টাঙ্গাইল:
টাঙ্গাইলে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মৌসুমের শুরুতে আগাম জাতের সবজি বাজারজাত করে অধিক লাভের প্রত্যাশা করছেন তারা। সাধারণত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত শীতকালীন সবজি বাজারে আসে, কিন্তু তখন চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি থাকায় কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত মূল্য পান না। তাই বাজারের চাহিদা ও দামের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কৃষকরা সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই চাষযোগ্য উঁচু জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ শুরু করেছেন।
সরেজমিনে জেলার মধুপুর, ঘাটাইল, সখিপুর, গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী এবং টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজির চাষে ব্যস্ত। বর্তমানে জমিতে শিম, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, করলা, লাউ, লালশাক, পালংশাকসহ বিভিন্ন জাতের চারা রোপণ ও পরিচর্যা চলছে।
মধুপুর উপজেলার মজিদ চালা গ্রামের কৃষক বিল্লাল হোসেনের জমিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম তাকে ফুলকপি রোপণের পরামর্শ দিচ্ছেন।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ফুলকপি চাষে সফল হতে হলে ভাদ্র-আশ্বিন মাসে (মধ্য আগস্ট থেকে মধ্য অক্টোবর) বীজ বপন করতে হয় এবং কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে (মধ্য নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর) ৩০-৩৫ দিন বয়সী চারা জমিতে রোপণ করতে হয়। জমি উর্বর, রোদযুক্ত এবং পানি নিষ্কাশনের উপযোগী হলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
ফুলকপি চাষের সময় সারি থেকে সারির দূরত্ব ৬০ সেমি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৪০ সেমি রাখতে হয়। হেক্টরপ্রতি ২৫০-৩০০ কেজি ইউরিয়া ছাড়াও টিএসপি, এমওপি, জিপসাম ও বোরন ব্যবহার করতে হয়। জমিতে রস না থাকলে নিয়মিত সেচ দিতে হয় এবং আগাছা পরিষ্কার রাখতে হয়। সঠিক পরিচর্যা করলে সাধারণত ৬০-৭০ দিন পর ফুলকপি সংগ্রহযোগ্য হয়।
মধুপুর উপজেলার ব্রাহ্মণবাড়ী গ্রামের কৃষক বিল্লাল হোসেন জানান, তিনি এ বছর দুই বিঘা জমিতে ৯ হাজার হাইব্রিড ফুলকপির চারা রোপণ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তিনি ভালো লাভের আশা করছেন।
ঘাটাইল উপজেলার জোরদিঘী গ্রামের কৃষক আব্দুর জব্বার মিয়া জানান, তিনি চার বিঘা জমিতে ১৬ হাজার ফুলকপি ও কিছু শিমের বীজ রোপণ করেছেন। আবহাওয়ার অনুকূলতা বজায় থাকলে ভালো ফলনের আশা করেন তিনি।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আশিক পারভেজ জানান, চলতি মৌসুমে জেলার ১,১৪৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে প্রায় ২৭,৪৮০ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “অধিক লাভের আশায় কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।”
আরও পড়ুন
রংপুরে ভেজাল গুড় উৎপাদনের দায়ে ব্যবসায়ীকে ২ লাখ টাকা জরিমানা
গঙ্গাচড়া যুব ফোরাম ও শিশু ফোরামের উদ্যোগে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী উপহার
সমাজ উন্নয়নে স্কাউটদের ভূমিকা শীর্ষক ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত