August 27, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, August 27th, 2025, 2:17 pm

জয়পুরহাটে শ্রেণীকক্ষে দেরিতে আসার কথা বলায় ৩৩ শিক্ষার্থীকে পিটালেন শিক্ষক : অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ

জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ

জয়পুরহাটের কালাই ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক শ্রেণীকক্ষে দেরিতে আসার কথা বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে একযোগে ৩৩জন শিক্ষার্থীকে গণহারে বেত্রাঘাত করে গুরুত্বর আহত করেছে বলে

অভিযোগ ওঠেছে ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক এম এ জি নাফসি তালুকদারের বিরুদ্ধে। এঘটনা মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১ টার দিকে কালাই সরকারি ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণী কক্ষে ঘটেছে। শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষ থেকে বের হয়ে প্রথমে প্রধান শিক্ষকের নিকট ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে গেলে প্রধান শিক্ষক ব্যবস্থা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে শিক্ষার্থীরা জোটবদ্ধ হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা আক্তার জাহান ওই শিক্ষককে শোকজ করার নির্দেশ দেন প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলামকে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করার বিষয় নিশ্চিত করেছেন।

প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিনের মত মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০ টায় কালাই সরকারি ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে পাঠদান শুরু হয়। যথারিতি সকল শিক্ষক শ্রেণীকক্ষে গেলেও ৭ম শ্রেণীর ক শাখায় কোনো শিক্ষক উপস্থিত হননি। এরই মধ্যে ওই ক্লাসে দায়িত্বরত শিক্ষক এম এ জি নাফসি তালুকদার পাঠদান শুরুর প্রায় ২৫ মিনিট পরে

অথ্যাৎ ১০ টা ৪০ মিনিটে যাচ্ছিলেন। এসময় ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা শ্রেণী কক্ষ থেকেই ওই শিক্ষককে বলে, স্যার কখনও সময়মত ক্লাশে আসেন না, আজও দেরি করে আসছেন। কি আর ক্লাশ হবে। এমন কথা শোনে ওই শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে ৯ম শ্রেণীর ক শাখার কক্ষে প্রবেশ করে এই কথা কে বলেছে জানতে চায়। তাঁর কথাতে কোনো শিক্ষার্থী জবাব না দিয়ে নিরব থাকে। তখন ওই শিক্ষক উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীকে এ্যালোপাতারিভাবে বেত্রাঘাত করতে থাকেন। এতে ৩৩ জন শিক্ষার্থীই কম বেশী আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষ থেকে বের হয়ে প্রথমে তারা প্রধান শিক্ষককের নিকট গিয়ে ওই শিক্ষককের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে।

তখন প্রধান শিক্ষক ওই শিক্ষককের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং তাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট যেতে পরামর্শ দেন। শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট গিয়ে অভিযোগ দাখিল করেন। গুরুত্বর আহত ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আকিব হোসেনের বাবা আবু কালাম বলেন,‘শিক্ষক

অপরাধও করবে আবার শিক্ষার্থীদের অযাচিত মারপিট করবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। একজন শিক্ষক এভাবে শিক্ষার্থীদের মারপিট করতে পারেনা। এর একটা বিহিত আমরা অভিভাবকরা দেখতে চাই।’ অভিযুক্ত শিক্ষক এম এ জি নাফসি তালুকদার বলেন,‘কোনো শিক্ষার্থীর উপর রাগ বা ক্ষোভে নয়।

আমি শিক্ষার্থীদের শাসনমুলক বেত্রাঘাত করেছি। এ জন্য সবাইকে শাসন করেছি।’ প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম বকুল বলেন,‘শ্রেণীকক্ষে এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা আমার নিকট এসে অভিযোগ দেয়। সাথে সাথে আমি শিক্ষকদের নিয়ে বিষয়টি আলোচনাকরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অবগত করেছি।

আবার শিক্ষার্থীরাও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অভিযোগ করেছে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মৌখিক নির্দেশে ওই শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে। জবাব দেওয়ার পর তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা আক্তার জাহান বলেন,‘শিক্ষার্থীদের মারপিট করেছে এমন

অভিযোগ পেয়েছি। ওই শিক্ষককে শোকজ করার জন্য প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শোকজের জবাব পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন

মহলে অবগত করা হয়েছে। শিক্ষাবিধি অনুযায়ী যে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন তা নেওয়া হবে।’

 

 

এস এম শফিকুল ইসলাম

জয়পুরহাট।