিকাংশ ট্রলারেই দেখা গেছে ইলিশের। এরই মধ্যে একটি ট্রলার ৬০ মণ ইলিশ নিয়ে এসেছে ঘাটে। ঘাটে আসার সঙ্গে সঙ্গে মাছগুলো সাড়ে ৩৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এতে পুরো জেলে পল্লী ও মৎস্য বন্দরে আনন্দ নেমে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) উপকূলের বৃহত্তর মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর ও কুয়াকাটার বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, বাজারগুলো ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছে ভরে গেছে। হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি চলছে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ। মৎস্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, হঠাৎ করে এতো মাছ পাওয়ায় আনন্দিত মৎস্য পেশা সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসায়ী ও জেলেরা।
কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের পায়রা বন্দর সংলগ্ন এলাকায় জাহাঙ্গীর মাঝি জাল ফেলতেই ধরা পড়লো ৬০ মণ ইলিশ। বঙ্গোপসাগরের পায়রা বন্দরের শেষ বয়ায় এসব মাছ ধরা পড়ে। দীর্ঘদিন পরে এমন মাছ পেয়ে উচ্ছ্বসিত জেলেরা। আলীপুর মৎস্য বন্দরে ফিসে এসব মাছ নিলামের মাধ্যমে সাড়ে ৩৫ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়। গত চারদিন আগে এফবি জামাল নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার ১৮ জন জেলে নিয়ে গভীর সমুদ্রে যাত্রা করেন।
এফবি জামাল ট্রলারের মাঝি জাহাঙ্গীর হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা ৪ দিন আগে ১৮ জন জেলেসহ সাগরে গিয়েছিলাম। দুদিন ফিশিং করার পর বুধবার সন্ধ্যায় ৮ হাজার ইলিশ নিয়ে ঘাটে এসেছি। আলীপুর মনি ফিস মৎস্য আড়তে সাড়ে ৩৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে মাছগুলো। বর্তমানে তুলনামূলক সমুদ্রে ভালো মাছ ধরা পড়ছে। তবে বর্তমানে বেশিরভাগ ছোট সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে। বড় সাইজের ইলিশটা একটু তুলনামূলক কম ধরা পড়ছে।
আলীপুর মৎস্য বন্দরের আড়ৎদার জলিল হাওলাদার গণমাধ্যমকে বলেন, গত তিন-চার মাস ধরে তেমন কোনো মাছের দেখা মিলছে না। এক হচ্ছে ঠিকমতো সমুদ্রে মাছ পাওয়া যাচ্ছিলো না তার ওপর আবার টানা বৈরী আবহাওয়া, এমন সংকটে সময় পার করছিলো দক্ষিণাঞ্চলের হাজারো জেলে পেশার মানুষ। তবে গতকাল থেকে অধিকাংশ ট্রলারই ঘাটে মাছ নিয়ে ফিরে আসছে। এতে প্রশান্তি ফিরতে শুরু করেছে জেলে ও আড়ৎদারদের মাঝে।
কলাপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা গণমাধ্যমকে বলেন, সাগরে বেশ কিছুদিন ইলিশের খরা চলছিলো। বর্তমানে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। বৃষ্টি থাকলে আরও বেশি ইলিশ ধরা পড়বে। তবে আবহাওয়া খারাপ হয়ে গেলে সমুদ্রে জেলেরা টিকে থাকতে পারবে না। তবে স্বাভাবিক আবহাওয়া এবং বৃষ্টি থাকলে পর্যাপ্ত মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরতে পারবে বলে মনে করছি। তবে জেলে পল্লী, মৎস্য বন্দর, পাইকারি ব্যবসায়ীসহ সকল মৎস্য সংশ্লিষ্ট পেশার মানুষের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন
ডিএমপির সাবেক ৯ ওসিকে অবসরে পাঠালো সরকার
খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ : মোট ভোটার ১২ কোটি ৬১ লাখ, নতুন ৪৫ লাখ
পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রের খোঁজ দিলে মিলবে পুরস্কার:স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা