September 20, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, September 20th, 2025, 4:57 pm

বাংলাদেশ মিশনের উদ্যোগে নয়াদিল্লিতে জামদানি প্রদর্শনী

 

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ন্যাশনাল ক্রাফটস মিউজিয়ামে প্রথমবারের মত জামদানি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। খবর বাসস- এর।

এর ফলে দর্শনার্থীরা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও প্রসিদ্ধ বস্ত্রশিল্প জামদানির বিরল নান্দনিকতা সরাসরি দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।

পাঁচ দিনের এ প্রদর্শনী গতকাল শুক্রবার উদ্বোধন করা হয়। এটি আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

প্রদর্শনীটি ভারতের কারুশিল্প ও বস্ত্র সংরক্ষণকর্মী চন্দ্রশেখর ভেদার তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের খ্যাতনামা কারিগরদের বোনা অপরূপ জামদানি প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রদর্শনীতে রয়েছে দেড়শ বছর পুরনো দুটি দুর্লভ জামদানিও।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভেদা বলেন, ‘এগুলো মেশিনে তৈরি করা সম্ভব নয়। এর স্বচ্ছতা ও সূক্ষ্মতা এমন যেন বাতাসে বোনা।’

বাংলাদেশের আড়ংয়ের সাবেক ডিজাইন প্রধান চন্দ্রশেখর সাহা বলেন, ‘একসময় বাংলার মসলিন বিশ্বসেরা ছিল। সেই ধারার ওপর দাঁড়িয়ে জামদানি আজও মর্যাদার প্রতীক। এটি এমন এক শিল্প, যাকে দেখা ও অনুভব করা যায়।’

অনুষ্ঠানে ভারতের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজনরাও জামদানি নিয়ে মত প্রকাশ করেন। পদ্মশ্রী জয়ী ডিজাইনার সুনীতা কোহলি বলেন, ‘জামদানি ‘হাওয়ায় বোনা’। সম্রাটরা একে লালন করেছেন, বণিকরা সমুদ্রপথে বহন করেছেন এবং কবিরা এর সূক্ষ্মতা বর্ণনায় হিমশিম খেয়েছেন। ইউনেস্কো এটিকে ‘অমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ ঘোষণা করেছে। আমি এটিকে বলি ‘অমূর্ত বিলাসিতা’, যা মূল্য দিয়ে নয়, ধৈর্য, সময় ও মানুষের হাতের কৌশল দিয়ে পরিমাপ করা হয়।’

খ্যাতনামা চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ডিজাইনার মুজাফফর আলি বলেন, ‘জামদানি আলো ও বুননের এক অনন্য সৌন্দর্য, যা কারুশিল্পের প্রতি সম্মিলিত ভালোবাসার মাধ্যমে জাতিগুলোকে এক করতে পারে।’

প্রদর্শনীর মূল পরিকল্পনাকারী ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম. রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, ‘এ বছরের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে জামদানি প্রদর্শনীতে মানুষের বিপুল সাড়া দেখে এই উদ্যোগের অনুপ্রেরণা পাই। আমরা চাই, প্রদর্শনীর মাধ্যমে আরও বেশি মানুষ জামদানির অনন্ত সৌন্দর্য আবিষ্কার করুক।’

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত জামদানি কারিগর মোহাম্মদ জামাল হোসেন ও মোহাম্মদ সজীব প্রদর্শনীর সময় সেখানে বসেই জামদানির বুনন প্রক্রিয়া দেখাচ্ছেন। ফলে দর্শনার্থীরা শিল্পটির সূক্ষ্মতা সম্পর্কে বাস্তব ধারণা পাচ্ছেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কূটনীতিক, শিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও দেশি-বিদেশি বস্ত্রবোদ্ধারা অংশ নেয়ায় মিলনমেলায় পরিণত হয় প্রদর্শনীটি। মনে হয়েছে যেন দু’দেশের সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন এবং ঐতিহ্যের সম্মিলিত উদযাপন চলছে।

এনএনবাংলা/