November 1, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, September 15th, 2025, 3:50 pm

তরুণরা সক্রিয় থাকলে কোনো সমস্যাই অমীমাংসিত থাকতে পারে না : প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তরুণ সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা তাদের মেধা, শক্তি ও সৃজনশীলতা ব্যবহার করে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখুক। তিনি বলেন, “আমি যুবসমাজের প্রত্যেক সদস্যকে আহ্বান জানাই, তোমাদের প্রতিভা এবং উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে সমাজ ও দেশের কল্যাণে কাজ করো।”

তিনি আরও বলেন, “তোমাদের অর্জন কেবল ব্যক্তিগত সাফল্যের সীমিত না থেকে অন্যদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠুক। আমি বিশ্বাস করি, তরুণরা সক্রিয় থাকলে দেশের কোনো সমস্যা অমীমাংসিত থাকতে পারে না।”

এ কথা তিনি আজ সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে অনুষ্ঠিত ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান অনুষ্ঠানে বলেন। অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ ও তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণামূলক অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১২ জন তরুণ পুরস্কৃত হন।

প্রধান উপদেষ্টা তারুণ্যের শক্তিকে উদযাপন করে বলেন, “এটাই আমাদের জাতির চালিকাশক্তি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, যখন দেশের যুবসমাজ উদ্যমী ও উদ্ভাবনী শক্তিতে বলীয়ান হয়, তখন কোনো প্রতিবন্ধকতা তাদের অগ্রযাত্রাকে থামাতে পারে না।”

তরুণদের ভুমিকার গুরুত্ব তুলে তিনি বলেন, “আমাদের তরুণদের উদ্ভাবনী শক্তি আজ শিক্ষাক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নেই। তারা স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সংরক্ষণ, দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠায়ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। যুগে যুগে এ দেশের ইতিহাস রচনায় তরুণরা অগ্রদূত হয়েছে।”

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের পথে নানা চ্যালেঞ্জ আসবে—জনস্বাস্থ্যের সংকট, শিক্ষার অপর্যাপ্ত সুযোগ, পরিবেশগত বিপর্যয়। কিন্তু হতাশ হয়ে পড়ার বদলে আমাদের একত্রিত হয়ে এগুলো মোকাবিলা করতে হবে। আমি আশা করি, এ কাজে তরুণরা নেতৃত্ব দেবে।”

স্বেচ্ছাসেবার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “স্বেচ্ছাসেবা কেবল আর্তমানবতার কল্যাণে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আত্মউন্নয়ন, চরিত্র গঠন এবং নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশের এক অনন্য মাধ্যম। আমরা চাই, তরুণেরা কেবল স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেই সীমাবদ্ধ না থেকে সমাজের নীতি নির্ধারক, উদ্ভাবক ও পরিবর্তনের স্থপতি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলুক।

পুরস্কারপ্রাপ্তদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, “আজকের এই পুরস্কার কেবল স্বীকৃতি নয়, এটি তোমাদের জন্য একটি উদাত্ত আহ্বান। আরও সাহসী হও, নেতৃত্ব দাও এবং সমাজের কল্যাণে নতুন ধারণা ও উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করো।

তিনি যুবসমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণের ইতিবাচক প্রভাব উল্লেখ করে বলেন, “স্বাস্থ্যখাতে তোমাদের ক্ষুদ্র উদ্যোগও হাজারো শিশুকে রোগমুক্ত রাখতে পারে। শিক্ষা ক্ষেত্রে সামান্য প্রচেষ্টা দেশের শিক্ষার মানকে অনেকদূর এগিয়ে নিতে পারে। পরিবেশ রক্ষায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ ও সবুজ পৃথিবী নিশ্চিত করতে পারে।

অধ্যাপক ইউনূস যোগ করেন, “আমি জানি, স্বেচ্ছাসেবা বা অন্য কোনো মহৎ কাজের পথ মসৃণ নয়। সময়, অর্থ ও মানসিক চাপের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। এভাবেই ধৈর্য, সহনশীলতা এবং নেতৃত্বের মতো গুণাবলি অর্জন হয়।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, “আমরা তোমাদের নতুন নীতি, যুগান্তকারী ধারণা এবং সামাজিক পরিবর্তনের অগ্রদূত হিসেবে দেখতে চাই। তোমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ একটি উন্নত, মানবিক ও উদ্ভাবনী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।”

অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম এবং পুরস্কার বিজয়ী সুরাইয়া ফারহানা রেশমা বক্তব্য রাখেন।

এনএনবাংলা/