আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মামলার অন্য আসামিদের উদ্দেশে আবেগঘন কথা বললেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সম্ভবত আর দেখা হবে না। আমার মামলা ট্রাইব্যুনাল-২ এ নিয়ে গেছে।’
ইনুর এমন কথায় পাশে থাকা সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাহস জোগান। তিনি বলেন, ‘চিন্তা করবেন না ভাই। আল্লাহ ভরসা। বুকে বল রাখেন, মনোবল হারাবেন না।’
দুজনের এই কথোপকথনের মাঝেই সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলে ওঠেন, ‘এভাবে ওঠানো-নামানোর নাটক কবে শেষ হবে এদের!’
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর এজলাসে এমন দৃশ্য দেখা যায়। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১৬ জনকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
কেরানীগঞ্জ, কাশিমপুর ও নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় তাদের আনা হয়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে একে একে সবাইকে আদালতে আনা হলে প্রথম সারিতে বসেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তার পাশে আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। মাঝের সারিতে ছিলেন ডা. দীপু মনি, আর তার ঠিক পেছনে ইনু। তার পাশে বসেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
মামলার নতুন তারিখ নির্ধারণের পর দুপুরে তাদের আবার হাজতখানায় ফেরত নেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থাকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও দুই মাস সময় দেয় এবং পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে ৮ ডিসেম্বর।
এদিন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সালমান এফ রহমান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
এর আগে গত ২০ জুলাই মামলার তদন্তে আরও সময় চেয়ে আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর। আদালত তখন তিন মাস সময় মঞ্জুর করে আজকের তারিখ নির্ধারণ করেছিল। তবে প্রতিবেদন জমা না হওয়ায় আবারও সময় বাড়িয়ে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তদন্ত শেষের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে সকালে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণজুড়ে নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন এবং প্রবেশের সময় প্রত্যেককে তল্লাশি করে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
মধ্যরাতে হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া
তহবিল সংকটে কঙ্গো থেকে ফিরছে বাংলাদেশ পুলিশের শান্তিরক্ষা কন্টিনজেন্ট
রাত পোহালেই রাকসু ভোট, ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ