‘আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা’ করতে প্রিমিয়ার ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙ্গে তা নতুন করে গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক; যার মধ্য দিয়ে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার পর এটির পর্ষদ আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. এইচ বি এম ইকবালের পরিবারের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হল।
গতকাল তার ছেলে মোহাম্মদ ইমরান ইকবালকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকটির পর্ষদ ভেঙে উদ্যোক্তা পরিচালক ডা. আরিফুর রহমানকে চেয়ারম্যান করে ছয় সদস্যের পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এছাড়া পাঁচ স্বতন্ত্র পরিচালক হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. ফোরকান হোসেন, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ফরিদুল ইসলাম, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) অধ্যাপক শেখ মোর্শেদ জাহান ও চার্টার্ড সেক্রেটারি এম নুরুল আলম। নুরুল আলমকে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের স্বতন্ত্র পরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগের শর্তে প্রিমিয়ার ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী জানান, করপোরেট গভর্ন্যান্স ও কার্যকর নীতি বাস্তবায়নে ঘাটতি, ঋণ শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যর্থতা এবং সার্বিকভাবে সুশাসনের অভাবে প্রিমিয়ার ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠনের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রিমিয়ার ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি পরিচালিত হয়ে আসছিল ডা. এইচ বি এম ইকবাল পরিবারের একক কর্তৃত্বে। ১৯৯৯ সালে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিনি চেয়ারম্যান ছিলেন। তার স্ত্রী, ছেলেসহ পরিবারের একাধিক সদস্য ছিলেন পরিচালনা পর্ষদে। তবে টানা তিন মাস পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে অনুপস্থিত থাকলে পদ হারানোর নীতিমালার কারণে গত ১২ জানুয়ারি বিদেশ থেকে ইমেইলে ২৬ বছর পর সরে দাঁড়ান প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডা. ইকবাল।
ওই সময় তার ছেলে মইন ইকবাল ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করেন। ১৪ জানুয়ারি তার আরেক ছেলে ও ব্যাংকটির পরিচালক ইমরান ইকবালকে চেয়ারম্যান করা হয়। এছাড়া ইকবালের পছন্দের অন্য পরিচালকরা সবাই বহাল ছিলেন।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ইকবাল পরিবারের একক আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে নানাভাবে আমানতকারীদের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। ব্যাংকের কাছে বিভিন্ন ভবন ভাড়া দিয়ে তিন থেকে চার গুণ বেশি টাকা নিচ্ছেন তিনি। ঋণ, নিয়োগ, পদোন্নতি, বিভিন্ন কমিশন বাণিজ্যসহ নানা উপায়ে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব জেনেও বিগত সরকারের সময়ে তার বিষয়ে নীরব ছিল।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৪টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কয়েকটি ব্যাংকের এমডিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
ভারতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধের অনুরোধ সরকারের
ইউরোপের বাজারে রফতানি বাড়ল বাংলাদেশি পোশাকের
সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বাংলোবাড়ি গুঁড়িয়ে দিল বিআইডব্লিউটিএ