August 18, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, August 18th, 2025, 6:10 pm

দেশের প্রথম ইংলিশ ম্যারাথন

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো এক অভিনব আয়োজন—ইংলিশ ম্যারাথন। ভোরের স্নিগ্ধ পরিবেশে রাজধানীর মিরপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি তরুণদের জন্য ছিল ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা। শুধু দৌড় নয়, শেখা, যোগাযোগ আর আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিই ছিল এর মূল লক্ষ্য। আয়োজন করেছে ভাষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইংলিশ থেরাপি।

ভোর ৬টায় শুরু হয় ৩.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দৌড়। সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ মিনিট। শতাধিক তরুণ-তরুণী ও শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। তবে এটি কেবল দৌড়ের প্রতিযোগিতা ছিল না। প্রতিটি ধাপে অংশগ্রহণকারীদের ইংরেজিতে কথা বলার উৎসাহ দেওয়া হয়। নতুন শব্দ শেখা, তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহার করা এবং ভুল হলেও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়াই ছিল মূল উদ্দেশ্য। ফলে অংশগ্রহণকারীরা একই সঙ্গে দৌড়েছেন এবং ইংরেজি অনুশীলন করেছেন।

অনুষ্ঠানের অন্যতম অংশগ্রহণকারী আমিরুল ইসলাম খান বলেন, “এই ম্যারাথনে অংশ নিয়ে বুঝেছি শেখা মানে আনন্দ। প্রতিটি ধাপে নতুন কিছু শিখেছি। ইংরেজি শেখা যে এত সহজ হতে পারে, আগে তা ভাবিনি।”

প্রথমবারের মতো ম্যারাথনে অংশ নেওয়া তরুণ এসএফ ইউনুস তালুকদার বলেন, “এটি আমার জীবনের প্রথম ম্যারাথন। সবার সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পেরে দারুণ আনন্দ পেয়েছি। দিনটি আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

দৌড় শেষে শুরু হয় দিনভর নানা কার্যক্রম। কেউ অংশ নেন ভোকাবুলারি গেমে, কেউ যুক্ত হন গ্রুপ ডিসকাশনে। কেউ করেন স্পিকিং প্র্যাকটিস, আবার কেউ মতামত প্রকাশ করেন বিতর্কে। খোলা আকাশের নিচে, প্রকৃতির সান্নিধ্যে শেখার এই অভিজ্ঞতা অংশগ্রহণকারীদের কাছে একেবারেই নতুন ছিল। তাদের মতে, ক্লাসরুমের গণ্ডির বাইরে শেখার এই পরিবেশ শেখাকে করেছে অনেক বেশি প্রাণবন্ত ও উপভোগ্য।

আয়োজক প্রতিষ্ঠান ইংলিশ থেরাপির প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমাদের লক্ষ্য তরুণদের ইংরেজি শেখার ভয় দূর করা। আমরা চাই তারা ইংরেজিকে চাপ হিসেবে নয়, আনন্দ হিসেবে নিক। এই ম্যারাথন তাদের সেই অনুভূতি দিয়েছে। শেখা মানে শুধু মুখস্থ নয়; এটি আনন্দময় অভ্যাসও হতে পারে।”

অংশগ্রহণকারীরা জানান, তারা শুধু দৌড়াননি; বরং শিখেছেন একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। শিখেছেন ভয় না পেয়ে ইংরেজি ব্যবহার করতে। ভুল হলে তা নিয়ে লজ্জা না পেয়ে হাসিমুখে এগিয়ে যেতে। তরুণদের মতে, এ ধরনের আয়োজন তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে এবং ইংরেজিকে সহজভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করেছে।

তরুণ প্রজন্মের জন্য ইংরেজি এখন আর কেবল একটি ভাষা নয়, এটি উচ্চশিক্ষা, কর্মসংস্থান ও বৈশ্বিক যোগাযোগের হাতিয়ার। তাই শেখার পদ্ধতিকে আনন্দময় করে তোলার প্রয়োজনীয়তা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ইংলিশ ম্যারাথনের মতো আয়োজন তরুণদের সেই পথে অনুপ্রাণিত করবে।

অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজন আরও হলে তরুণরা ইংরেজি শেখার ক্ষেত্রে ভয় কাটিয়ে উঠতে পারবে। পাশাপাশি এটি তাদের আত্মবিশ্বাসী, দক্ষ ও বিশ্বমানের নাগরিক হতে সহায়তা করবে।

 

মো. সাইফুল ইসলাম

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।