দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়টি একাডেমিক ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে স্থাপিত ৯৯০টি বুথে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে শিক্ষার্থীদের ভোটকেন্দ্রে যেতে দেখা যায়। আবাসিক শিক্ষার্থীরা সহপাঠীদের ঘুম থেকে ডেকে ভোটে অংশ নিতে উৎসাহিত করছেন।
সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের মধ্যেই নির্বাচনী কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সব কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স সিলগালা করা হয়। নিরাপত্তা নিশ্চিতে ক্যাম্পাসজুড়ে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। প্রতিটি বুথের কাছাকাছি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।
ভোটকেন্দ্রগুলোর সামনে শিক্ষার্থীরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ভোটের অপেক্ষা করছেন। সকালবেলায় উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও প্রার্থীরা আশা করছেন, সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের উপস্থিতি আরও বৃদ্ধি পাবে।
মোট ২৮ হাজার ৯০১ জন নিবন্ধিত শিক্ষার্থী এবার ৯০২ প্রার্থীর মধ্যে থেকে তাদের প্রতিনিধি বেছে নিচ্ছেন। এর মধ্যে রাকসুর ২৩টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৪৭ জন প্রার্থী, সিনেটের পাঁচটি পদে ৫৮ জন এবং ১৫টি হল সংসদের বিভিন্ন পদে লড়ছেন ৫৯৭ জন প্রার্থী।
নির্বাচন পরিচালনায় নিয়োজিত ২১২ জন শিক্ষকের মধ্যে ১৭ জন দায়িত্ব পালন করছেন প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে। ভোট গ্রহণ শেষে বিকেল ৫টার দিকে গণনা শুরু হবে এবং ১৭ ঘণ্টার মধ্যে সব কেন্দ্রের ফলাফল প্রকাশের লক্ষ্য রয়েছে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের।
ক্যাম্পাসজুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রায় দুই হাজার পুলিশ সদস্য, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ছয়টি প্লাটুন এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ১২টি প্লাটুন মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া সাইবার আক্রমণ বা অনলাইন হয়রানি রোধে একটি বিশেষ সাইবার সেল গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।
প্রথমে জুনের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা থাকলেও ২৮ জুলাই ঘোষিত সূচি অনুযায়ী ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৫ সেপ্টেম্বর। পরে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন ও ভোটে অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে তা পিছিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর করা হয়। পরবর্তীতে ভোটকেন্দ্রগুলো আবাসিক হল থেকে একাডেমিক ভবনে স্থানান্তর করায় নির্বাচন আরও ১৩ দিন পিছিয়ে যায়।
পরবর্তীতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাষষ্ঠী উপলক্ষে তারিখ পরিবর্তন করে ২৫ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ২০ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের সংঘর্ষের পর নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। অবশেষে তৃতীয়বারের মতো নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৬ অক্টোবর।
১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত রাকসু এখন পর্যন্ত মোট ১৪টি নির্বাচন আয়োজন করেছে। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৯ সালে। তখন সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন রুহুল কবির রিজভী এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন রুহুল কুদ্দুস বাবু। ১৯৯০ সালের পর থেকে রাকসুর কার্যক্রম স্থগিত ছিল।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
প্রায় অর্ধেক পরীক্ষার্থীই এবার উচ্চমাধ্যমিকে অকৃতকার্য!
চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারী সংখ্যায় এখন ১০০ কোটি
চাইনিজ তাইপেকে হারিয়ে আরেকটি এশিয়া কাপ খেলতে চাইছে বাংলাদেশ