November 17, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, November 16th, 2025, 5:52 pm

জনগণকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে পারলেই দেশে শান্তি ফিরবে: কাদের সিদ্দিকী

 

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী: ‘জনগণকে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিলে দেশে শান্তি ফিরবে’

নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, জনগণকে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে পারলেই দেশে শান্তি ফিরে আসবে। তিনি উল্লেখ করেছেন, অতীতে নির্বাচন কমিশন সরকারকে ‘মন্ত্রী’ হিসেবে কাজ করেছে, তবে এবার ইসির সামনে আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

রোববার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত সংলাপে কাদের সিদ্দিকী এসব কথা বলেন। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সংলাপের দ্বিতীয় পর্বে কাদের সিদ্দিকীর দলসহ মোট ছয়টি দল অংশগ্রহণ করে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সভাপতিত্বে সংলাপে উপস্থিত ছিলেন অন্য তিনজন কমিশনার, ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বক্তব্যের শুরুতেই কাদের সিদ্দিকী বলেন, আজ আমি কোনো প্রস্তাব দিতে আসিনি। এসেছি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে সম্মান জানাতে এবং সংলাপে অংশ নিতে। সরকারের ডাকে আলোচনায় যাওয়ার প্রতি আমার দীর্ঘদিনের অনীহা ছিল। ১৫ মাস ধরে সরকার ডাকলেও আর যাইনি। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে সরকারের ডাকে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়। নিবন্ধিত দল সত্তর-পঁয়ত্রিশ হলেও আলোচনা হয় দুই–তিনটি দলের সঙ্গে, যা কোনোভাবেই নিরপেক্ষ নয়। অতীতেও এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল যেন ‘শেখ হাসিনাই বাংলাদেশ, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগই বাংলাদেশ।’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, জয় বাংলা’ বলা কখনোই অপরাধ হতে পারে না। এই স্লোগানের জন্য মানুষকে কারাবন্দি করলে ইতিহাসের কাছে এর জবাব দিতে হবে।

নির্বাচন কমিশনের কর্তৃত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, তপশিল ঘোষণার পর ইসি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। সরকারের কাজ হলো শুধুমাত্র ইসির সিদ্ধান্ত পালন করা।

অতীত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার অভিজ্ঞতা বলছে, ভোটকেন্দ্রের ফলাফল পরিবর্তনের ঘটনা ঘটেছে। এক কেন্দ্রে ১৭০৮ ভোট ২৬০০-এ উন্নীত হয়েছে। মানুষ তিনবার ভোট দিতে পারেনি। না খেয়ে থাকতে রাজি, কিন্তু ভোট দেওয়ার সুযোগ হারাতে চাই না। তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আন্দোলন পরবর্তী সময়ে কিছু রাজনৈতিক শক্তি মুরুব্বিদের মানে না এবং বাংলাদেশের ইতিহাসকে অস্বীকার করে, যা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক। টাকা খেলে বা মানুষ মারলে শাস্তি হওয়া উচিত, কিন্তু আন্দোলনের কারণে শাস্তি দেওয়া ঠিক হবে না।

গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসাথে করার সিদ্ধান্তকে ‘বড় অসংগতি’ আখ্যায়িত করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, চারটি প্রশ্নে ভোটাররা দুইটি ‘হ্যাঁ’ এবং দুইটি ‘না’ দিতে পারবে কি না, তা জনগণ জানে না। অংশগ্রহণ কম হলে পুরো নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তিনি উল্লেখ করেন, ড. ইউনূসের সরকার তাদের দলকে একটি বৈঠকেও ডাকেনি, তাই ইসির আমন্ত্রণে তিনি সন্তুষ্ট।

তিনি বলেন, জনগণকে যদি ভোট দেওয়ার সুযোগ দেয়া হয়, তবেই দেশে শান্তি ফিরে আসবে। বাংলাদেশ সুইজারল্যান্ডের চেয়েও শান্তিপূর্ণ দেশ হতে পারে।

সাধারণ মানুষের প্রতি সম্মান জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, রিকশাওয়ালা, ক্ষেতমজুর—এই সাধারণ মানুষের সম্মানের জন্যই দেশ স্বাধীন হয়েছিল।

এনএনবাংলা/