সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন, তিনি এখন আর মন খারাপ করেন না, জেলজীবনে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন তিনি।
বুধবার (৮ অক্টোবর) ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব মন্তব্য করেন পলক।
রাজধানীর বনানী থানায় মো. শাহজাহান হত্যা মামলায় বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ও গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজী এবং সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
পুলিশের আবেদনের পর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদেকুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারাগার থেকে পুলিশ কড়া নিরাপত্তায় চার আসামিকে আদালতে হাজির করে হাজতখানায় রাখে। সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটের দিকে তাদের মাথায় হেলমেট ও বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে এজলাসে নেওয়া হয়।
এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে পলক বলেন, “সব কিছুরই শেষ আছে।”
একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “আপনি কি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন?” — উত্তরে পলক ‘হ্যাঁ’ সূচক মাথা নাড়েন এবং আবারও বলেন, “সব কিছুরই শেষ আছে।”
পরে সিএমএম আদালতের পঞ্চম তলার এজলাসে তাদের কাঠগড়ায় নেওয়া হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা তখন তাদের হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট খুলে দেন। কাঠগড়ায় সামনের দিকে দাঁড়িয়ে ছিলেন গোলাম দস্তগীর গাজী, পাশে ছিলেন পলক, রাশেদ খান মেনন ও আতিকুল ইসলাম। তারা আইনজীবীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
আইনজীবীর সঙ্গে আলাপকালে পলক বলেন, “আমি ভালো আছি, মানসিকভাবে শক্ত আছি, মন থেকে উজ্জীবিত রয়েছি। আগে মন খারাপ থাকলেও এখন আর হয় না। নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি।” তিনি এ কথাগুলো তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান।
বেলা ১১টা ৮ মিনিটে বিচারক এজলাসে ওঠেন। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার উপপরিদর্শক মো. ইয়াছির আরাফাত আসামিদের গ্রেফতার দেখানোর বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন আদালতে বলেন, আসামিরা এজাহারনামীয়। গত জুলাই আন্দোলনের সময় ভিকটিম শাহজাহান শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নেন। তখন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতা-কর্মী দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গুলি চালান। এতে শাহজাহান বুকে ও পেটে গুলিবিদ্ধ হন এবং চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান। ওইদিন মোট ১২০ জন আন্দোলনকারী নিহত হন। এ হত্যাকাণ্ড আসামিদের নির্দেশে সংঘটিত হয়েছে বলে তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।
শুনানি শেষে আদালত পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করে তাদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন। পরে আবারও কঠোর নিরাপত্তায় হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে তাদের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়া হয়।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
টিএফআই সেলে গুম : প্রধান আসামি শেখ হাসিনা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সামছুর রহমানের এনআইডি ব্লক, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
স্বৈরাচার হাসিনার নির্বাচন করার সব পথ বন্ধ হলো