October 27, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, October 26th, 2025, 6:50 pm

১৩৭কোটি টাকার পাওনা, রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সে গ্রাহকদের বিক্ষোভ, সড়কঅবরোধে

রংপুর ব্যুরো:

রংপুরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের জোনাল অফিসে মেয়াদোত্তীর্ণ বীমার টাকা না পেয়ে গ্রাহকদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও অফিস অবরুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার সকাল থেকে শহরের গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে করেছে পাওয়ানা ৭০ হাজার গ্রাহকের , যাদের বকেয়া পাওনা প্রায় ১৩৭ কোটি টাকা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার গভীর রাতে রাত তিনটার দিকে অফিস থেকে ট্রাকে করে মালামাল সরানো হচ্ছে—এমন খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের গ্রাহকরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। তারা অফিসের সামনের ট্রাকটি আটকে দেন এবং জোনাল অফিসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) আব্দুল কাদের বীরকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, তারা বছরের পর বছর ধরে বীমার পরিশোধিত টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। অথচ অফিস হঠাৎ রাতের আঁধারে মালামাল পাচার করছে, যা প্রতারণার ইঙ্গিত দেয়। গ্রাহক খোরশেদ আলম, আব্দুল হাকিম ও হুমায়ুন কবির বলেন, “আমাদের আমানতের টাকা ফেরত না পেয়ে আমরা চরম কষ্টে আছি। প্রশাসন দ্রুত হস্তক্ষেপ না করলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।”

এ বিষয়ে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের এসভিপি আব্দুল কাদের বীর বলেন, “আমরা অফিসের পুরনো আসবাবপত্র বিক্রি করছিলাম নতুন অফিসে স্থানান্তরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে। ভুল বোঝাবুঝির কারণেই গ্রাহকরা উত্তেজিত হয়েছেন। আমাদের পর্যাপ্ত সম্পদ রয়েছে, তা বিক্রি করেই গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে আমাদের কোম্পানির অনেক সম্পদ দখল হয়ে গেছে। আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা পুনরুদ্ধার করে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেব।”

এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) রমিজ আলম বলেন, “এই অফিসের আওতায় প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহক আছেন, যাদের বকেয়া পাওনা প্রায় ১৩৭ কোটি টাকা। দীর্ঘদিন ধরে তারা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। আমরা কোম্পানির কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি এবং বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথেও যোগাযোগের উদ্যোগ নিচ্ছি, যাতে দ্রুত গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ হয়।”

তিনি আরও বলেন, “অফিস থেকে যে মালামাল নামানো হয়েছিল, সেগুলো আপাতত এখানেই থাকবে। আমরা নিশ্চিত করছি, তাদের জমি বা সম্পদ বিক্রির কোনো প্রক্রিয়া যেন না হয়। বিষয়টি দ্রুত ও শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।”

সর্বশেষ বিকেল তিনটা পর্যন্ত কর্মকর্তাদের আস্বাসে আশ্বস্ত হতে না পেরে তারা এখন পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। তাদের দাবি টাকা না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলমান থাকবে।