শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানির প্রথম চালান বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করেছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৮টি ট্রাকে করে ৩৭ টন ৪৬০ কেজি ইলিশ ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে পৌঁছায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামীম হোসেন।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ভারতের কলকাতার পাঁচটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান—ন্যাশনাল ট্রেডিং, এফএনএস ফিশ, জয় শান্তসী, মা ইন্টারন্যাশনাল ও আর জে ইন্টারন্যাশনাল—প্রথম চালানের ইলিশ আমদানি করেছে। অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে সততা ফিশ, স্বর্ণালি এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, বিশ্বাস ট্রেডার্স ও লাকি ট্রেডিংসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠান এ চালানে অংশ নিয়েছে।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ থাকলেও দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বিশেষ অনুমতিতে এবার ভারতে মোট এক হাজার ২০০ টন ইলিশ রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ অনুমোদন পেয়েছে মোট ৩৭টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন, ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ টন করে ৭৫০ টন, ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে ৩৬০ টন এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ টন করে ৪০ টন ইলিশ রপ্তানির কোটা বরাদ্দ হয়েছে।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। পূজার আগেই পদ্মার ইলিশের স্বাদ পাবেন ওপার বাংলার ভোজনরসিকরা। ভারতের ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম রপ্তানির পরিমাণ কিছুটা বেশি হবে। তবে উৎপাদন কম থাকায় এবার কম ইলিশ আসছে। তবুও পূজার আগে পদ্মার ইলিশ স্বাদ নিতে পারবে ভারতীয়রা—এ জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।”
বেনাপোল মৎস্য কোয়ারেন্টাইন অফিসার সজিব সাহা জানান, অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে রপ্তানি কার্যক্রম শেষ করতে হবে। প্রতিকেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১,৫৩৩ টাকা। প্রতিটি ইলিশের ওজন প্রায় ১ কেজি ২০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজির মধ্যে।
আগের বছরের তুলনা
গত বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে ২ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি থাকলেও রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ৩০৬ দশমিক ৮১৩ মেট্রিক টন, যা মোট অনুমতির ৪৪ শতাংশ। তার আগের বছর (২০২৩) ৩ হাজার ৫০০ টন অনুমোদনের বিপরীতে রপ্তানি হয় মাত্র ৬৩১ দশমিক ২৪ টন। ২০২২ সালে অনুমোদন ছিল ২ হাজার ৯০০ টন, রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ৩০০ টন। ২০২১ সালে অনুমোদন ছিল ৪ হাজার ৬০০ টন, রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ৬৯৯ টন। ২০২০ সালে অনুমোদনকৃত ১ হাজার ৪৫০ টনের বিপরীতে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার টনের কম। আর ২০১৯ সালে অনুমোদন ছিল ৫০০ টন, রপ্তানি হয়েছিল ৪৭৬ টন।
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নূরুল আমিন বিশ্বাস জানান, এবারও ইলিশের সংকট ও উচ্চমূল্যের কারণে অনুমোদিত সব ইলিশ রপ্তানি সম্ভব হবে না।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
আনিসুল-আমুসহ আট জন নতুন মামলায় গ্রেপ্তার
অস্কারজয়ী অভিনেতা ও পরিচালক রবার্ট রেডফোর্ড মারা গেছেন
তীব্র গরমে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ক্ষতি ১.৭৮ বিলিয়ন ডলার: বিশ্বব্যাংক