টাঙ্গাইল:
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল, মধুপুর ও সখীপুর উপজেলায় মশলা জাতীয় ফসল হলুদের চাষ করে নতুন আশার মুখ দেখছেন কৃষকরা। খরচ কম, রোগবালাই কম ও লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এর জনপ্রিয়তা।
স্থানীয় কৃষকদের মতে, সাথী ফসল হিসেবে পাহাড়ি অঞ্চলে হলুদ চাষ অত্যন্ত লাভজনক। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় প্রায় ৩৫-৪০ হাজার টাকা এবং উৎপাদন ভালো হলে লাভ হয় ৬০-৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
মধুপুর উপজেলার কৃষক রেজাউল করিম, আক্তার হোসেন ও নজরুল ইসলাম জানান, অন্য ফসলের তুলনায় হলুদের পরিচর্যা সহজ এবং লাভও বেশি। বৃষ্টি ও খরার মতো বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশানুরূপ ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
মধুপুরের ৯৮০ হেক্টর জমিতে হলুদ চাষ হয়েছে, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর ৭৬০ হেক্টর জমিতে ৯ হাজার টন উৎপাদন হলেও এবার তা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছে কৃষি বিভাগ। সম্ভাব্য বিক্রয় মূল্য প্রায় ৫৮ কোটি টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় মোট ৩,২০৮ হেক্টর জমিতে হলুদের আবাদ হয়েছে। ঘাটাইল (১,৪৫৬ হে.), মধুপুর (৯৮০ হে.) ও সখীপুর (৩৫০ হে.)—এই তিন উপজেলাতেই চাষ সবচেয়ে বেশি।
বিশেষজ্ঞরা জানান, দো’আঁশ ও বেলে দো’আঁশ লালমাটি হলুদের জন্য উপযুক্ত। এছাড়া হলুদ উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুর ফসল হওয়ায় পাহাড়ি ও ছায়াযুক্ত অঞ্চলেও ভালো ফলন দেয়। হলুদের উচ্চফলনশীল জাত ‘ডিমলা’ ও ‘সিন্দুরী’ স্থানীয় জাতের তুলনায় ২-৩ গুণ বেশি উৎপাদন দেয় এবং রোগ প্রতিরোধী।
হলুদের ব্যবহার শুধুমাত্র রান্না নয়; এটি প্রসাধনী, রং শিল্প এবং ওষুধ শিল্পেও ব্যবহৃত হয়। এতে রয়েছে ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি-৬ ও সি, এবং কারকিউমিন নামক উপাদান—যা বহু রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রকিব আল রানা বলেন, হলুদ বছরব্যাপী ফসল হওয়ায় কৃষকরা এটি সাথী ফসল হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। রোগবালাই কম হওয়ায় উৎপাদন খরচও কম। কৃষি অফিস নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে সহায়তা দিচ্ছে।
টাঙ্গাইল জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ দুলাল উদ্দিন বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর হলুদের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাজার দর ভালো থাকলে কৃষকেরা বড় ধরনের লাভবান হবেন।
আরও পড়ুন
আ.লীগের দলীয় কার্যালয়ের কথা বলে স্কুলের ভিতরে তিনতলা বিল্ডিং বাড়ি, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পানিতে ডুবে এক ব্যক্তি নিখোঁজ
টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতাকে না পেয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা