October 10, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, October 6th, 2025, 8:24 pm

বিএনপি একাই সরকার গঠন করবে: ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে তারেক রহমান

 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, তাঁর দলই আসন্ন নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করবে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং নির্বাচনে সরাসরি অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে জিতব। দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এককভাবে সরকার গঠনের অবস্থানে আমরা আছি। আমার দেশে ফেরার সময় ঘনিয়ে এসেছে।’

বিএনপি নেতা দাবি করেন, শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশে একটি ‘মুক্ত ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন’ অনুষ্ঠিত হলে ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পূর্ণতা পাবে’।

ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে তারেক রহমানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। জরিপে বিএনপিই বর্তমানে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দল হিসেবে উঠে এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

তারেক রহমান ড. ইউনূসের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে বলেন, আওয়ামী লীগ একটি ‘ফ্যাসিস্ট দল’ এবং বিএনপি অন্যান্য রাজনৈতিক দলসহ, বিশেষ করে গত বছরের ছাত্র আন্দোলন থেকে গঠিত নতুন রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে সরকার গঠনে প্রস্তুত।

এনসিপি প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা তাদের রাজনীতিতে স্বাগত জানাব। তারা তরুণ, ভবিষ্যৎ তাদেরই।’

অর্থনীতি নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তিনি বলেন, বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশকে শুধু পোশাক রপ্তানিনির্ভর না রেখে আমাজন, ইবে ও আলিবাবার মতো বৈশ্বিক ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের সরবরাহকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে তারেক রহমান বলেন, তাঁর সরকার ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নীতি অনুসরণ করবে— যা শেখ হাসিনার সময়কার ভারতের সঙ্গে ‘একপেশে সম্পর্ক’ থেকে আলাদা হবে।

২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত ৫৯ বছর বয়সী এই বিএনপি নেতা বলেন, দুর্নীতির মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, নতুন বিএনপি সরকার ‘প্রতিশোধের রাজনীতি’ থেকে বেরিয়ে আসবে। ইতোমধ্যে দলের ভেতরে প্রতিশোধে জড়িত সাত হাজার সদস্যকে শাস্তি বা বহিষ্কার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তবে আওয়ামী লীগকে ভবিষ্যতে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো উত্তর দেননি তারেক রহমান। আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে চলমান মামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যদি তাঁরা দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে আওয়ামী লীগ কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে?’

নির্বাচিত হলে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে ইউনূস সরকারের উদ্যোগ অব্যাহত রাখারও অঙ্গীকার করেন তিনি।

তবে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, বিএনপির আগের শাসনামলে বাংলাদেশ টানা পাঁচ বছর বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। এমনকি ২০০৮ সালে ফাঁস হওয়া এক মার্কিন কূটনৈতিক বার্তায় তারেক রহমানকে ‘লুটতরাজ ও সহিংস রাজনীতির প্রতীক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।

এই প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘যেকোনো সরকারেরই কিছু ত্রুটি থাকতে পারে, কিন্তু বিএনপিই বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গঠন করেছিল।’ তাঁর দাবি, মার্কিন বার্তাটি ছিল ‘বাংলাদেশি গণমাধ্যমে ছড়ানো ভুয়া বর্ণনার’ ওপর ভিত্তি করে তৈরি, এবং তাঁর বিরুদ্ধে করা সব মামলাই এখন প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এনএনবাংলা/