সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী মরহুম ডা. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুর পর ধানমন্ডির সুধাসদনের বসতবাড়ি থেকে নিজের অংশ বুঝে নেন শেখ হাসিনা। পরে সেই সম্পত্তি ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে দান করেন তিনি।
ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজউকের প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে কয়েকজন সাক্ষীর জবানবন্দিতে এ তথ্য উঠে আসে।
সাক্ষীরা জানান, ঢাকায় সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা নিজেদের নামে কোনো সম্পত্তি নেই বলে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে রাজউক থেকে প্লট বরাদ্দ নিয়েছিলেন।
এদিন আদালতে মোট ৯ জন সাক্ষী জবানবন্দি দেন। তারা হলেন— প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মোটর ক্লিনার মোহাম্মদ উজ্জ্বল হোসেন, গাজীপুর কালীগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রার জাহিদুর রহমান, গাজীপুর সদর রেকর্ডরুমের সাব রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান, ঢাকার সাবেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম মেজবাহউর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক তৈয়বা রহিম, ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মুদ্রাক্ষরিক কামরুন্নাহার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম এবং কম্পিউটার অপারেটর মুক্তি তরফদার।
দুদক প্রসিকিউটর খান মো. মঈনুল হাসান (লিপন) জানান, আদালত থেকে সমন পাঠানো হলে এসব সাক্ষী উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছেন।
এর আগে গত ৩১ জুলাই পৃথক তিন মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। অভিযোগ গঠনের সময় আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। মামলাগুলোতে শেখ রেহানা, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীসহ শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।
গত ২০ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ ও ৫–এ ছয়টি মামলা বিচারের জন্য পাঠানো হয়। এর মধ্যে তিনটিতে শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
গত জানুয়ারিতে এসব মামলার সূত্র ধরে দুদক পৃথক ছয়টি মামলা দায়ের করে। বর্তমানে সবগুলো মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হয়েছে এবং আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর রয়েছে।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
উপদেষ্টাদের কারও সেফ এক্সিটের প্রয়োজন নেই: আসিফ নজরুল
চীনের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প
মুক্ত হয়ে দেশে ফিরলেন শহিদুল আলম