কানাডার বেগমপাড়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয় ২০২০ সালে। তখন প্রকাশ্যে আসে, বাংলাদেশি অনেক প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী দুর্নীতির অর্থ পাচার করে কানাডায় বিলাসবহুল বাড়ি-ফ্ল্যাট কিনেছেন এবং পরিবারের সদস্যদের সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করাচ্ছেন।
তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন (আলগা মোমেন) ২০২০ সালের নভেম্বরে এক অনুষ্ঠানে বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তির তুলনায় সরকারি কর্মকর্তারাই বেশি অর্থ পাচার করেছেন। একইসঙ্গে কিছু ব্যবসায়ীর সম্পৃক্ততার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
সে সময় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সরকারের কাছে ২৮ জনের তালিকা চায়। পরে হাইকোর্ট বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের তথ্যও চান। দুদক জানায়, শতাধিক ব্যক্তি প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। কিন্তু তৎকালীন সরকারের চাপের মুখে তদন্ত কার্যত থেমে যায়।
তালিকাভুক্ত ২৮ জনের বেশিরভাগই সাবেক আমলা। তাদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের মন্ট্রিল ও টরন্টোয় ৪টি বাড়ি, সাবেক স্থানীয় সরকার সচিব আবু আলম শহীদ খানের টরন্টোয় একটি বাড়ি, সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের টরন্টোয় ৩টি ফ্ল্যাট, সাবেক মুখ্য সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের মিসিসাগায় ২টি বাড়ি, দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. ইকবাল মাহমুদের কানাডায় ৩টি বাড়ি, সাবেক বিমান সচিব মহিবুল হকের কানাডায় ৩টি অ্যাপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফজলে কবিরের মন্ট্রিলে ২টি ফ্ল্যাট, সাবেক গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের টরন্টোয় ৫টি বাড়ি ও ফ্ল্যাট।
এই তালিকায় আরও আছেন সাবেক সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মন্ট্রিলে ৩টি বাড়ি, সাবেক সচিব জাহাংগীর আলমের ২টি বাড়ি, সাবেক সচিব এম. নিয়াজ উদ্দিনের ২টি বাড়ি ও একটি খামারবাড়ি, সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমার হালদারের ৩টি ফ্ল্যাট, নাফিস সরাফতের ৪টি ফ্ল্যাট ও বিনিয়োগ, সাবেক এমপি শহীদ ইসলাম পাপলুর ৩টি বাড়ি ও বিনিয়োগ, সাবেক এমপি তানভীর ইমামের ২টি ফ্ল্যাট, এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ৩টি বাড়ি, সাবেক প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খানের একটি ফ্ল্যাট, নাসা গ্রুপ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের ৪টি বাড়ি ও বিনিয়োগ, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এমপি শামীম ওসমানের একটি বাড়ি, সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের মেয়ের নামে ২টি বাড়ি, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার মেয়ের নামে একটি ফ্ল্যাট, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের ৩টি বাড়ি ও বিনিয়োগ।
এ ছাড়া আরও কয়েকজন ব্যবসায়ীর পরিবার বেগমপাড়ায় বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে একজন বিতর্কিত ব্যবসায়ী পরিবারের নামে কানাডায় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
রাষ্ট্রদূতরা কিন্তু যে কারও বাসায় যেতে পারেন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক শহিদুল আলমের প্রতি প্রেস সচিবের সহমর্মিতা
নতুন বাংলাদেশ গড়তে কারও দাসত্ব নয়, স্বনির্ভর হতে হবে: ড. ইউনূস