September 12, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, September 11th, 2025, 12:35 pm

নতুন সংবিধান ও তিন দশকের দুর্নীতির বিচার চায় নেপালের তরুণরা

নেপালে সহিংস বিক্ষোভের জেরে সরকারের পতনের পর ‘জেনারেশন জি’-এর তরুণরা তাদের বিস্তৃত দাবি তুলে ধরেছে। এর মধ্যে সংবিধান নতুন করে লেখা, সরাসরি নির্বাচিত নির্বাহী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং গত তিন দশকের রাজনৈতিক দুর্নীতির তদন্তসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের দাবিও রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া এই তরুণ বিক্ষোভকারীরা শাসনব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন এবং গত তিন দশকে রাজনীতিকদের অবৈধ সম্পদ লুটের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা করেছেন যে, বিক্ষোভে নিহত প্রত্যেককে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘শহীদ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং তাদের পরিবারকে সম্মান ও সহায়তা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে বেকারত্ব মোকাবিলা, অভিবাসন কমানো এবং সামাজিক বৈষম্য দূর করার জন্য বিশেষ কর্মসূচির প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা দলের জন্য নয়, এটি গোটা প্রজন্ম ও দেশের ভবিষ্যতের জন্য। শান্তি জরুরি, কিন্তু তা সম্ভব কেবল নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তিতে।’ তারা আশা প্রকাশ করেছেন যে, রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনী তাদের প্রস্তাবগুলো ইতিবাচকভাবে বাস্তবায়ন করবেন।

বিক্ষোভকারীদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: বর্তমান প্রতিনিধি পরিষদ ভেঙে দেওয়া, কারণ এটি জনগণের আস্থা হারিয়েছে; জনগণ, বিশেষজ্ঞ ও তরুণদের অংশগ্রহণে সংবিধানের সংশোধন বা সম্পূর্ণ পুনর্লিখন; অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের পর স্বাধীন, সুষ্ঠু এবং সরাসরি জনঅংশগ্রহণের ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন; সরাসরি নির্বাচিত নির্বাহী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা; গত তিন দশকে লুট হওয়া সম্পদের তদন্ত এবং অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রীয়করণ; এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচার, নিরাপত্তা ও যোগাযোগ খাতে কাঠামোগত সংস্কার।

বুধবার ভোর থেকেই সেনাবাহিনী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং অস্থিরতা দমনে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর আগের দিন সহিংস বিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রী ওলি পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন। তবে সরকারের পতনের পরও অস্থিরতা কমেনি। বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেনাবাহিনী রাতেই দেশজুড়ে নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং কাঠমান্ডু, ললিতপুর ও ভক্তপুরসহ বিভিন্ন স্থানে বিধিনিষেধ আরোপ করে।

সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে যে, কিছু গোষ্ঠী বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষতি করছে এবং সরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে। গত সোমবার ‘জেনারেশন জি’-এর নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে অন্তত ২২ জন নিহত হওয়ার দায় নিয়ে জবাবদিহির দাবিতে শত শত মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করলে ওলি পদত্যাগ করেন।

 

এনএনবাংলা/