ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় পলাতক অভিযুক্ত শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের কপি আজ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান অসুস্থ থাকায় রায়ের কপি পাঠানোর প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রাইব্যুনাল প্রশাসন।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রায়ের কপি পাঠানোর কথা ছিল। কপি হাতে পেলেই ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি এবং ভারতে অবস্থানরত দুই আসামির প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ও মামলার রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের কাছেও রায়ের কপি পাঠানোর কথা ছিল।
এর আগে সোমবার জুলাই গণঅভ্যুত্থান–সম্পর্কিত মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগে ফাঁসির আদেশ এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। অপরদিকে রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে—
গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য,
আন্দোলনকারীদের নির্মূল করতে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ,
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা,
রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা,
এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা।
গত ১ জুন প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিকভাবে এসব অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে এবং ১০ জুলাই তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ওইদিন গ্রেফতার থাকা সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন মানবতাবিরোধী অপরাধে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন এবং রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন।
পলাতক দুই আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল ভারতে অবস্থান করছেন, আর মামুনই এই মামলার একমাত্র গ্রেফতারকৃত আসামি।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
পুলিশের সামনেই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মিছিল, এসআই ক্লোজড
শেখ হাসিনার আগে ভুট্টো, মোশাররফ, সাদ্দামেরও মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছিল
বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার উত্থান ও পতন যেভাবে