September 11, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, September 9th, 2025, 8:21 pm

পাল্টে গেছে বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র দৃশ্যপট আধুনিক সেবার দ্বাড় উম্মোচন

বাবুগঞ্জ(বরিশাল)প্রতিনিধি:

উপজেলা সদর থেকে দেহেরগতি ইউনিয়নের প্রত্যান্ত অঞ্চল বাহেরচরের সুগন্ধ নদী তীরে ১৯৬৪ ইংরেজী সালে প্রতিষ্ঠিত বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। একটা সময় ছিলো যখন কোন ডাক্তার পাওয়া যেতো না উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অব্যবস্থাপনা ও অযতেœ ভঙ্গগুর দশায় পৌছেছিল ৩১ শয্যা বিশিষ্ট্য সরকারি হাসপাতালটি। । এখন চালু রয়েছে ২৪ ঘন্টা জরুরি বিভাগের সেবা কার্যক্রম। হাসপাতলটির অবকাঠামো ও স্বাস্থ্যসেবায় দৃশ্যমান উন্নতি লক্ষনীয়। কিন্তু বর্তমানে হাসপাতালটিতে ডাক্তার,নার্স, ষ্টাফ ও মঞ্জুরিকৃত বিভিন্ন পদে জনবল সংকট রয়েছে। এক সময়ের কল্পনাতীত বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির হাল ধরেন বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ঁঢ়্ঋঢ়ড়) ডাঃ সুবাস সরকার। তিনি দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসেন। দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে তিনি কাজ শুরু করেন। প্রথমে রোগীদের সেবাদানে পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ ও আউটডোরে চিকিৎসা সেবা নিশ্চত করেন। পুরো হাসপাতাল এরিয়া বর্জ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এনে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে হাসপাতালটি রোগী, চিকিৎসক ও ভিজিটরদের উপযোগী করে তোলেন। জানা গেছে বর্তমানে পুরো হাসপাতালটি সিসি ক্যামেরায় নিয়ন্ত্রিত। পাশাপশি হাসপাতালের যোগাযোগ রক্ষার জন্য ইন্টারকম সার্ভিস চালু করেছেন। উপেজলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা সুবাস সরকারের প্রচেষ্টায় সেন্ট্রাল অক্সিজেনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, বহিঃবিভাগে আগত রোগীদের জন্য বসার ও সুপেয় নিরাপদ পানির ব্যবস্থা, করোনা রোগীদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবস্থা, করোনা কালিন সময় টেলি মেডিসিন সেবা চালু, আন্ত ঃবিভাগ রোগীদের খাবার মান পরিবর্তন সহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ায় হাসপাতালটি প্রাণ ফিরে পেয়েছে। সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালটি  ৫০ শয্যায় উন্নতি হলেও এখন ৩১ শয্যার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এখন আর নেই কোন দালাল ও বহিরাগতদের  উপদ্রপ। প্রত্যেক ষ্টাফের গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে পরিচয় পত্র। ঝোপঝার, জঙ্গল আর দুর্গন্ধময় যায়গায় এখন শোভা পাচ্ছে ফুলের বাগান। ডাক্তার, নার্স ও ষ্টাফ সংকট থাকায় প্রতিদিন নিরলসভাবে এলাকাবাসীকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে হিমশিমে পরছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রিমোট এরিয়ায় হওয়া আগে রোগীর দেখা না মিললেও বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২শত রোগী বহিঃবিভাগে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। প্রসাব, রক্ত, ইসিজি পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্নয় করে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। নতুন জিন এক্সপার্ট মেশিন এর মাধ্যমে যক্ষা রোগী সনাক্ত করণ ও ভায়া সেন্টারে জরায়ুর মুখে ক্যান্সার পরীক্ষা চালু রয়েছে। হাসপাতালটিতে এক্সরে মেশিন, আল্টাসাউন্ড মেশিন স্থাপন করা হলেও টেকনোলজিস্টের অভাবে এখনও এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে না। তবে রেডিওগ্রাফার না থাকার  সেবাটি বর্তমানে বন্ধ আছে।  রোগী ও স্বাস্থ্যসেবা প্রহীতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,  এখন আগের তুলনায় চিকিৎসাসেবা মিলছে এবং  প্রায় সব ধরনের ঔষধ এখান থেকে পাওয়া যায়। ওয়াডের্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা খুব ভালো। নেই কোনো দুর্গন্ধ। ইনডোরে ভর্তি রোগীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ, উন্নত চিকিৎসা, স্বাস্থ্য সম্মত খাবার পরিবেশনে আধুনিকায়ন করেছেন ডাক্তার সুবাস সরকার। নিজ উদ্যোগে,সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য গাছ রোপণ করেছেন, পর্যবেক্ষণের জন্য ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করেছেন। সবচাইতে নদীর তীরে বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দীর্ঘদিনের যে স্থবির অবস্থা ছিল সেখান থেকে একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার উদ্যোগে বর্তমানে আধুনিক রুপ পেয়েছে। হাসপাতাল নয় এটা যেন একটি রিসোর্ট। এছাড়া হাসপাতালটিতে, সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স প্রন্তুত থাকে রোগী বহনের জন্য। সংশিষ্টরা মনে করেন, বর্তমান অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতির যথাযথ ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল দ্রত পদায়ন দিলে স্বাস্থ্যসেবার মান আরও বাড়বে এবং পুরো বাবুগঞ্জ উপজেলার মানুষ উপকৃত হবেন। বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুবাস সরকার বলেন, প্রত্যান্ত অঞ্চলে হওয়ায় আগে এখানে চিকিৎসকরা থাকতে চাইতেন না। এখন সবসময় চিকিৎসকরা স্টেশনে অবস্থান করছে। কেউ এসে সেবা বঞ্চিত না হয় সেই দিকটায় বেশি খেয়াল রাখা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলগুলোর মনোভাব ভালো থাকায় হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় আমুল পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়েছে।