September 18, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, September 17th, 2025, 5:35 pm

রংপুর অঞ্চলে খড়ের দামে খুশি কৃষক, বিপাকে খামারিরা

রংপুর প্রতিনিধি  : রংপুর অঞ্চলে গরুর প্রধান খাদ্য খড়ের দাম গত কয়েক বছর ধরে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। এতে খামারি ও সাধারণ পশু পালনকারীরা মারাত্মক বিপাকে পড়েছেন। একদিকে যেমন খড়ের দাম বাড়ছে, তেমনি অন্যান্য পশুখাদ্যের দামও বেড়েছে। এর ফলে গরু পালন এবং দুগ্ধ উৎপাদন খরচ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা খামারিদের জন্য বড় ধরনের লোকসানের কারণ হচ্ছে। প্রতি মণ খড় বিক্রি হচ্ছে ৮০০থেকে ৯০০ টাকায়। এতে করে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটলেও বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। এর আগে খড়ের বাজার এমন লাগামহীন হয়নি বলে দাবি খামারিদের। খামারিরা বলছেন, যে খড়ের দাম আগে ছিল চারশ থেকে ৫০০ টাকা মণ ছিল তা এখন ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বেশি মূল্য দিয়ে শুধু খড় নয়, দানাদার খাদ্যও কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। অনেকে আবার একটু দাম কম পাওয়ার নিশ্চয়তায় কৃষি জমির মালিককে অগ্রিম টাকাও দিয়ে রাখছেন।

‎জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, গুড়া-ভুসির পাশাপাশি ধানের খড় গরুর জন্য উৎকৃষ্ট খাদ্য। গুড়া-ভুসির সঙ্গে খড় কেটে ভিজিয়ে গরুকে খাওয়ানো হয়। গরুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য এই খাদ্যের বিকল্প নেই। তাই খামার অথবা ব্যক্তিগত গরু পালনকারীদের সারাবছরের জন্য খড়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।গরুকে খাওয়ানো খড় নিয়ে স্থানীয়রা বলছে   আগে ধান মাড়াইয়ের জন্য কোনো যন্ত্র ছিল না। বর্তমানে ধান মাড়াইয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে খড়ের অভাব দেখা দিয়েছে। কারণ, মেশিনে ধান মাড়াই করলে অধিকাংশ খড় নষ্ট হয়ে যায়। আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার অনেকাংশেই এজন্য দায়ী।

‎ইউসুফ মিয়া একজন খামারি  জানান, তার খামারে প্রতিটি গরুর জন্য দিনে প্রায় ৩০০ টাকার খড় ও অন্যান্য খাবার লাগছে। এই খরচ বহন করা তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, “গত বছর এক হাজার খড়ের বিচালির দাম ছিল মাত্র ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, এখন সেই একই পরিমাণ খড় কিনতে হচ্ছে ৪,৫০০ থেকে ৫,০০০ টাকায়।” এই লোকসানের কারণে অনেকেই গরু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।মনির হোসেন, আরেকজন খামারি: তিনি জানান, বর্ষার কারণে তার ৮ বিঘা জমির খড় নষ্ট হয়ে গেছে। এখন চড়া দামে বাইরের খড় কিনে গরুকে খাওয়াতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “এক হাজার খড়ের আঁটি বিক্রি হচ্ছে প্রায় পাঁচ হাজার টাকায়। একটি গাভীর পেছনে দিনে খরচ হচ্ছে প্রায় ৩৫০ টাকার মতো।”

‎স্থানীয়দের দাবি খামারি ও সাধারণ পশু পালনকারীরা এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে সরকারের কাছে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেছেন। খড়ের দাম নিয়ন্ত্রণ সরকারিভাবে খড়ের দাম নির্ধারণ ও মনিটরিং করা হোক।সহজলভ্য গো-খাদ্যের ব্যবস্থা ভুট্টা এবং নেপিয়ার ঘাস সহ অন্যান্য সহজলভ্য গো-খাদ্য উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করতে সহজ শর্তে ঋণ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হোক।দানাদার খাদ্যের দাম কমানো শুধু খড় নয়, ভুসি, খৈলসহ সব ধরনের দানাদার খাদ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা হোক।সহজ শর্তে ঋণ প্রদান গো-খাদ্যের খরচ বেড়ে যাওয়ায় খামার টিকিয়ে রাখতে খামারিদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা হোক।এই সংকট সমাধান না হলে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারি তাদের পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

‎জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মজিবুর রহমান জানান, আগের তুলনায় বর্তমানে খড়ের দাম একটু বেড়েছে। এতে কৃষকের লাভবান হলেও খামারিরা পড়েছেন বিপাকে। সেজন্য খামারিরা শুধু খড়ের ওপর নির্ভর না হয়ে উন্নত মানের ঘাস চাষ করলে গো-খাদ্যের চাহিদা মেটানো যাবে। তিনি আরও বলেন, জেলায় গো-খাদ্যের সংকট এড়াতে প্রকল্পের মাধ্যমে রেললাইন, রাস্তার ধারসহ অন্য জমি মিলিয়ে প্রায় ১০০ একর জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষাবাদ করা হচ্ছে, যা জেলার ৫৭টি স্থায়ী বাজারে সকাল ও বিকেলে বিক্রি করা হয়। এই অঞ্চলে প্রায় ৩ লাখ ৮৫ হাজার দুগ্ধ উৎপাদনকারী গাভী রয়েছে। তিনি বলেন, শুধু দানাদার খাদ্যের ওপর নিভর্রনা করে খামারিদের উচিত ঘাস উৎপাদন এর দিকে মনোযোগ দেওয়া। এতে খরচ কমবে এবং গরু স্বাস্থ্যবান থাকবে। তিনি আরও পরামর্শ দেন যে, পশুখাদ্যের খরচ কমাতে ভুট্টা এবং নেপিয়ার ঘাসের চাষ বাড়ানো জরুরি।

রংপুর প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডক্টর আবু সাইদ আকন্দ জানান টানা বৃষ্টিতে কারণে  চাষাবাদে ব্রাহত হচ্ছে । ণ তাই গোখাদ্য  সংকট দেখা দিয়েছে । তিনি বলেন বন্যায়  রংপুরে ফসল তলিয়ে বিপাকে কৃষক পড়েছে  খামারিরা । খামারিদের উচিত ঘাস উচু জমিতে ঘাস চাষ করা ।  তিনি আরও বলেন সুস্ট  বন্যা পর স্বাভাবিক ভাবে আবার ও খামারিরা  গবাদি পশুর খাদ্য ঘাস উৎপাদন এর দিকে মনোযোগ দিবে পরবে