যদি না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক হুমকিগুলো মূলত আলোচনার কৌশল হয়, তবে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি কার্যত এক গভীর অচলাবস্থায় পড়েছে। ১৯৯৮ সালের পর থেকে এটি সবচেয়ে বড় সংকট, যখন ভারত পারমাণবিক পরীক্ষা চালায় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।
এর মধ্যে বড় পার্থক্য হলো, ১৯৯৮ সালের পরীক্ষাগুলো ভারতের সামরিকসহ সামগ্রিক শক্তি বাড়িয়েছিল, কিন্তু বর্তমান সময়ে ভারতের সে অর্থে শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
গত এক দশকে যদি ভারত প্রতি বছর গড়ে ৮-৯ শতাংশ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারত, ৬-৬.৫ শতাংশের পরিবর্তে, এবং সামরিক আধুনিকীকরণে ব্যাপক বিনিয়োগ করত, তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের শক্তি অনেক বেশি হতো। এখন, চাপের মুখে ভারত তার নীতি অগ্রাধিকারগুলোর একটি বড় পুনর্গঠন করতে পারে।
যদি না নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে, ভারতের পররাষ্ট্রনীতির মূল কাঠামো ভেঙে পড়ার মুখে দাঁড়িয়ে আছে। এটি বোঝার জন্য আমাদের স্মরণ করতে হবে গত আড়াই দশকে ভারতের প্রধান পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্যগুলো কী ছিল।
এমন চারটি লক্ষ্য সহজেই চিহ্নিত করা যায়। ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করেছে; পাকিস্তানের সঙ্গে সমান অবস্থানে ফিরে যেতে চায়নি; চীনের সঙ্গে সমতা চাইছিল; এবং রাশিয়ার সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চেয়েছিল।
রাশিয়ার সঙ্গে সৌহার্দ্য অটুট রয়েছে, যদিও তা গুরুতর হুমকির মুখে। ট্রাম্পের শুল্ক নীতির বড় অংশই রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানির ওপর নির্ভরতা দুর্বল করার লক্ষ্যে গৃহীত। এমনকি হুমকির কারণে যদি ভারত তেল আমদানির উৎস সৌদি আরবের মতো অন্য কোথাও সরিয়ে নেয়, তবুও অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের জন্য রাশিয়ার ওপর ভারতের নির্ভরতা দ্রুত হ্রাস পাবে না, ফলে ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক আগের মতোই অটুট থাকবে। সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত না হয়ে এই প্রতিরক্ষা সম্পর্ক হবে দীর্ঘস্থায়ী।
অন্যদিকে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির মূল কাঠামোর বাকী তিনটি লক্ষ্য , যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান এবং চীনকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে, সেগুলো কার্যত ধ্বংসের পথে।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
আইসিইউতে খালেদা জিয়া
দেশে আইসিইউতে ৪১% রোগীর দেহে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না: আইইডিসিআর
গ্রামীণফোনে ভারতীয়দের আধিপত্যের অভিযোগ: ১৩ বছরে ছাঁটাই ৩,৩৬০ বাংলাদেশি কর্মী