November 13, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, November 12th, 2025, 6:04 pm

অক্টোবরে দেশে ৫৩২ দুর্ঘটনায় নিহত ৫২৮, আহত ১ হাজার ৩১০

 

গেল অক্টোবর মাসে সারা দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে ৫৩২টি দুর্ঘটনায় ৫২৮ জন নিহত এবং এক হাজার ৩১০ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার (১২ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু সড়কপথে ৪৬৯টি দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত ও ১,২৮০ জন আহত হয়েছেন। রেলপথে ৫২টি দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হন। অন্যদিকে নৌপথে ১১টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত এবং একজন নিখোঁজ রয়েছেন।

সংগঠনটি জানিয়েছে, দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে।

বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যান

অক্টোবরে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে— ১২৬টি দুর্ঘটনায় ১৩০ জন নিহত ও ৩৪৩ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ময়মনসিংহ বিভাগে— ২০টি দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ও ৩৭ জন আহত হয়েছেন।

যানবাহনভিত্তিক দুর্ঘটনা

এই সময়ে ১৭০টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৬ জন নিহত ও ১৩৭ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোদের মধ্যে রয়েছেন— ৪ জন পুলিশ, ১ জন র‍্যাব, ১ জন বিজিবি সদস্য, ১ জন আইনজীবী, ৩ জন প্রকৌশলী, ১৩৩ জন চালক, ৯৯ জন পথচারী, ৫৮ জন নারী, ৩৫ জন শিশু, ৩৫ জন শিক্ষার্থী, ১৪ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৩ জন শিক্ষক ও ১৪ জন রাজনৈতিক নেতাকর্মী।

দুর্ঘটনায় জড়িত যানবাহন

মোট ৭৭২টি দুর্ঘটনাগ্রস্ত যানবাহনের মধ্যে মোটরসাইকেল ২৫.৯০%, ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ২১.২৪%, বাস ১৬.০৬%, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক ১২.৮০%, নছিমন-করিমন-লেগুনা-ট্রাক্টর ৮.৪১%, কার/জিপ/মাইক্রোবাস ৪.৭৯%, সিএনজি অটোরিকশা ৪.২৭%।

দুর্ঘটনার ধরন

গাড়ি চাপা ৪৯.৮৯%, মুখোমুখি সংঘর্ষ ২৫.১৫%, নিয়ন্ত্রণ হারানো ১৯.৬১%, বিবিধ কারণ ৪.৬৯%, ট্রেন-যান সংঘর্ষ ০.৬৩%।

স্থানভেদে দুর্ঘটনার হার
জাতীয় মহাসড়ক ৪২.৪৩%, আঞ্চলিক মহাসড়ক ২৩.৬৬%, ফিডার রোড ২৭.২৯%, ঢাকা মহানগর ৪.৬৯%, চট্টগ্রাম মহানগর ১.২৭%, রেলক্রসিং ০.৬৩%।

দুর্ঘটনার প্রধান কারণ

যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে, সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে রয়েছে— বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, গর্ত, রোড সাইন ও আলোকসজ্জার অভাব, মিডিয়ান না থাকা, অন্ধবাঁক, যানবাহনের যান্ত্রিক ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য, উল্টোপথে চলা, চাঁদাবাজি, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রীবহন ও বিশ্রামহীনভাবে গাড়ি চালানোর প্রবণতা।

সুপারিশ

দুর্ঘটনা রোধে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে— ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক দ্রুত মেরামত, মহাসড়কে পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা ও রোড সাইন স্থাপন, দক্ষ চালক তৈরি ও ডিজিটাল ফিটনেস সার্টিফিকেট চালু, গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ফুটপাত ও সার্ভিস লেন, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ ও চালকদের নির্ধারিত বেতন ও কর্মঘণ্টা নিশ্চিত করা।

এছাড়া, নিয়মিত রোড সেফটি অডিট, ফিটনেসবিহীন যান স্ক্র্যাপ, মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণ এবং প্রশিক্ষণরত চালকদের ওপর আরোপিত ভ্যাট-আয়কর মওকুফের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এনএনবাংলা/